তওয়াফের রীতী সমূহঃ



তওয়াফের রীতী সমূহঃ

 যখন তাওয়াফ করার ইচ্ছে করবে, চাই তাওয়াফে কুদুম হোক বা অন্য যে কোন তাওয়াফ হোক, ছয়টি নিয়ম পালন করবে (১) নামাযের শর্তসমূহ আদায় করবে। অর্থাৎ অজু (ও প্রয়োজনে গোসল) করে শরীর পাক করতে হবে। সতর ঢাকতে হবে। তাওয়াফের স্থানও পাক হতে হবে। কেননা তাওয়াফও নামাযের অনুরূপ। পার্থক্য কেবল এতটুকু যে, নামাযের মধ্যে কথা বলার অনুমতি নেই কিন্তু তাওয়াফের মধ্যে তার অনুমতি রয়েছে। তাওয়াফ শুরু করার পূর্বে শরীরের চাদর ডান বোগলের নীচ থেকে উঠিয়ে পিঠ এবং বুক ঢেকে চাদরের উভয় প্রান্ত বাম কাঁধের উপর রাখবে। যাতে করে চাদরের এক আঁচল পিঠের উপর ও অপর আঁচল বুকের উপর ঝুলে থাকবে। চাদর এভাবে শরীরে জড়ানোকে "ইজতেবাগ বলে"। তাওয়াফের শুরু থেকে লাব্বাইক বলা বন্ধ রেখে নির্দিষ্ট দোয়াগুলো পাঠ করবে। দোয়াগুলো একটু পরেই উল্লেখ করব।

(২) চাদর ঠিকভাবে শরীরে জড়িয়ে কা'বা গৃহ বাম দিকে রেখে কাল পাথরের কাছে দাঁড়াবে যাতে সমস্ত শরীর কাল পাথরের বিপরীত দিকে চলে যায়। তাওয়াফ কালে কা'বাকে অন্ততঃ তিন পদক্ষেপ দূরে রেখে চলবে। এর চেয়ে নিকট দিয়ে চললে কা'বার পর্দার উপর পা পড়তে পারে। পর্দা যতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে, ততদূর পর্যন্ত স্থানকে কা'বার শামিল ধরা হয়। কাল পাথরের কাছে কা'বার পর্দা মাটির সহিত মিশে গেছে। এর উপর তাওয়াফ করা সিদ্ধ নয়। কেননা পর্দার উপর দিয়ে তাওয়াফ করা কা'বার ভিতর দিয়ে তাওয়াফ করার তুল্য হয়ে যায়। অথচ নির্দেশ রয়েছে কা'বার বাইরে থেকে তাওয়াফ করার। উল্লেখ্য যে, কা'বা গৃহের শাজারওয়ান (পর্দা বিস্তৃত স্থান) কা'বা প্রাচীরের অঙ্গন বা আঁচল সদৃশ। এরই নামশাজারওয়ান। মোট কথা কাল পাথরের নিকট থেকে তাওয়াফ শুরু করবে।

 (৩) তাওয়াফ শুরুকালীন কাল পাথর অতিক্রম করার পূর্বেই এই দোয়া পাঠ করবেঃ "বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবারু আল্লাহুম্মা ঈমানাম বিকা অ তাহুদীক্বাম বিকিতাবিকা অ অফায়াম বি আহাদিকা অ ইত্তিবাআ'ল লিসসুন্নাতি নাবিয়্যিকা মুহাম্মাদিন ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম।অর্থাৎ আল্লাহর নামে, আল্লাহ মহান। হে মাবুদ! আমি এই তাওয়াফ করছি তোমার প্রতি আস্থা স্থাপনপূর্বক, তোমার কিতাবের সত্যতায় বিশ্বাস স্থাপনপূর্বক। তোমার নিকট প্রদত্ত ওয়াদা রক্ষাপূর্বক এবং তোমার নবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর রীতি অনুসরণপূর্বক।

