স্বামী-স্ত্রীর বিবাহোত্তর জীবনযাপন প্রণালী
স্বামীর কর্তব্যসমূহঃ স্বামীকে মোটামুটিভাবে বারটি কর্তব্য পালন করতে হবে। যথা ১। অলীমাহ (বিবাহ ভোজ) করা ২। স্ত্রীর সহিত রসালাপ করা ৩। স্ত্রীকে যথারীতি শাসন-সতর্ক করা ৪। গাইরাত অর্থাৎ স্ত্রীর সাথে স্বাভাবিক রীতিনীতি বজায় রাখা ৫। স্ত্রীর জন্য প্রয়োজনীয় খরচ করা ৬। স্ত্রীকে উপযুক্তরূপে শিক্ষা দান করা ৭। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে সুবিচার করা এবং ন্যায়নিষ্ঠ হওয়া ৮। দুর্ব্যবহার না করা বরং সংযম অবলম্বন করা ৯। যথারীতি স্ত্রীর হক-হকুক আদায় করা ১০। যথারীতি স্ত্রীসঙ্গম করা ১১। সন্তান উৎপাদনে চেষ্টিত হওয়া ১২। প্রয়োজনে তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া।
উল্লিখিত কর্তব্যগুলো সম্পর্কে বিশেষভাবে অবহিত হওয়া দরকার।
১। প্রথম কর্তব্যঃ অলীমাহ অর্থাৎ বিবাহ ভোজ দেয়া মুস্তাহাব। হযরত আনাস (রাঃ) বলেছেন, হুযুগে পাক (দঃ) একদা হযরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) এর শরীরে হলুদ বর্ণের চিহ্ন দেখে বললেন, একি। তিনি বললেন, আমি এক টুকরো স্বর্ণের মহরানার বিনিময়ে জনৈকা নারীকে বিবাহ করেছি। একথা শুনে হুযুর (দঃ) বললেন, আল্লাহ তোমাকে রহম করুন। এখন অন্ততঃ একটি বকরী দ্বারা হলেও বিবাহ ভোজের আয়োজন কর।
হুযুরে পাক (দঃ) যখন হযরত সুফিয়া (রাঃ)কে বিবাহ করলেন তখন তিনি খুরমা এবং ছাতু দ্বারা বিবাহ ভোজের আয়োজন করেছিলেন। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, প্রথম দিনের ভোজ কর্তব্য, দ্বিতীয় দিনের ভোজ সুন্নত এবং তৃতীয় দিনের ভোজ সুনাম ও সুখ্যাতির জন্য হয়ে থাকে। যে ব্যক্তি খ্যাতি বা প্রসিদ্ধি লাভের জন্য কাজ করে, আল্লাহ তাকে অপমান এবং অপদস্থ করবেন। বিবাহের পরে পাত্রকে মুবারকবাদ দেয়া মুস্তাহাব। যে কেউ পাত্রকে দেখতে যাবে সে বলবে "বারাকাল্লাহু লাকা অ বারাকা আ'লাইকা অ জামাআ বাইনাকুমা ফী খাইরিন" অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে বরকত দিন। তোমার উপর মুবারকবাদ, আল্লাহ তোমাদেরকে মঙ্গলে একত্র করুন। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, হুযুরে পাক (দঃ) এরূপ বলতে আদেশ করেছেন।
বিবাহের বিষয়টি প্রকাশ, প্রচার করা মুস্তাহাব। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, দফ নামক এক প্রকার একতারা বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে বিবাহ প্রচার করা দ্বারা হালাল ও হারামের মধ্যে পার্থক্য কর। তিনি আরও বলেছেন, বিবাহের কথা সর্বত্র প্রচার করে দাও এবং তা' মসজিদে সম্পন্ন কর। আর বিবাহকালে দফ বাজাও। মুয়াব্বিজের কন্যা রাবী (রাঃ) বলেছেন, আমার বিবাহের পরদিন হুযুরে পাক (দঃ) তাশরীফ এনে আমার শয্যা পাশে বসলেন, তখন কয়েকটি বালিকা দফ বাজাতেছিল: এবং আমার পূর্বপুরুষদের শাহাদাত বরণ সম্পর্কিত প্রশংসা গান গেয়ে চলছিল, এমনকি একটি বালিকা গেয়ে উঠল।
