আরাফাতে অবস্থান

 

আরাফাতে অবস্থান (ষষ্ঠ কর্তব্য)

        যদি কোন হাজী আরফার দিন আরাফাতে পৌছে, তবে মক্কায় প্রবেশ এবং তাওয়াফে কুদুম আরাফাতে অবস্থানের পূর্বে করবে না; বরং প্রথম আরাফাতে অবস্থান করবে। আর যদি আরাফাতে অবস্থানের তারিখের কয়েকদিন পূর্বে তথায় পৌছে, তাহলে মক্কায় প্রবেশ করে তাওয়াফে কুদুম করবে এবং এহরাম অবস্থায় মক্কায় অবস্থান করবে। যিলহজ্ব মাসের সাত তারিখ পর্যন্ত এহরাম অবস্থায় থাকবে। ইমাম এই তারিখেই জোহরের নামাযের পর কা'বার নিকট খুৎবাহ দিবেন। তারপর ইমাম আটই তারিখ মিনায় গিয়ে রাত্রি যাপন এবং সেখান থেকে পরদিন ভোরে আরফার দিকে রাওয়ানা হওয়ার জন্য আদেশ দিবেন। নবম তারিখ দ্বিপ্রহরের পর হতে দশই তারিখ ছোবহে ছাদেক পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের সময়। মিনা পর্যন্ত লাব্বাইক বলতে বলতে যেতে হবে। মক্কা থেকে হজ্জ্বের শেষ পর্যন্ত সমস্ত কাজ কর্মগুলো সামর্থ্য থাকলে পদব্রজে করা মুস্তাহাব। মসজিদে ইব্রাহীম (আঃ) থেকে আরাফাত পর্যন্ত পায়দল চলা জরুরী ও উত্তম। হাজীগণ মিনায় পৌছে এ দোয়াটি পড়বে: "আল্লাহাম্মা হাযা মিন্নী ফামনুন আলাইয়্য বিমা মানানতা বিহী আলা আউলিয়ায়িকা আ আহলি ত্বোয়াআতিকা" 

        অর্থাৎ হে মাবুদ! এটা মিনা। তুমি আমার প্রতি সেই নিয়ামত দ্বারা অনুগ্রহ কর, যদ্বারা তুমি তোমার অলী ও নৈকট্যশীলদের প্রতি অনুগ্রহ করেছ। অষ্টম তারিখ দিবাগত রাত্রটি মিনায় কাটিয়ে দেবে। এসব কাজের সাথে হজ্জ্বের কোন সংশ্রব নেই। নবম তারিখ অর্থাৎ আরাফাতের দিন ভোরে ফজরের নামায আদায় করে সূর্যোদয়ের পর আরাফাতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। এ সময়ে এ দোয়াটি পড়বে:"আল্লাহুম্মাজআলহা গাদওয়াতিন গাদাওতুহা ক্বাতুন আত্বরিবহা মিন রিষওয়ানিকা অবআদাহা মিন সাখাতিকা আল্লাহুম্মা ইলাইকা গাদাওতু অইয়্যাকা রাজাওত্ব আ আলাইকা আ'তামাদতু অ অজহাকা আরাদতু ফাজআলনী মিম্মান তাবাহা বিহী আলইয়াওমা মান হুওয়া খাইরুম মিন্নী অ আফদালু।

