(১৮) কথা শুরু করবার পূর্বে প্রত্যেক মুসলমানকে সালাম দেবে। সালাম দেবার সময় মুসাফাহা বা করমর্দন করবে। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাম দেয়ার আগে কথা বলা শুরু করে, তার কথার উত্তর দেবে না, যে পর্যন্ত না সে সালাম দিয়ে কথা বলা শুরু করে। জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, আমি একদিন হুযুরে পাক (দঃ) এর দরবারে গিয়ে তাঁকে সালাম দেই নি এবং প্রবেশের অনুমতিও চাই নি। তখন হযুরে পাক (দঃ) আমাকে বললেন, তুমি ফিরে যাও এবং আসসালামু আলাইকুম বলে আস। তিনি আরও বলেছেন, যখন তোমাদের গৃহে তোমরা প্রবেশ কর, তখন গৃহবাসীদেরকে সালাম করবে। কেননা যখন কেউ এরূপ - গৃহবাসীদেরকে সালাম করে তখন শয়তান ঐ গৃহে প্রবেশ করে না। হযরত আনাস (রাঃ) বলেছেন, গত আট বছর পর্যন্ত আমি হুযুরে পাক (দঃ) এর খেদমতে অবস্থান করে আসছি। একদিন তিনি আমাকে বললেন, হে আনাস। উত্তমরূপে অজু করবে। তাতে তোমার আম্মু দীর্ঘস্থায়ী হবে। আমার উম্মতের মধ্যে যারই সাথে তোমার সক্ষাত হবে, তাকে সালাম দেবে, তাতে তোমার ছওয়াব বৃদ্ধি পাবে। যখন তোমার গৃহে প্রবেশ কর তখন গৃহবাসীদের সালাম করবে তাতে তোমার মঙ্গল বৃদ্ধি পাবে। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, যখন দু'জন মুমিনের পরস্পর সাক্ষাত হয় এবং তারা পরস্পর করমর্দন করে তখন সত্তরটি নেকী তাদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। এদের মধ্যে যে ব্যক্তি প্রফুল্ল বদনে মিলিত হয়, তার জন্য উনসত্তরটি নেকী লিখিত হয়। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, যখন কোন সম্ভাষণ দ্বারা তোমাদেরকে অভ্যর্থনা করা হয় তদপেক্ষা উত্তম সম্ভাষণ দ্বারা তাদেরকে অভ্যর্থনা কর। অথবা তার দ্বারাই কর।
হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, যার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম, তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করবে না যে পর্যন্ত না তোমরা ঈমান আনবে এবং তোমরা ঈমান আনবে না যে পর্যন্ত না তোমরা পরস্পরকে ভাল বাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন কার্যের সন্ধান দেব না! যে কার্য করলে তোমরা পরস্পরকে ভালবাসাবে। ছাহাবীগণ বললেন, জী হাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে সালাম আদান প্রদানের ব্যাপক প্রসার করা। তিনি আরও বললেন, যখন এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে সালাম দেয় এবং সে তার প্রতাউর করে, তখন ফিরেশতাগণ তাদেরকে সত্তরবার আশীর্বাদ করে। হুযুরে পাক (সঃ) আরও বলেছেন, নিশ্চয়ই ঘনি কেউ কোন মুসলমানের নিকট দিয়ে যাবার সময় তাকে সালাম না করে তবে ফিরেশতাগণ তা' দেখে আশ্চর্য বোধ করে। তিনি আরও বলেছেন, আরোহী ব্যক্তি উপবিষ্ট ব্যক্তিতে সালাম দেবে। যখন একদল লোকের মধ্যে একজনে সালাম করে, তাই সবার পক্ষহতে হয়ে যায়।
হযরত কাতাদাহ (রাঃ) বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তীগণ সিজদাহ দ্বারা অভ্যর্থনা করত। অতঃপর আল্লাহতায়ালা এই উম্মতকে সালাম প্রদান করেছেন। এটাই বেহেশতীদের সম্ভাষণ বাণী। হযরত আবু মুসলিম খাওলানী (রহঃ) একদা একদল লোকের নিকট দিয়ে যাবার কালে তাদেরকে সালাম দিলেন না। তিনি বললেন, তারা সালামের জবাব দেবে না এজন্যই আমি তাদেরকে সালাম করি নি। আমার ভয় হল যে, তাদের সালামের জবাব না দেয়ার কারণে ফিরেশতাগণ তাদের উপর অভিসম্পাত করতে পারে।