আমাদের মাঝে রয়েছেন নবী
অতুল-অসীম ক্ষমতা তাঁর
আগামী দিনের সব ঘটনাই
নখদর্পণে রয়েছে যার।
হুযুরে পাক (দঃ) তাকে বললেন, এসব বলো না বরং পূর্বে যা বলতেছিলে তাই বল।
২। দ্বিতীয় কর্তব্যঃ স্বামী স্ত্রীর সহিত সদ্ব্যবহার করবে। তাদের বুদ্ধির স্বল্পতার জন্য তাদের উপর দয়াপরবশ হয়ে তাদের প্রদত্ত কষ্টে ধৈর্যধারণ করবে। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, "অ আশির হুন্না বিল মা'রূফি" অর্থাৎ ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের সহিত ব্যবহার কর। তাদের প্রতি কর্তব্যপালন সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, "অ আথাযনা মিনকুম মীছাত্তান গালীজা" অর্থাৎ তোমাদের নিকট থেকে আমি কঠিন প্রতিশ্রুতি নিয়েছি।
হুযুরে পাক (দঃ) মুমূর্ষু অবস্থায় তিনটি বিষয় উপদেশ দিয়েছিলেন। উপদেশগুলি দিতে দিতে তার রসনা স্তব্ধ হয়ে এসেছিল এবং বাক্য নিস্তব্ধ হয়েছিল। তিনি বলতেছিলেন, নামায। নামায। যাদেরকে তোমাদের দক্ষিণ হস্ত অধিকার করেছে তাদেরকে সাধ্যাতিরিক্ত কষ্ট দিও না। স্ত্রীলোকদের সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, নিশ্চয়ই তারা তোমাদের বন্দীনী। আল্লাহর আমানতের সহিত তোমরা তাদেরকে গ্রহণ করেছ; এবং আল্লাহর কালামের দ্বারা তাদের গুপ্তাঙ্গকে হালাল করেছ। হুযুরে পাক (দঃ) আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর অসদ্ব্যবহারে ধৈর্যধারণ করে থাকে, আল্লাহতায়ালা হযরত আইয়ুব (আঃ)কে তার বিপদে ধৈর্যধারণ করার জন্য যে ছওয়াব দিয়েছিলেন তিনি তাকেও সেই ছওয়াব দান করবেন। যে স্ত্রী তার স্বামীর দুর্ব্যবহারে ধৈর্যধারণ করে, আল্লাহতায়ালা ফিরাউনের স্ত্রী হযরত আছিয়াকে যে ছওয়াব দিয়েছিলেন তাকেও সেই ছওয়াব দান করবেন।
পাঠক-পাঠিকা! জেনে রাখবে, স্ত্রীকে কষ্ট প্রদান থেকে বিরত থাকলেই তার সাথে সদ্ব্যবহার করা হল না বরং তার থেকে কষ্ট এলে বা স্ত্রী রাগান্বিত হলে হুযুরে পাক (দঃ) এর নীতি অনুসরণ করে স্ত্রী প্রদত্ত এই কষ্ট বা তার রাগ সহ্য করে নেয়াই হল প্রকৃত সদ্ব্যবহার। হুযুরে পাক (দঃ) এর স্ত্রীগণ অনেক সময়ই তার সামনে তর্কে লিপ্ত হতেন। এক রাত্রে হযরত ওমর (রাঃ) এর পল্লী, ক্রোধান্বিতভাবে তার কথার উত্তর দিলে