        অর্থাৎ হে মাবুদ। (আজকার) এ ভোর আমার সকল ভোর অপেক্ষা উত্তম কর। আর একে তোমার সন্তুষ্টির নিকটবর্তী কর ও তোমার অসন্তষ্টি থেকে দূরবর্তী কর। হে মাবুদ! আমি তোমার দিকেই গাত্রোত্থান করেছি, তোমারই আশা করেছি, তোমার প্রতিই নির্ভর করেছি। তোমার সন্তুষ্টিরই কামনা করেছি। অতএব তুমি আমাকে তাদের দলভুক্ত কর, যাদের নিয়ে তুমি আজ গর্ব করবে, যারা আমা হতে উত্তম। আরাফাতে পৌঁছে মসজিদের সন্নিকটে তাঁবু স্থাপন করবে। হুযুরে পাক (দঃ) তাই করেছিলেন। আরাফাতে অবস্থানের জন্য গোসল করবে। সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়লে ইমাম সংক্ষিপ্তাকারে প্রথম খুৎবাহ পাঠ করে বসে যাবেন। তারপর ইমাম দ্বিতীয় খুৎবাহ শুরু করবেন। খুৎবাহর মধ্যেই মুয়াযযিন আযান দেবে। মুয়াযযিন যখন আযানের সাথে তাকবীর মিলিয়ে বলবে, তখন ইমাম খুৎবাহ শেষ করে জোহরের নামায শুরু করবেন এবং এভাবে এক আযানে দু' তাকবীরে জোহর ও আছরের নামায একই সাথে আদায় করবেন। নামায কছর পড়বে। নামায আদায় করে আরাফাতের অবস্থান স্থলে গিয়ে আরাম করবে। আরনা উপত্যাকায় অবস্থ বস্থান কর করবে না। মসজিদে ইব্রাহীম (আঃ) এর সম্মুখের স্থান আরনার শামিল, আর পেছনের দিক আরাফাতের শামিল। কতকগুলি বড় বড় পাথর দ্বারা আরাফাত এবং আরনাকে পৃথক করা হয়েছে। আরাফাতে অবস্থান কালে আল্লাহর তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ খুব বেশী পরিমাণে আদায় করবে। তাছাড়া মনে মনে তাওবাহ ও দোয়া করতে থাকবে। ঐ দিন রোযা রাখবে না, কেননা সেদিন দোয়া কালাম পড়ার জন্য শরীরে শক্তি ও সামর্থ্যের প্রয়োজন। এদিন লাব্বাইক পাঠ বন্ধ করবে না। তবে কখনও কখনও দোয়া পাঠও করবে। সূর্যাস্তের পূর্বে আরাফাতের ময়দান পরিত্যাগ করবে না, যাতে করে আরাফাতে রাত ও দিনের সন্ধিক্ষণ হয়। এর ফায়েদাহ হল, চাঁদের, গণনায় যদি ভুল হয়ে যায়, তা হলে কিছু সময় আরাফাতে অবস্থান হয়ে যাবে। দশই যিলহজ্জ্বের ভোর পর্যন্ত কোন সময় আরাফাতে অবস্থান করতে না পারলে হজ্জ্ব বাতিল হয়ে যায়। এমতাবস্থায় উচিত হবে ওমরাহর কাজ কর্ম সম্পাদন করে এহরাম ভঙ্গ করা এবং তার পরবর্তী বছর হজ্জ্বের কাজা আদায় করা।

