মেয়েরা পুরুষদের মত সালাম আদান-প্রদান করতে পারে। তবে এই সালামের হুকুম শুধু নিজ আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত নিকটজনদের সাথেই হতে হবে ।
মা-ছেলে, পিতা-মেয়ে, খালা-খালু, ফুফা-ফুফু, চাচা-চাচী, মামা-মামী, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন ইত্যাদি নিকটতম লোকদের সাথেই সালাম আদান-প্রদানের অভ্যাস করা ভাল।
কিন্তু কোন গায়রে মুহাররাম পুরুষ যদি কোন অপরিচিতা গাধরে মুহাররামা মহিলাকে সালাম দেয়, তবে সে মহিলা তার সালামের জবাব দিবে না। এতে পুরুষের সালাম দেয়াটাই বৃথা হয়ে যাবে। হ্যাঁ, তবে কোন কাজ উপলক্ষে যদি কোন দায়িত্বশীলা নারীর সাথে আপনি দেখা করতে যান, তবে তাঁকে সালাম দেবেন। কারণ এক মুসলমান যদি অন্য কোন মুসলমানের সাথে কথা বলে তবে প্রথম কথা শুরু করতে হবে সালামের মাধ্যমে।
কিন্তু পথে-ঘাটে কোন অপরিচিতা মহিলা যার সাথে আপনার কোন কথা বলার দরকার নেই তাকে দেখলেই সালাম দেয়ার প্রয়োজন নেই। আর যদি কেউ এমন কোন মহিলাকে সালাম দেয়, যার সাথে তার কোন কথাবার্তার প্রয়োজন নেই তবে সে মহিলা তার সালামের যেন জবাব না দেয়।
মেয়েদের শিক্ষাকালীন হিজাব
১. মেয়েদের শিক্ষক উর্ধ্বে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত কোন পুরুষলোক থাকতে পারে। তারপর তাদের পড়াতে হবে মহিলা শিক্ষিকাদের মাধ্যমে।
২. জীবন ওষ্ঠাগত অবস্থায় যেমন মহিলা রোগীরা পুরুষ ডাক্তার দেখাতে পারে তেমনি ইসলামের জীবন রক্ষার্থে প্রয়োজনবোধে বোরকা পরে পণ্ডিত আলেমদের কাছে মহিলারা পড়তে পারে।
৩. ফিকাহর কিতাব কোন পুরুষ আলেমের কাছে মেয়েদের পড়া ঠিক নয়। ফিকাহর কিতাবগুলি সবই বাংলায় অনুবাদ হওয়া উচিত যেন সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতা মহিলা শিক্ষিকারাও এগুলো পড়াতে পারেন। কারণ যেখানে মহিলাদের হায়েজ-নেফাসের কথা তাহারাতের মাসআলার মাঝে পড়ানো হয় তখন একজন পুরুষ ছাত্রও পুরুষ শিক্ষকের কাছে লজ্জায় মাথা নিচু করে শিক্ষক যা বলেন তা চুপ করে শ্রবণ করে। আর এ অবস্থায় পুরুষের কাছে মেয়েরা কি করে এসব মাসআলা শিখতে পারে? ফিকাহ এবং উসূলে ফিকাহর কিতাব সকল দেশেই তাদের মাতৃভাষায় লেখা উচিত যাতে শিক্ষক ছাড়াও ছাত্রীরা নিজে নিজে পড়ে অনেকটা শিখে নিতে পারে।
এই ঐতিহ্যবোধ অনেক পূর্বেই ইরানীদের মধ্যে জাগ্রত হয়েছিল বলে তারা একেবারে নিচের ক্লাসের মাসআলার কিতাবও তাদের মাতৃভাষায় অনুবাদ করে তাদের মাদরাসায় পড়িয়েছে এবং সেই কিতাব পড়েই তারা আলেম হয়েছে। আর আমরা মাসআলার কিতাবগুলি বাংলায় অনুবাদ করে তা পড়ে আলেম-আলেমা হতে পারব না কেন?
তাই আমরা বলব, যে সব কিতাব আরবীতে পড়া ছাড়া গতি নেই যেমন আরবী সাহিত্য, কুরআন, হাদীস, নাহু-সরফ, বালাগাত ইত্যাদি কিছু কিতাব ছাড়া অন্যসব কিতাবই বাংলায় অনুবাদ করে মাদরাসার পাঠ্য করা প্রয়োজন। বিশেষ করে ফিকাহ্ ও উসূলে ফিকাহ অবশ্যই বাংলায় অনুবাদ হওয়া উচিত। না হলে মহিলা মাদরাসায় মহিলাদের উসূলে ফিকাহ শিক্ষা দেয়া কোন পুরুষের পক্ষেই (একমাত্র স্বামী ছাড়া) সম্ভব নয়।
তাঁই মহিলাদের যেমন ইলম্ শিক্ষার সুযোগ করে দিতে হবে তেমনি তার উপযোগী ব্যবস্থাপনাও সৃষ্টি করে দিতে হবে যেন তারা আলেমা হওয়ার সুযোগ পায়।
0 Comments