হযরত ওমর (রাঃ) বলে উঠলেন, হে দুর্মুখী! তুমি আমার কথার উত্তর দাও কোন মুখে? তার পত্নী বললেন, রাসূলুল্লাহ (দঃ)এর স্ত্রীগণ তার কথার জবাব দেয়। তিনি ত আপনার চেয়ে উত্তম। একথা শুনে হযরত ওমর (রাঃ) বললেন, তাহলে ত (কন্যা) হাফসা ধ্বংস হয়েছে। তারপর তিনি হযরত হাফসা (রাঃ)এর গৃহে গিয়ে তাঁকে বললেন, হে হাফসা। তুমি হযরত আবুবকর (রাঃ) এর কন্যার প্রকৃতি অবলম্বন করো না। সে হযরত রাসূলে করীম (দঃ)এর সর্বাধিক প্রিয়তমা (তার কথা আলাদা) কিন্তু তুমি কখনও রাসুলুল্লাহ (দঃ) এর কথার জবাব দেবে না। বর্ণিত আছে যে, একদা হুযুরে পাক (দঃ)এর কোন এক স্ত্রী তাঁর বক্ষের উপর হস্ত স্থাপন করেছিলেন। তা' দেখে তাঁর মাতা তাঁকে খুবই ধমকালেন যে. এভাবে নবীর সাথে বেয়াদবী করা ঠিক নয়। কিন্তু হুযুরে পাক (দঃ) বললেন, থাক একে কিছু বলো না, এ স্ত্রীগণ এর চেয়েও অনেক কিছু করে থাকে। আর একদিন হযরত রাসূলে করীম (দঃ) এবং হযরত আয়েশা (রাঃ)এর মধ্যে কিছু তর্কবিতর্ক হল। এমনকি শেষ পর্যন্ত তাঁরা সে ব্যাপারে হযরত আবুবকর (রাঃ) কে বিচারক এবং ছালেছ সাব্যস্ত করলেন। হুযুরে পাক (দঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ) কে বললেন, প্রথম তুমি তোমার কথা পেশ কর, অথবা আমি আমার কথ কথা পেশ করি। হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, আপনিই প্রথম বলুন। তবে কথা কিন্তু বলবেন। একথা বলা মাত্র হযরত আবুবকর (রাঃ) রাগে অধীর হয়ে কন্যা আয়েশা সত্য ব রাঃ)কে এমন এক চড় চড় মারলেন যে, তাতে রক্তপাত হতে লাগল। কিন্তু হযরত আবুবকর (রাঃ)এর রাগ তাতেও কমল না। হযরত আয়েশা (রাঃ) তখন পিতার হাত থেকে বাঁচার জন্য আশ্রয় নিলেন। হযরত রাসূলে করীম (দঃ) হযরত আবুবকর হুযুরে পাক (দঃ)এর পিছনে গিয়ে আশ্র (রাঃ) কে বললেন, আমরা ত আপনাকে এজন্য ডাকি নি এবং আপনার দ্বারা আয়েশা (রাঃ) কে শাসন করানোও আমার ইচ্ছে নয়।
আর একবার হযরত রাসূলে করীম (দঃ)এর কোন কথায় রাগান্বিত হয়ে হযরত আয়েশা (রঃ) তাঁকে বললেন, আর আপনিই কিনা বলছেন যে, আমি (রঃ)এর কথা শুনে যুযুরে পাক (দঃ) মৃদু হাসলেন এবং ধৈর্যের সাথে হযরত অনুমি য়েশার এ কথাটিকে গায়ে মেখে নিলেন। হুযুর (দঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ) কে বলতেন, তুমি মি কখন আমার প্রতি খুশী থাক ও কখন নাখোশ থাক তা' আমি বুঝতে পারি। হযরত আয়েশা শা (রাঃ) তুমি খুশী থাক, তখন বললেন, তা' কিভাবে পারেন বলুন ত শুনি। হুযুর (দঃ) বললেন, যখন বল যে, কসম হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর আল্লাহর এবং তুমি তোমার রাগান্বিত