        আরফার দিন অধিকাংশ সময় আল্লাহর দরবারে দোয়ায় মগ্ন থাকা চাই। কেননা এখানে ও এরূপ সমাবেশে দোয়া কবুল হওয়ার অধিক সম্ভাবনা। এদিনে যে সব দোয়া হুযুরে পাক (দঃ) এবং পূর্বযুগের বুযর্গগণ পড়েছেন, সেগুলোই পড়া চাই। একটি দোয়ার মর্ম এরূপ: আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি একক। অংশীদারবিহীন। হুকুমত তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু ঘটান। তিনি চিরঞ্জীব, কখনও মৃত্যুবরণ করবেন না। কল্যাণ ও মঙ্গল তাঁরই হাতে। তিনি সব কিছুর উপরে শক্তিমান। হে মাবুদ। আমার অন্তরে নূরদান কর। আমার কানে ও চোখে নূর দাও, আমার রসনায় নূর দান কর। হে মাবুদ! আমার বক্ষ উন্মোচন কর। আর আমার কর্ম আমার জন্য সহজ করে দাও। হে মাবুদ। হে প্রশংসার অধিপতি। তোমার যে প্রশংসা আমরা করি, তার চেয়েও তুমি অধিক প্রশংসার মালিক, তোমারই উদ্দেশ্যে আমার নামায, আমার হজ্ব, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু। তোমারই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন এবং আমার ছওয়াব। হে মাবুদ। আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি আমার মনের অসৎ খেয়াল, দুরবস্থা ও কবর আযাবের ভয়াবহতা থেকে। হে মাবুদ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি সে সব বস্তুর অনিষ্টতা থেকে, যেগুলো বাতাসের সাথে আসে, আর সময়ের ধ্বংসাত্মক বস্তুগুলোর ক্ষতি লোকসান থেকে। হে মাবুদ। আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি তোমার প্রদত্ত সুস্থতার পরিবর্তন থেকে, তোমার কোন অতর্কিত বদলা গ্রহণ থেকে ও তোমার সর্বরকম অসন্তুষ্টি থেকে। হে মাবুদ। তুমি আমাকে সুপথ প্রদর্শন কর ও আমাকে ইহ-পরকালে মার্জনা কর। আজ এ দিবাবসানে তুমি আমাকে এমন নিয়ামত দান কর, যা' তোমার নিজ সৃষ্টির মধ্যে কাউকে ও তোমার গৃহের হাজীদের মধ্যে কাউকে দান করনি। হে পরম দয়ালু ও করুণাময়। হে মাবুদ! হে পদমর্যদাবৃদ্ধিকারী। হে পথপ্রদর্শনকারী। হে আসমান ও যমিনের স্রষ্টা। যে যেভাবে তোমাকে ডাকে, তা' তোমার নিকট পৌঁছে, তোমার নিকট সবাই নিজ নিজ আবশ্যকীয় বস্তু প্রার্থনা করে। আমার তোমার নিকট অত্যাবশ্যকীয় এই বস্তুর প্রার্থনা হে মাবুদ! এই মহাপরীক্ষার স্থানে তুমি আমাকে ভুলে থেক না। হে মাবুদ। তুমি আমার এ ফরিয়াদ শ্রবণ করছ, আমার অবস্থান অবলোকন করছ। তুমি আমার গুপ্ত-প্রকাশ্য সমস্ত কিছুই জান, কোন কিছুই তোমার নিকট অজ্ঞাত নয়। আমি অত্যন্ত হতাশাগ্রস্ত, অভাবক্লিষ্ট, আশ্রয়কামী, দয়াপ্রার্থী ও আপরাধ স্বীকারকারী। 