এরপর তাওয়াফ শুরু করে কাল পাথর অতিক্রম করে কা'বা গৃহের বিপরীতে পৌঁছে। অর্থাৎ তার দরজা সোজা গিয়েই পাঠ করবেঃ"অল্লাহুম্মা হাযাল বাইতু বাইতুকা অ হাযাল হারামু হারামুকা অ হাযাল আমানু আমানুকা অ হাযাল মাক্কামুল আয়িযি বিকা মিনান্নার"অর্থাৎ হে মাবুদ। এ ঘর তোমার ঘর, এ হারাম তোমার হারাম, এ নিরাপদ স্থান তোমার নিরাপদ স্থান। এস্থান দোযখ থেকে তোমার কাছে নিরাপত্তা প্রার্থনাকারীর নিরাপদ স্থান। স্থানের কথা বলার সময়ে চোখে মাকামে ইব্রাহীমের দিকে ইশারা করবে। এ সময়ে পড়বেঃ

"আল্লাহুম্মা ইন্না বাইতাকা আজীমুন অ অজহাকা কারীমুন অ আনতা আরহামুর রাহিমীনা ফাইি'যিনী মিনান্নারি অ মিনাশ শাইত্বোয়ানিররাজীমি অহাররিম লাহমী অ দামী আলান্নারি অ আমান্নী মিন আহওয়ালি ইয়াওমাল কিয়ামাতি অ আকফিনী মু'ফাতাদ্দুনইয়া অল আখিরাতি।"অর্থাৎ হে মাবুদ! তোমার গৃহ গৌরবময়, তোমার সত্তা কৃপাময়, তুমি শ্রেষ্ঠ করুণাময়। দোযখের আগুন এবং বিতাড়িত শয়তান থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।তুমি আমাকে আশ্রয় দান কর। তুমি আমার মাংস ও রক্ত দোযখের উপর হারাম কর। আমাকে রোজ কিয়ামতের ভীতি ও ত্রাস থেকে বাঁচিয়ে রাখ, দুনিয়া ও আখেরাতের ক্লেশ ও মুছীবত থেকে রক্ষা কর।তারপর সুবহানাল্লাহি ও আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করতে করতে রুকনে ইরাকীতে পৌছে গিয়ে এই দোয়াটি পড়বেঃ"আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাশশিরকি অশাককি অল কুফরি অনিফাকি অশিক্বাক্বী অসুয়িল আখলাকি অ সুয়িল মানজারি ফিল আহলি অল মালি অল অলাদি" অর্থাৎ হে মাবুদ। আমি শিরক, সন্দেহ, কুফরী নিফাক দ্বেষ-বিদ্বেষ, কুস্বভাব এবং পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততির মধ্যে কুদৃশ্য থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

অতঃপর মীজাবে পৌছে গিয়ে পড়বেঃ "আল্লাহুম্মা আজিরানী তাহতা আরশিকা ইয়াওমি লি আজাল্লিকা আল্লাহুম্মা আসন্ধিনী বি কাসি মুহাম্মাদিন ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম শারবাতান লা আজমায়ু বা'দাহা আবাদান।" অর্থাৎ হে মাবুদ! আমাকে তোমার আরশের ছায়ায় স্থান দান কর। যে দিন তোমার আরশের ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না। হে মাবুদ। আমাকে হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর পান পেয়ালা হতে পানীয় পান করতে দিও। যাতে আমার পিপাসা স্থায়ী ভাবে নিবৃত্ত হয়।অতঃপর রুকনী শামীর নিকট পৌঁছে এ দোয়াটি পাঠ করবে: "আল্লাহুম্মাজআলহু হাজ্জাম্ মারকুরাও অসাইআম্ মাশক্কাও অযামবাম মাগফ্রাও অ তিজারাতান লান তাবুরু ইয়া আযীযু ইয়া গাফুরু রাব্বিগফির অরহাম অ তাজাওয়্যায আম্মা তা'লাম আনতাল আআযযুল আকরামু"