সালামের সাথে মুসাফাহা বা করমর্দন করা সুন্নত। একব্যক্তি হুযুরে পাক (দঃ) এর নিকট এসে বলল, "আসসালামু আলাইকুম" তিনি বললেন, তার জন্য দশটি ছওয়াব লিখিত হল। আর এক ব্যক্তি এসে বলল, "আসসালামু আলাইকুম অ রাহমাতুল্লাহ" তিনি বললেন, তার জন্য বিশটি ছওয়াব লিখিত হল।
আর এক ব্যক্তি এসে বলল, "আসসালামু আলাইকুম অ রাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু" তিনি বললেন, তার জন্য ত্রিশটি ছওয়াব লিখিত হল।
হযরত আনাস (রাঃ) বালকদের নিকট দিয়ে যাবার কালে তাদেরকে সালাম করতেন। তিনি হুযুরে পাক (দঃ) এর রীতি অনুসরণ করতেন। আবদুল হামিদ বাহরাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে, একদা হুযুরে পাক (দঃ) একটি মসজিদের নিকট দিয়ে যাবার কালে একদল স্ত্রীলোক তথায় উপবিষ্ট ছিল। তিনি তাদেরকে হস্ত দ্বারা সালাম দেয়ার জন্য ইঙ্গিত করলেন। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, ইয়াহুদী ও খৃস্টানদেরকে প্রথমেই সালাম করবে না। তোমাদের কারও সাথে যদি পথে তাদের কোন ব্যক্তির সাক্ষাত হয়, তাহলে তাদেরকে কোন সংকীর্ণ পথে যেতে বাধ্য করবে। তিনি আরও বলেছেন, তোমরা যিম্মীদের সাথে করমর্দন করো না এবং প্রথমেই তাদেরকে সালাম করো না। যদি পথে তাদের কারও সাথে সাক্ষাত হয়, তবে তাকে রাস্তার এক পাশে দিয়ে যেতে বাধ্য করবে।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, একদা একদল ইয়াহুদী হুযুরে পাক (দঃ) এর দরবারে এসে বলল, "আসসামু আলাইকুম” অর্থাৎ তোমাদের উপর মৃত্যু আসুক। হুযুরে পাক (দঃ) জবাবে বললেন "আ আলাইকুম” অর্থাৎ তোমাদের উপরও। হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, বরং তোমাদের উপর মৃত্যু এবং লানত আসুক। তখন হুযুরে পাক (দঃ) বললেন, আয়েশা। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা সবক্ষেত্রেই দয়া ভালবাসেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেন, তারা কি বলল, তা' আপনি শুনেন নি? হুযুরে পঞ্চ (দঃ) বললেন, তজ্জন্য আমিও তো বলেছি যে, তোমাদের উপরও। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন যে, আরোহী পদব্রাজকে, পদব্রাজক উপবিষ্টকে অল্প সংখ্যক লোক অধিক সংখ্যক লোককে বয়োকনিষ্ঠ লোক বয়োংজ্যেষ্ঠ লোককে (অমে) সালাম করবে। তিনি বলেছেন, তোমরা ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের অনুকরণ করো না। ইয়াহুদীদের সম্ভাষণ অঙ্গুলির দ্বারা ইশারা করা এবং খৃষ্টানদের সম্ভাষণ হাততালি দ্বারা ইশারা করা। তিনি আরও বলেছেন। তোমাদের কেউ যখন কোন মজলিসে উপস্থিত হয়, সে তখন মজলিসের লোককে সালাম করবে। যখন সে তথায় উপবিষ্ট হওয়া উত্তম মনে করবে, তখন সে উপবিষ্ট হবে। যখন সে মজলিস থেকে চলে যাবে, তখন মজলিসের লোককে সালাম দেবে। শেষ ব্যক্তির চেয়ে প্রথম ব্যক্তির কোন বেশী হক নেই। হযরত আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, যখন দু'জন মুমিনের সাক্ষাত হবে এবং তারা পরস্পর মুসাফাহা করবে, তখন তাদের মধ্যে সত্তরটি ক্ষমা ভাগ করে দেয়া হবে, তবে তন্মধ্যে প্রফুল্ল চিত্ত এবং আনন্দিত। লোকটির জন্যই উনসত্তরটি।