        হে মাবুদ। আমি তোমার নিকট এক অধম পাপীর ন্যায় মিনতি জানাচ্ছি। ভীত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির আহবানের ন্যায় আমি তোমাকে ডাকছি। এমন অবস্থায় যে, তার গ্রীবাদেশ আনত, তার দুচোখ থেকে অশ্রুর ধারা প্রবাহিত। তার সর্বশরীর তোমার সম্মুখে নত। তার নাসিকা তোমার সম্মুখে বিনম্র। হে মাবুদ। তুমি তোমার নিকট এ প্রার্থনাকারীকে ভাগ্যহীন করে। না। তুমি আমার উপর করুণা বর্ষণ কর। আমার উপর দয়া বিতরণ কর। হে সর্বোত্তম বন্ধু। হে সম্মানিত দাতা। হে মাবুদ। যে নিজেকে প্রশংসা করে, সে নিজেকে তিরস্কার করল। আমি নিজ নফসকে তিরষ্কার করছি। হে মাবুদ! আমার রসনা আমার বহু ক্ষতি করেছে। আমার জন্য শুধু তুমি ছাড়া আমার কি এমন আমল এবং কে এমন শাফায়াতকারী আছে? হে মাবুদ! আমি জানি, আমার গুনাহরাশি তোমার নিকট তেমন বড় ও ব্যাপক আকার ধারণ করবে না (যেহেতু তোমার ক্ষমা ও করুণা সব কিছু অপেক্ষা বড় ও ব্যাপক) হে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ সম্মানিত! হে মাবুদ। যদি আমি তোমার দয়ার যোগ্য না হই, তবে অনুগ্রহ বশতঃ তুমি আমাকে তোমার দয়ার যোগ্য পাত্রে পরিণত করে নিও। হে মাবুদ। জানি, তোমার রহমত সর্ব ব্যক্তি ও বস্তুতে ব্যাপ্ত, তবে আমি তো তাদেরই অন্যতম। হে মাবুদ। আমার গুনাহ বিরাট হলেও তোমার ক্ষমার নিকট তা' ক্ষুদ্রানুক্ষুদ্র। হে মাবুদ। তুমি তো তুমিই আর আমি তো আমিই। আমিপাপের পথে ধাবমান আর তুমি ক্ষমার দিকে অগ্রসরমান। হে মাবুদ। যদি তুমি শুধু নেককার ও দ্বীনদারকেই দয়া করবে, তবে তোমার গুনাহগার বান্দারা কার কাছে আশ্রয়ের প্রত্যাশা করবে? হে মাবুদ। আমি জেনে বুঝেও দ্বীন ধর্মের কাজ থেকে দূরে রয়েছি। তোমার অবাধ্যতা অন্যায়, তা' জেনেও তাতে মগ্ন হয়ে আছি। তুমি পবিত্র, তুমি মহৎ, আমার প্রতি তোমার ক্ষমা অপরিসীম। আমি তোমার দরবারে অভাবগ্রস্ত, তুমি আমা থেকে লাপরওয়া-অভামুক্ত। হে মাবুদ। তুমি আমাকে ক্ষমা কর। তুমি মহোত্তম, যার কাছে আশা পোষণকারী আশা করে, ইসলামের সম্মান এবং হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর যিম্মার উসিলার মাধ্যমে। আমি তোমার নিকট উসিলার অন্বেষী। তুমি দয়া করে আমার গুনাহরাশি মার্জনা করে দাও। আমার এই অবস্থান স্কুলে আমার আবশ্যকতা পূর্ণ কর। আমি যা কামনা করেছি, তা' দান কর। আমার আশা ও মনোবাঞ্ছনাকে সফল কর। হে মাবুদ! তোমার নিকট সে সব দোয়ার দ্বারাই প্রার্থনা করছি, যা' তুমি আমাকে শিখিয়েছ। তুমি যা জানিয়েছ, তা' থেকে আমাকে বঞ্চিত করো না। হে মাবুদ! তুমি আজ রাতে সে বান্দার সাথে কি ব্যবহার করবে, যে নিজের গুনাহর কথা স্বীকার করে তোমার কাছে বিনয় প্রকাশ করে, যে নিজ গুনাহর কারণে অভাবগ্রস্ত, যে নিজ আমলের কারণে তোমার সামনে মিনতি করছে, যে তোমার সকাশে, তাওবাহ করে, জুলুম করার কারণে তোমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে, স্বীয় ক্ষমার জন্য তোমার নিকট ক্রন্দন করে, নিজের অভাব দূর করার জন্য তোমাকে তালাশ করে। নিজ অবস্থানের স্থলে তোমার কাছে প্রত্যাশা করে, অথচ তার গুনাহ অফুরন্ত।