অর্থাৎ হে মাবুদ। তুমি একে মকবুল হজ্জ্বে পরিণত কর। পরিশ্রম (সায়ী) কে সফল কর। গুনাহ্ ক্ষমা কর। এ ব্যবসাকে স্থায়ী ও লাভবান কর। হে মহা প্রতাপশালী! তুমি আমাকে ক্ষমা ও রহম কর। তুমি আমার যে গুনাহর বিষয় জান তা' মার্জনা কর। নিশ্চয় তুমি মহান সম্মানিত।
অতঃপর রুকনে ইয়ামেনীর নিকট পৌছে এ দোয়াটি পড়বে: "আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল কুফরি অ আউযুবিকা মিনাল ফাকুরি অ মিন আযাবিল ক্বাবরি অ মিন ফিতনাতিল মাহইয়ায়ি অল মামাতি অ আউযুবিকা মিনাল খিযইয়ি ফিদ্দুনইয়া অল আখিরাতি" অর্থাৎ হে মাবুদ। আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি কুফর থেকে, আরও আশ্রয় চাচ্ছি দারিদ্রদ্র্য থেকে এবং কবর আযাব থেকে, জীবন-মরণের বালা মুছীবত থেকে এবং আরও আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়া ও আখেরাতের লাঞ্ছনা ও অপদস্থতা থেকে।

অতঃপর রুকনে ইয়ামেনী ও কাল পাথরের মাধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছে পাঠ করবেঃ "আল্লহুম্মা রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাও অফিল আখিরাতি হাসানাতাও অন্ত্বিনা বিরাহমাতিকা ফিতনাতিল ক্বাবরি অ আযাবি ন্নারি" তুমি আমাদেরকে দুনিয়াতে ও আখেরাতে কল্যাণ দান কর।
অর্থাৎ হে মাবুদ! হে আমারে প্রতিপালক! দান কর। তুমি নিজ রহমত গুণে আমাদেরকে কবরের মুছীবত ও দোযখের আগুনের আযাব থেকে নিরাপদ রাখ।

অতঃপর যখন কাল পাথরের নিকট পৌঁছবে, তখন এ দোয়াটি পড়বেঃ "আল্লাহুম্মাগফিরলী বিরাহমাতিকা আউযু বিরাব্বি হাযাল হাজরি মিনাদ্দাইনি অল ফাকুরি অযাইকুিছ ছিদরি অ আযাবিল ক্বাবরি"
অর্থাৎ হে মাবুদ! তোমার করুণায় আমাকে ক্ষমা কর। এই পাথরের প্রভুর নিকট আমার ঋণ, দারিদ্র্য, বক্ষের সংকীর্ণতা এবং কবর আযাব থেকে আমি আশ্রয় চাচ্ছি। এখানে পৌঁছে তাওয়াফের এক চক্কর শেষ হয়ে যাবে। এভাবে সাত চক্কর শেষ করবে। প্রত্যেক চক্করে উল্লিখিত রূপে দোয়া পাঠ করবে।

(৪) প্রথম তিন চক্করে রমল করবে। শেষ চার চক্করে মধ্যমাবস্থায় হাঁটবে। রমল অর্থ হল, অঙ্গ হেলিয়ে-দুলিয়ে দ্রুত গতিতে পদচারণা করা। অর্থাৎ একেবারে দৌড়াবে না এবং হাঁটবেও না বরং মধ্যম গতিতে চলবে। অধিক ভীড়ের কারণে যদি কা'বা গৃহের নিকট দিয়ে তাওয়াফ করা না যায়, তবে দূর দিয়ে তাওয়াফ করবে। এটাই উত্তম। রমল করার উদ্দেশ্য হল, নির্ভীকতা ও বীরত্ব প্রদর্শন।

কাফির মুশরেকদেরকে নিরাশ এবং ভীত করার জন্য এর প্রচলন হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও এ সুন্নত বহাল রয়ে গেছে। রমল করা কা'বা গৃহের সন্নিকটেই উত্তম। তবে বেশী ভীড়ের কারণে তা' সম্ভব না হলে দূরত্বে থেকেই রমল করবে। তিন চক্কর রমল করার পর কা'বার সন্নিকটবর্তী লোকদের ভীড়ে মিশে গিয়ে স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে বাকী চার চক্কর আদায় করবে। প্রতি চক্করে কাল পাথরকে চুম্বন করা উত্তম। তবে অধিক ভীড়ের কারণে তা' সম্ভব না হলে ডান হাতে কাল পাথরের দিকে ইশারা করে ঐ হাতে চুম্বন করবে।