অবস্থায় বল, কসম হযরত ইব্রাহীম নবী (আঃ) এর আল্লাহর। তখন হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, আপানি যথার্থই বলেছেন, আমি সত্যিই আপনার উপর আমার অন্তর নাখোশ থাকা কালে আপনার নামটি উচ্চারণ না করে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর নামোচ্চারণ করি। বলা হয়ে থাকে, ইসলামের আলোকে যে প্রথম প্রণয়, তা' ছিল হযরত আয়েশা (রাঃ)এর প্রতি হুযুরে পাক (দঃ) এর তরফ থেকে। হুযুরে পাক (দঃ) একদা হযরত আয়েশা (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, আমি তোমার সহিত ঠিক ঐরূপ, আবু যারা' নিজ স্ত্রী উম্মে যারা'র সহিত যেরূপ ছিলেন; কিন্তু আমি তোমাকে কখনও তালাক দেব না। উম্মে যারা' সম্পর্কিত বিবরণ একটি প্রসিদ্ধ হাদীস। শামায়েলে তিরমিযী কিতাবে বর্ণিত আছে যে, একদা হযরত আয়েশা (রাঃ) এর সমীপে এগার, জন আওরাত সমবেত হয়ে তাঁর কাছে নিজ নিজ স্বামীর অবস্থা বর্ণনা করল। এদের মধ্যে অন্যতমা ছিল উম্মে যারা'। তার স্বামী তার সাথে অত্যন্ত সদাচরণ প্রদর্শন করেছিল। কিন্তু অবশেষে সে তাকে তালাক দিয়েছিল। হযরত আয়েশা (রাঃ) উক্ত স্বামীদের সমুদয় বৃত্তান্ত হুযুরে পাক (দঃ) এর নিকট বর্ণনা করেছিলেন। উল্লেখ্য যে, হযরত আয়েশা (রাঃ) তা' বর্ণনা করা কালেই হুযুরে পাক (দঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ) কে লক্ষ্য করে ঐরূপ বলেছিলেন। একদা হুযুরে পাক (দঃ) তাঁর বিবিদেরকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, আল্লাহর কসম, তোমরা কখনও আয়েশার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে আমাকে কোনরূপ কষ্ট দিও না। আল্লাহর কসম! আমি আয়েশা (রাঃ)এর শয্যায় শায়িত থাকা কালে আমার উপর আল্লাহর তরফ থেকে অহী এসেছে। এমন ঘটনা আমার আর কোন স্ত্রীর ক্ষেত্রেই হয় নি। হযরত আনাস ইবনে মালেক বলেন, হুযুরে পাক (সঃ) স্ত্রীলোক এবং শিশু সন্তানকে যত বেশী স্নেহ করতেন তত আর কাউকে করেন নি।
৩। তৃতীয় কর্তব্যঃ স্ত্রীদের পক্ষ থেকে কষ্ট ক্লেশ এবং দুঃখ পাওয়া সত্ত্বেও তাদের সহিত হাসি খুশী বজায় রাখবে এবং তাদের মন তোষণের লক্ষ্যে রসালাপ এবং কৌতুকাদি করবে। হুযুরে পাক (দঃ) স্বীয় সহধর্মিণীদের সাথে এরূপ করতেন এবং তাঁদের জ্ঞান বুদ্ধির পরিমাণ অনুযায়ী তাদের সহিত তাল মিলিয়ে চলতেন। হাদীস শরীফে আছে, হুযুরে পাক (দঃ) অল্পবয়স্কা স্ত্রী 'বলি আয়েশার (রাঃ) সহিত একদা দৌড়ের পাল্লা দিলেন এবং ইচ্ছে করেই তাতে তাঁর সাথে হরে গেলেন। আর একদিন একইভাবে দুজনে দৌড়ের পাল্লা দিয়ে সে দিন হুযুরে পাক (দঃ) সঁড়ে জিতে গেলেন এবং বললেন, আজ তোমার সেদিনের জয়ের বদলা নিলাম। হাদীস শরীফে আছে, অন্যান্য পুরুষগণ যেভাবে স্ত্রীদের মন যুগিয়ে চলেন, হুযুরে পাক (দঃ) নিজ তীদের সাথে তদপেক্ষা বেশী ভাল ব্যবহার করতেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি শুনলাম যে, হাবসার লোকগণ আশুরার দিন নানারূপ খেল-তামাশায় রত হয়। হুযুরে পাক (দঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তাদের সে খেল-তামাশা দেখতে ইচ্ছে কর কি? আমি বললাম, জী হাঁ, ইয়া রাসূলুল্লাহ (দঃ)। তখন তিনি আমাকে নিজের হাতের উপর উঁচু করে বসিয়ে তাদের খেলা দেখালেন। কিছুক্ষণ পর তিনি বললেন, এবার হয়েছে চল।
কিন্তু হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, আর একটু অপেক্ষা করুন। এভাবে হুযুরে পাক (দঃ) তিনবার বললেন এবং হযরত আয়েশা (রাঃ)ও একই কথা তিনবার বললেন। তারপর আবার হুযুর (দঃ) চলে যাওয়ার কথা বললে এবার হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, ঠিক আছে চলুন। হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, "আকমালুল মু'মিনীনা ঈমানান অ আহসানু হুম খুলক্বান অ আলতাফুহুম বি আহলিহী" অর্থাৎ সে-ই পরিপূর্ণ মু'মিন, যে ঈমানে ও স্বভাব-চরিত্রে সর্বোত্তম এবং পরিবারের সহিত সদাচরণকারী।
তিনি আরও বলেছেন, "খাইরুকুম খাইরুকুম লিনিসায়িহী অ আনা খাইরুকুম লি নিসায়ী" অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে উত্তম সে ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম এবং আমি তোমাদের মধ্যে উত্তম আমার স্ত্রীর কাছে উত্তম বলে। হযরত ওমর (রাঃ) অত্যন্ত কঠোর মেজাযের লোক হওয়া সত্ত্বেও বলেছেন যে, পুরুষের গৃহে একটি শিশুর মত (কোমল স্বভাব নিয়ে) থাকা উচিত। কিন্তু যখন তার কাছে কোন কিছু চাওয়া হয়, তখন তার পুরুষের স্বভাব অবলম্বন করা উচিত। হযরত লোকমান হাকীম বলেন, রমণীদের উচিত গৃহে একটি শিশুর মত থাকবে। কিন্তু যখন সে বাইরে লোকজনের মধ্যে যাবে, তখন সে পুরুষের মত হয়ে যাবে। হযরত রাসূলে করীম (দঃ) হযরত জাবের (রাঃ) কে বলেছেন, তুমি কোন কুমারী রমণী বিবাহ করলে না কেন? তাহলে ত তার সাথে অধিক আনন্দ স্ফুর্তি করতে পারতে এবং সেও তোমার প্রতি বেশী আকৃষ্ট হত। কোন বৃদ্ধা রমণীর স্বামী মারা যাওয়ার পর সে তার সম্পর্কে এরূপ বলল, আল্লাহর কসম সে যখন ঘরে আসত, তখন তার মুখ হাসিখুশী দেখা যেত; কিন্তু যখন সে বাইরে যেত, তখন সে নীরব এবং গম্ভীর ভাব অবলম্বন করত। তাকে যা কিছু খাবার সরবরাহ করা হত, তা-ই সে তৃপ্তি সহকারে খেয়ে উঠত। তার কোন বস্তু খোয়া গেলে তার আবদার করত না।
0 Comments