        হে প্রত্যেক জীবিত ব্যক্তির আশ্রয় স্থল। হে প্রত্যেক মু'মিনের বন্ধু। যে সৎকাজ করে সে তোমারই অনুগ্রহে সফল হয়। আর যে গুনাহ করে, সে তার গুনাহর কারণে বরবাদী ডেকে আনে। হে মাবুদ। আমি তোমার কাছেই এসেছি। তোমারই আঙ্গিনায় অবস্থান করছি। তোমারই আশা করছি। তোমার কাছে যা রয়েছে, তা' তলব করছি। তোমার অনুগ্রহের প্রত্যাশায় আছি। তোমার রহমতের লালসায় রয়েছি। তোমার শাস্তির ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত আছি। তোমারই সকাশে গুনাহর বোঝা নিয়ে হাজির হয়েছি। তোমার সম্মানিত গৃহের হজ্জ্ব আদায় করেছি। হে সেই সত্তা! যে প্রার্থনাকারীদের প্রয়োজন সমূহের মালিক এবং যে নিশ্চুপদের মনের বিষয় ওয়াকিফহাল! হে সেই সত্তা। যার সাথে অন্য কোন প্রতিপালক নেই, যার কাছে প্রার্থনা করা যায় এবং যাকে কেউ সৃষ্টি করে নি, যাকেই কেবল ভয় করা যায়। হে সেই সত্তা! যার কোন পরামর্শদাতা নেই, যার দ্বার সদা উন্মুক্ত, যার দ্বারে দারওয়ান নেই। যে ঘুষ-রেশওয়াত প্রহণ করে না। হে এমন সত্তা! যার কাছে বেশী চাইলে বেশী পাওয়া যায়। প্রয়োজনে যার কাছ থেকে কৃপা ও করুণা পাওয়া যায়। হে মাবুদ! প্রত্যেক অতিথির জন্য তোমার যিয়াফাত রয়েছে। আমরা তোমার অতিথি। আমাদের জন্য তুমি বেহেশতী ভোজের ব্যবস্থা কর। হে মাবুদ। তোমার নিকট প্রত্যেক প্রতিনিধির জন্য এক পুরষ্কার রয়েছে। প্রত্যেক দর্শনকারীর জন্য এক সম্মান আছে। প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য এক দান আছে। প্রত্যেক আশাপোষণকারীর জন্য বদলা রয়েছে। প্রত্যেক ফরিয়াদির জন্য প্রতিদান রয়েছে। প্রত্যেক রহমত প্রার্থীর জন্য রহমত রয়েছে।

        প্রত্যেক আগ্রহশীলের জন্য নৈকট্য রয়েছে। প্রত্যেক উসিলা অন্বেষীর জন্য ক্ষমা রয়েছে। হে মাবুদ। আমরা প্রতিনিধি হয়ে আগমন করেছি তোমার পবিত্র গৃহের দিকে। অবস্থান করছি। মর্যাদাশীল ও পুণ্যময় স্থান সমূহে। উপস্থিত হয়েছি তোমার সম্মানিত গৃহ ও অন্যান্য পবিত্র স্থান সমূহে এ আশা বুকে নিয়ে যে, যা তোমার নিকট আছে, তা' পেয়ে যাব। অতএব হে প্রতিপালক। তুমি আমাদের মনের আশাকে বিফল করো না।

        হে মাবুদ। তুমি একের পর এক এত নিয়ামত। দান করেছ যে, মৌন বস্তুসমূহও তোমার প্রমাণ মাগ ঘোষণায় সবাক হয়ে গেছে। তুমি এত বেশী অনুগ্রহ কে করেছ যে, তোমার অলীগণও তোমার প্রকৃত হক আদায়ে অক্ষমতা স্বীকার করেছে। তোমার এত বেশী নিদর্শনাবলী রয়েছে যে, আসমান যমিন তোমার অস্তিত্বের প্রমাণ প্রকাশ করে চলেছে। হে মাবুদ। তোমার কুদরত এন ও যমি সমগ্র সৃষ্টিকে এমন ভাবে বেষ্টন করে আছে যে, যেকোন সৃষ্ট ব্যক্তি ও বস্তু তোমার ইযযন্ত্রের সামনে। অবনত নত মস্তক এবং বিনম্র বদন। মাবুদ! তুমি তোমার বান্দার অসৎকাজ করা কালে ধৈর্য ধারণ কর ও তাদের দেরকে (সংশোধনের) সময় দাও। পক্ষান্তরে কোন সৎ কাজ করলে সঙ্গে সঙ্গে কবুল করে নাও ও তার সুফল দান কর। তাদের কৃত গুনাহ ও ত্রুটিকে তুমি গোপন রাখ, 1. অন্যায় তুমি ক্ষমা করে দাও। আমরা তোমায় ডাকলে তুমি ডাকে সাড়া দাও। অপরাধ, তাদের অপ দিকে তোমার দি আমরা এগিয়ে যেতে থাকলে তুমি আমাদের দিকে এগিয়ে আস। আমরা তোমার প্রতি মনোযোগী হলে তুমি আমাদের প্রতি বেশী মনোযোগী হয়ে যাও। আমরা দিক থেকে ফিরে চলে যেতে তোম তামার দিব বুদ। তুমি তোমার কিত তাবে থাকলে তুমি তুমি আমাদেরকে আহ্বান করতে থাক। হে শেষনবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) কে ক বলেছ লছ, আপনি কাফির ফরদেরকে লে দিন, তারা তাদের কুফর-পরিত্যাগ করলে তাদের সব অতীত কুকর্ম ক্ষমা করে দেয়া হবে: বলে সুতরাং অস্বীকৃতির পর তাদের পক্ষ থেকে কালেমায়ে তাউহীদ পাঠ ও তাউহীদের স্বীকৃতিতে আপনি খুশী হয়ে যান। তবে হে মাবুদ! আমরা রা তো তোমার তাউহীদকে পরম নিষ্ঠার সাথে স্বীকার করছি এবং হযরত মুহাম্মদ (দঃ)এর রেসালতের সাক্ষ্য দান করছি। অতএব তুমি এমার অনুগ্রহে আমাদের এ স্বীকৃতি ও সাক্ষ্যে তোমা করে দাও। হে হে মাবুদ। যারা দ্বীনে দীক্ষিত আমাদের অংশ কম করো না। হে মার বিনিময়ে আমাদের পূর্বকৃত গুনাহ মাফ ক্ষ্যের বিি কত হয়ে নওমুসলমান হয়েছে তাদের প্রাপ্ত অংশ থেকে আবুদ! আমাদের কেউ তার গোলাম আজাদ করে তোমার নৈকট্য লাভের অভিলাষী হলে, সে কাজ তুমি পছন্দ কর। আমরা তো তোমারই গোলাম। আর আমাদের প্রতি সর্বাধিক যোগ যোগ্য। অনুগ্রহ করার ক্ষেত্রে তুমি সর্বাধি অতি এব তুমি অনুগ্রহ বশতঃ আমাদেরকে মুক্ত কর। তুমি আমাদের দরিদ্রদের চ দান কর করবার নির্দেশ দিয়েছ। আমরা তোমার দরবারে অতি দরিদ্র। আর তুমি হলে দরিদ্রেরকে সর্বাপেক্ষা যোগ্য দাত দাতা। অতএব হে মাবুদ! তুমি আমাদেরকে দান খয়রাত কর। হে মাবুদ! তুমি আমাদের করার উপদেশ আমাদেরকে দিয়েছ। কিন্তু আমরা যে প্রতি জুলুম কারীদের ক্ষমা যে নিজেরাই নিজেদের আত্মার উপর তুমিই কৃপা প্রদর্শন করে আমাদের এ জুলুমের আপরাধকে ক্ষমা করে জুলুম- করেছি। অতএব তুমিই কৃপা দাও। হে মাবুদ। তুমি আমাদেরকে দুনিয়াতে ভালাই দান জান কর। আখেরাতেও কল্যাণ দিও। আর আগুন থেকে বাঁচিয়ে রেখ। 

Post a Comment

0 Comments