হযত ওমর (রাঃ) বলেছেন, আমি হুযুরে পাক (দঃ) কে বলতে শুনেছি, যখন দু'জন মুসলমানের পরস্পরের সাক্ষাত হয় এবং একজন অন্যজনকে সালাম দেয় এবং মুসাফাহা করে, তাদের উপর আল্লাহতায়ালার একশত দয়া বর্ষিত হয়। তন্মধ্যে নব্বইটি দয়া ঐ ব্যক্তির জন্য যে প্রথম সালাম দেয় এবং দশটি ঐ ব্যক্তির জন্য যে মুসাফাহা করে। হযরত হাসান বছরী (রহঃ) বলেছেন, মুসাফাহা ভালবাসা বৃদ্ধি করে। হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে মুসাফাহাই সম্ভাষণকে পরিপূর্ণ করে। তিনি আরও বলেছেন, মুসাফাহা কোন মুসলমানের তার ভ্রাতাকে চুম্বন সদৃশ। ধার্মিক এবং সম্মানিত লোকের হাত বরকত মনে করে ও তাকে পবিত্র এবং সম্মানিত জেনে চুম্বন করায় কোন দোষ নেই। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেছেন, আমরা হুযুরে পাক (দঃ) এর হস্ত মুবারক চুম্বন করতাম। হযরত কা'ব ইবনে মালেক (রাঃ) বলেছেন, যখন আমার তাওবাহর আয়াত নাযিল হল, আমি হুযুরে পাক (দঃ) এর নিকট এসে তাঁর হস্ত চুম্বন করলাম। এসময় একজন যাযাবর আরব এসে আরজ করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ (দঃ)! আমাকে অনুমতি দিন আমি আপনার মস্তক ও হস্তে চুম্বন করি। তিনি অনুমতি দিলে সে তাঁর মস্তক ও হস্তে চুম্বন করল। হযরত আবু ওবায়দাহ (রাঃ) হযরত ওমর (রাঃ) এর সঙ্গে সাক্ষাত করলে তিনি তাঁর সাথে মুসাফাহা করে তাঁর হস্ত চুম্বন করলেন এবং উভয়েই সাদরে পরস্পরের প্রতি অভ্যর্থনা জানালেন।
হযরত বারা' বিন আজেব (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি হুযুরে পাক (দঃ)কে তাঁর অজুরত থাকাকালে সালাম দিলে তিনি অজু শেষ না করা পর্যন্ত তার জবাব দিলেন না। অজু শেষ করে সালামের জবাব দিলেন এবং নিজ হস্ত বাড়িয়ে দিয়ে তার সাথে মুসাফাহা করলেন। হযরত বারা' (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটা বিজাতীয়দের স্বভাব। হুযুরে পাক (দঃ) বললেন, যখন দুজন মুসলমানের পরস্পর সাক্ষাত হয় এবং তারা মুসাফাহা করে, তাদের উভদের গুনাহ ঝড়ে পড়ে যায়। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, একদল লোকের নিকট দিয়ে যাবার কালে যদি সে তাদেরকে সালাম দেয় এবং তারা তার জবাব দেয়, তবে জবাব। ওয়ে সে ব্যক্তি অবিক হওয়াব পায় এবং বেশী ফজীলতের অধিকারী হয়। কেননা সে-ই প্রথম সালাম দিয়ে তাদেরকে সালামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। যদি ঐ দলের লোকেরা তার সালামের জবাব না দেয় তবে তাদের চেয়েও সুন্দর ও উত্তম একদল ফিরেশতা তার সালামের জবাব দেয়।
সালাম দেয়ার সময় মস্তক নত করা নিষিদ্ধ। হযরত আনাস (রাঃ) বলেছেন, আমরা একদা আরজ করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ। আমরা কি পরস্পরের জন্য মস্তক নত করব? তিনি বললেন, না। তারপর আরজ করলাম, আমরা কি পরস্পরকে চুম্বন করব? তিনি বললেন, না। তারপর আরজ করলাম, আমরা কি পরস্পর মুসাফাহা অর্থাৎ করমর্দন করব? তিনি বললেন, হাঁ। সফর থেকে প্রত্যাবর্তনের পর পরস্পর কোলাকুলি এবং চুম্বনের কথা অবশ্য হাদীস শরীফে আছে। হযরত আবু যর গিফারী (রাঃ) বলেছেন, আমি যখনই হুযুরে পাক (দঃ)এর সঙ্গে সাক্ষাত করেছি তিনি আমার সঙ্গে মুসাফাহা করেছেন। একবার আমার অনুপস্থিত থাকাকালে তিনি আমাকে তালাস করেছিলেন। আমি তা' পরে জানতে পেয়ে তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে দেখলাম, তিনি একখানি খাটের উপর উপবিষ্ট আছেন। আমাকে দেখতে পেয়ে তিনি খাট হতে উঠে আমার সঙ্গে আলিঙ্গন করলেন। এর দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, আলিঙ্গন বা কোলাকুলি করাটাও উত্তম। আলিমদের জন্য সম্মান প্রদর্শনার্থে যানবাহন বা সওয়ারী জন্তুর রেকাব ধারণ করার বিষয়টিও বিজ্ঞজনেরা উল্লেখ করেছেন। একবার হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এভাবে যায়েদ বিন ছাবেত (রাঃ) এর উটের রেকাব ধরেছিলেন। একবার হযরত ওমর (রাঃ) হযরত যায়েদ (রাঃ) এর উটের রেকাব ধরেছিলেন। এমনকি তিনি রেকাবটি উঁচু করে ধরে বললেন, যায়েদও তার সঙ্গীদের সাথে এরূপ করেছিলেন।
