নারীদের কবর যিয়ারত প্রসঙ্গে বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস নিচের বক্তব্য পেশ করেছেন-
হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, যেসব মহিলা কবর। যিয়ারত করে এবং যেসব মহিলা কবরকে সিজদার স্থান বানায় এবং কবরের ওপর বাতি জ্বালায় তাদের জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিশাপ দিয়েছেন। (আবু দাউদ, তিরমিযী)
উল্লিখিত হাদীসে তিনটি মাসআলা প্রতীয়মান হয়। যাদের ওপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিশাপ প্রদান করেছেন। মাসআলাগুলো হলো-
১. যারা কবরে বাতি জ্বালায়।
২. কবরকে সিজদার স্থানে পরিণত করে।
৩. এবং ঐ সকল নারী যারা কবর যিয়ারত করে।
আলোচ্য হাদীসের মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, নারীদের কবরে যাওয়াকে কঠোর ভাষায় নিষেধ করা হয়েছে। আর এ অভিসম্পাত ও নিষেধাজ্ঞার কারণ হলো নারীরা প্রথমতঃ পর্দাহীন অবস্থায় কবরে প্রত্যাগমন করে। দ্বিতীয়তঃ কবরস্থানে গিয়ে বিভিন্ন প্রকার শিরক ও কুফরী আচরণ করে। যেমন কবরবাসীর নামে মান্নত করে, সে মান্নত পূর্ণ করে। আল্লাহর কাছে কোন কিছু না চেয়ে কবরবাসীর কাছে চাওয়া ইত্যাদি। এ হাদীসের মাধ্যমে এও বুঝা যায় যে, কবরকে সিজদার স্থান বানানো, কবরের ওপর বাতি জ্বালানো হারাম। বর্তমানের মাজারগুলোতে বাতি জ্বালানোর নিয়ম প্রচলিত আছে যাকে ইসলাম কখনো বৈধ বলে না।
হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুশয্যায় বলেছিলেন-
অর্থ: আল্লাহ ইহুদী ও নাসারাদের প্রতি অভিসম্পাত করুন। তারা তাদের নবীদের কবরকে সিজদার স্থান বানিয়েছেন। (বুখারী)
আলোচ্য হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে কবরকে সিজদার স্থান বানিয়ে নেয়া ছিল ইহুদী ও নাসারাদের কাজ। হাদীস শাস্ত্রবিদগণ বলেছেন, তাদের অভিশপ্ত হবার কারণ হলো তারা নবীদের কবরকে সম্মানার্থে সিজদা করত। 'যা স্পষ্ট শিক। অথবা নামায পড়ত আল্লাহ পাকের জন্যে তবে সিজদা করত নবীদের কবরের ওপর। যে জিনিস থেকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।-
নারী মন বড়ই কোমল। আপন মৃত প্রিয়জনের স্মরণ তাদের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করে। তাদের এ শোকাবেগ উপেক্ষা করা শরীয়ত প্রণেতা ভাল বা কল্যাণজনক মনে করেন নি। কিন্তু একথা স্পষ্টভাবে বলে গিয়েছেন যে, নারীদের বেশি বেশি করে যাওয়া নিষিদ্ধ। তিরমিযীতে হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে একটি হাদীস বর্ণিত আছে-
অর্থ: নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি পরিমাণ কবর যিয়ারতকারিণীর প্রতি অভিসম্পাত করেছেন।
হযরত আয়েশা (রা) তার ভ্রাতা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকর (রা)-এর কবরে গমন করার পর বললেন, আল্লাহর কসম, যদি আমি তোমার মৃত্যুর সময় হাজির থাকতাম তাহলে তোমার কবর যিয়ারতে আসতাম না।
হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) বলেন যে, একদিন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন স্ত্রীলোককে কবরের পাশে বসে কাদতে দেখে নিষেধ করলেন না। শুধু বললেন, 'আল্লাহকে ভয় করো এবং ধৈর্যধারণ করো।
আল্লাহ সব মুসলমানকে এ সকল ধর্ম ব্যবসায়ীদের গোমরাহী কর্মকাণ্ড থেকে হিফাযত করুন এবং সঠিক দ্বীনের পথে পরিচালিত করুন।
0 Comments