(৪) তুমি কোন লোকের নিন্দা শ্রবণ করবে না। যদি কোনরূপে কারও নিন্দা তোমার কানে আসে তবে যার নিন্দা করা হয়েছে তার কাছে তা' পৌঁছে দেবে না। হযরত রাসূলে করীম (দঃ) বলেছেন, নিন্দুক ব্যক্তি কখনও বেহেশতে প্রবেশ করবে না। হযরত খলীল বিন আহমদ (রহঃ) বলেছেন, যে তোমার সামনে অন্যের নিন্দা করে সে তোমার অনুপস্থিতিতে অন্যের নিকট তোমার নিন্দা করনে। যে ব্যক্তি অন্যের সংবাদ তোমার নিকট পৌছায় সে তোমার সংবাদও অন্যের নিকট পৌছাবে।
(৫) তুমি যে কোন লোকের সাথে মনোমালিন্য ত্যাগ করবে। যদি কখনও কারও প্রতি খুল্ক বা জাগান্বিত হও সে পরিচিত লোক হলে তার সাথে তিনদিনের অধিক মনে ক্ষোভ বা রাগ রাখবে না। হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) বলেন যে, হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, কোন মুসলমানের তার আতাকে তিনদিনের অধিক ত্যাগ করে থাকা জায়েয নয়। পরস্পরের মধ্যে সাক্ষাত হলে একজনের মুখ একদিকে এবং অন্যজনের মুখ অন্য দিকে রাখা অনুচিত। দু' জন লোকের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে প্রথম সালাম করে। হযরত রাসূলে করীম (দঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দেয় রোজ কিয়ামতে আল্লহতায়ালা তার দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন। হযরত আকরামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা হযরত ইউসুফ (আঃ) কে বলেছিলেন, তুমি তোমার ভ্রাতাদেরকে ক্ষমা করে দাও। তার ফলে ইহ-পরকালে তোমার গৌরব বর্ধিত হবে, হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, হুযুরে পাক (দঃ) কখনও কারও থেকে ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য প্রতিশোধ গ্রহণ করেন নি। কিন্তু আল্লাহর ও দ্বীনের সম্মান নষ্ট করবার জন্য তিনি প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, কেউ কোনও অত্যাচারমূলক দোষ ক্ষমা করে দিলে আল্লাহ তার মান-মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, দান করায় কখনও ধন হ্রাস পায় না। ক্ষমার দ্বারা ক্ষমাকারীর সম্মান বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং আল্লাহর জন্য নম্রতা অবলম্বন করলে আল্লাহ তাকে উন্নত করেন।
(৬) কোনও লোক উপকার প্রাপ্তির যোগ্য হোক বা নাহোক সাধ্য ও সম্ভব হলে প্রত্যেক ব্যক্তিকেই উপকার করবে। হুযুরে পাক (দঃ) বলেছেন, ইছনাইল মা'রূফা ফী আহলিহী ওয়া গাইরা আহলিহী" অর্থাৎ সৎ হোক কি অসৎ হোক সবারই উপকার করবে। যদি তুমি এমন লোকের উপকার কর যে উপকার পাবার যোগ্য, তবেত উত্তম কাজ করলে আর যদি এমন লোকের উপকার কর, যে উপকার পাবার অযোগ্য তখন সে ব্যক্তি উপকার পাবার যোগ্য না হোক তুমি ত উপকার করবার যোগ্য হলে? হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, দ্বীনের পরেই বুদ্ধিমত্তার প্রধান কাজ মানুষের সাথে সৌহার্দ্য ও সম্ভাব রক্ষা করা এবং সৎ-অসৎ নির্বিশেষে সবার উপকার করা। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, কোনও ব্যক্তি হুযুরে পাক (দঃ)এর হস্ত ধারণ করলে যে পর্যন্ত না সে ব্যক্তি তাঁর হস্ত ছেড়ে দিত সে পর্যন্ত তিনি তাঁর হস্ত ছাড়িয়ে নিতেন না। কেউ তাঁর সাথে কোন কথা বললে তিনি কখনও তার থেকে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখতেন না। কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার দিকেই দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখতেন।
0 Comments