একইভাবে রুকনে ইয়ামনীকে চুম্বন করাও মুস্তাহাব। হুযুরে পাক (দঃ) তা' করতেন এবং স্বীয় কপোল দেশ তার উপর চেপে ধরতেন। তবে মূলতঃ কাল পাথর চুম্বন করা ও রুকনে ইয়ামনীকে হস্ত দ্বারা স্পর্শ করাই সর্বোত্তম। কেননা এ বর্ণনাই সমধিক প্রসিদ্ধ।

(৫) তাওয়াফের সাতটি চক্কর শেষ হয়ে গেলে মুলতাজামে আসবে। এ হল কা'বা গৃহের দরজা এবং কাল পাথরের মধ্যবর্তী স্থান। এ স্থানে দোয়া কবুল হয়। এখানে এসে কা'বার পর্দা ধরে কা'বার প্রাচীর ঘেষে দাঁড়াবে। নিজের পেটকে প্রাচীরের সাথে মিলিয়ে দেবে এবং ডান কপোল প্রাচীরে চেপে ধরবে আর হস্ত ও হস্ততালু খোলা ভাবে প্রাচীরে স্থাপনপূর্বক ললাট তার মধ্যে রাখবে। এ সময়ে এ দোয়াটি পড়বে:

"আল্লাহুম্মা ইয়া রাব্বিল বাইতিল আতীন্দ্বি আ'তিকু রাক্কাবাতি মিনান্নারি আ আইদনী মিনাশ শাইত্বোয়ানির রাজীমি অ আইযনী মিন কুল্লি সূয়িন অকিন্নিনী বিমা রাযাক্বতানী অ বারিক ফীমা আতাইতানী আল্লাহুম্মা ইন্না হাযাল বাইতা বাইতুকা অল আবদু আবদুকা অ হাযাল মাঝামুল আয়িযি বিকা মিনান্নারি আল্লাহুম্মাজআলনী মিন আকরামি অফদিকা আলাইকা: অর্থাৎ হে প্রাচীন গৃহের প্রভু! আমাকে দোযখ থেকে হেফাজাতে রাখ। আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় দান কর। আমাকে প্রত্যেক খারাপ কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখ, তোমার প্রদত্ত রিযিকের উপর আমাকে সন্তুষ্ট কর এবং আমাকে দেয়া তোমার রিযিকে বরকত দান কর। হে মাবুদ! এ গৃহ তোমারই গৃহ, এ বান্দা তোমারই বান্দা এবং এটা দোযখ থেকে আশ্রয়-প্রার্থীর স্থান। হে মাবুদ। আমাকে তুমি তোমার সকাশে আগমনকারীদের মধ্যে বিশেষ স্মমান দান কর।অতঃপর এ স্থানে বেশী করে আল্লাহর গুণ গান করবে। হুযুরে পাক (দঃ) ও ও অন্যান নবীদের প্রতি দরূদ পাঠাবে, স্বীয় মনোবাসনার জন্য দোয়া করবে এবং গুনাহমাফীর জন্য প্রার্থনা করবে। প্রাচীন কালের বুযর্গগণ এ স্থানে নিজ নিজ খাদেমগণকে বলতেন, তোমরা আমার কাছ থেকে একটু দূরে থাক, আমি এখন আল্লাহর দরবারে নিজের গুনাহর স্বীকারোক্তি পেশ করব।