কাউকে অত্যধিক সেরা ব্যক্তি মনে করে তার জন্য দাঁড়ানো মাকরূহ কিন্তু তার প্রতি স্বাভাবিক সম্মান প্রদর্শনের জন্য দাঁড়ান মাকরুহ নয়। হযরত আনাস (রাঃ) বলেছেন, হযুরে পাক (দঃ) এর চেয়ে কেউই ছাহাবীদের নিকট অধিক ভালবাসা এবং শ্রদ্ধার পাত্র ছিলনা। কিন্তু তারা যখন তাঁকে দেখতেন, তখনই দাঁড়িয়ে যেতেন না। কেননা তাদের জানা ছিল যে. হুযুরে পাক (দঃ) এভাবে দন্ডায়মান হওয়াকে ঘৃণা করেন। একবার হযরত রাসূলে করীম (দঃ) ছাহাবীদেরকে বলেছিলেন যে, যখন তোমরা আমাকে দেখ, তখনই দাঁড়িয়ে যেও না। কেননা বিধর্মীগণ এরূপ করে। তিনি আরও বলেছেন যে, যে ব্যক্তি তার জন্য অন্য লোক দাঁড়িয়ে গেলে সন্তুষ্ট হয়, সে যেন তার স্থান দোযখে তালাস করে।
হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, কেউ যেন কোন লোককে তার আসন থেকে উঠিয়ে দিয়ে সে আসনে উপবেশন না করে। বরং নিজের জন্য অন্য স্থান বের করে নেবে। ছাহাবীগণ হুযুরে পাক (দঃ)এর এই নির্দেশ মান্য করে চলতেন। তিনি আরও বলেছেন, যখন কেউ কোন আসনে উপবিষ্ট হয়, তারপর তার কোন ভ্রাতা আগমন করলে নিজে আসন ছেড়ে দিয়ে সে আসনে তাকে বসতে দিলে তখন সে তথায় বসতে পারে। কেননা উপবিষ্ট ব্যক্তি তাকে সম্মান করেই তার জন্য নিজের স্থান ছেড়ে দিয়েছে।
বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি হুযুরে পাক (দঃ)কে তার প্রস্রাবরত অবস্থায় সালাম কারেছিল, কিন্তু তিনি তার জবাব দিলেন না। বরং ইস্তেঞ্জা করার সময় তিনি সালামের জবাব দেয়া অপছন্দ করলেন। এক ব্যক্তি হযরত রাসুলে করীম (দঃ)কে বলল, আলাইকুমুস সালাম, জবাবে তিনিও বললেন, অ আলাইকুমুস সালাম। এটা মুসলমানদের প্রতি পূর্ণ সম্ভাষণ নয়। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ তার ভ্রাতার সাথে সাক্ষাত করে, সে যেন বলে, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি। অর্থাৎ তোমাদের উপর সালাম এবং আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হোক। আগন্তুক ব্যক্তি যদি সালাম দেয়ার পর মজলিসে বসার স্থান না পায়, তবে সে যেন তথ্য থেকে চলে না যায়; বরং সবার পেছনেই বসে পড়ে।
একদা হযরত রাসূলে করীম (দঃ) মসজিদে উপবিষ্ট থাকা অবস্থায় তিন ব্যক্তি তাঁর নিকট আগমন করল, তন্মধ্যে দু'জন তাঁর দিকে অগ্রসর হল, একজন সামান্য স্থান পেয়ে সেখানে বসে পড়ল। দ্বিতীয়জন মজলিসের পিছনে গিয়ে আসন গ্রহণ করল এবং তৃতীয়জন মজলিস থেকে চলে গেল। হুযুরে পাক (দঃ) তাঁর কথা শেষ করে বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এ লোক তিনটির বিষয় কিছু বলব না? এদের একজন আল্লাহর নিকট আশ্রয় চেয়েছে, আল্লাহ তাকে আশ্রয় দিয়েছেন। দ্বিতীয়জন লজ্জা করেছে এবং আল্লাহও তাকে দেখে লজ্জিত হয়েছেন এবং তৃতীয়জন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং আল্লাহ তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। হযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, দুজন মুসলমানের সাক্ষাত হলে, তারা যদি মুসাফাহা করে তবে তারা পরস্পর পৃথক হওয়ার পূর্বেই আল্লাহতায়ালা তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। একদা উম্মে হানীফ হুযুরে পাক (দঃ)কে সালাম দিলে তিনি বললেন, ইনি কে? তখন বলা হল, ইনি উম্মে হানীফ! শুনে হযুরে পাক (দঃ) বললেন, উম্মে হানীফকে স্বাগতম।
0 Comments