(৬) মুলতাজামের কাজ শেষ করে মাকামে ইব্রাহীমের পেছনে দু' রাকাত নামায পড়বে। এর প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা ইখলাছ পাঠ করবে। এটা হল তাওয়াফের বাদের দু' রাকাত নামায। জুহরী (রহঃ) বলেছেন যে, প্রত্যেক চক্করের বাদে দু' রাকাত নামায পড়া সুন্নত। তবে অনেকে তার চাওয়াফ করে সবগুলোর শেষে দু' রাকাত নামায পড়লেও তা' জায়েয হবে। হুযুরে পাক (দঃ) তা-ই করেছেন। উল্লেখ্য যে, এক তাওয়াফে সাতটি চক্কর ঘুরতে হয়। নামায দু' রাকাত আদায় করে

এই দোয়াটি পড়বে: "আল্লাহুম্মা ইয়াসসির লিল ইয়ুসরা অ জান্নিবনিল উসরা অগফির লিল আখিরাতি অল উলা অ আ'ছিমনী বি আলত্বোয়াফিকা হাত্তা লা উ'ছীকা অ আইন্নী আলা ত্বোয়াআতিকা বি তাওফীত্বিকা অজান্নিবনী মাআছিয়াতিকা অজআলনী মিম্মাই ইয়ুহিব্বুকা অ ইয়ুহিব্বু মালায়িকাতিকা অ রুসুলিকা অইলা ইবাদিকাছ ছালিহীন--আল্লাহুম্মা ফাকামা হাদাইতানী ইলাল ইসলামি ফাছাব্বিতনী আলাইহি বি আলত্বোয়াফিকা অ বিলাইয়াতিকা অসতা'মিলনী লি ত্বোয়াআতিকা অ ত্বোয়াআতি রাসূলিকা অ আজিরনী মিনুদ্বিল্লাতিল ফিতান"

অর্থাৎ হে মাবুদ! আমার জন্য সহজ কাজকে সহজ করে দাও এবং আমাকে কঠিন কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখ। আমাকে দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষমা করে দাও। তোমার রহমত দ্বারা আমাকে গুনাহ থেকে রক্ষা কর, যেন আমি তোমার অবাধ্য না হই। তুমি তোমার তাউফীক দ্বারা আমাকে তোমার আনুগত্যের ব্যাপারে সাহায্য কর। আমাকে তোমার নাফরফানী থেকে দূরে রাখ এবং আমাকে তাদের দলভুক্ত কর, যারা তোমাকে, তোমার ফিরেশতাগণকে, তোমার রাসূলগণকে এবং তোমার নেককার বান্দাহগণকে ভালবাসে। হে মাবুদ! আমাকে তোমার ফিরেশতা, রাসূল এবং সৎকর্মশীল বান্দাগণের প্রিয়পাত্র কর। হে মাবুদ! তুমি যেমন আমাকে ইসলামের পথ প্রদর্শন করেছ তেমন স্বীয় কৃপা ও ক্ষমতার বদৌলতে আমাকে ইসলামের উপর সুস্থির রাখ। হে মাবুদ! তুমি আমার দ্বারা তোমার আনুগত্য এবং রাসূলের আনুগত্যের কাজ আদায় কর আর আমাকে এমন ফেতনা ফাসাদ থেকে নিরাপদ রাখ, যা অপ্রতিরোধ্য। করবে।

এরপর আবার কাল পাথরের কাছে এসে তা' চুম্বন করে তাওয়াফ শেষ হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন: সাত চক্করের সাথে কা'বা গৃহ তাওয়াফ করে যে ব্যক্তি দু' রাকাত নামায আদায় করে, সে একটি গোলাম আজাদ করার ছওয়াব লাভ করে। তাওয়াফে নামাযের শর্তসমূহ ব্যতীত আরও ওয়াজিব হল, কা'বার চারপাশে সাত চক্কর দিতে হবে আর তা' কাল পাথর থেকে শুরু করতে হবে এবং মসজিদে হারামের মধ্যে ও কা'বা গৃহের বাইরে তাওয়াফ করতে হবে। তাওয়াফের চক্করগুলো বিরতিহীন অর্থাৎ লাগাতার ভাবে করতে হবে। এগুলে ছাড়া আনুষঙ্গিক কাজগুলো সবই সুন্নত এবং মুস্তাহাব।

Post a Comment

0 Comments