পটভূমিঃ
রমণীদের মাঝে হযরত আয়েশা (রা) শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারিণী। রমণীদের মধ্যে হযরত ঈসা (আ)-এর জননী এবং ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া ব্যতীত অপর কোন মহিলা আয়শা হতে মর্যাদার চরম শিখরে আরোহণ করতে পারেন নি। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিবিগণের মাঝে হযরত আয়শা (রা) ছিলেন তৃতীয়। হিজরী ৩য় সনে, নবুয়্যতের দশম সালে ২৫ শাওয়াল মোতাবেক ৬২০ সালের মে মাসে বিনা আড়ম্বরে পাঁচশত দিরহাম মোহর ধার্যে বিয়ে সম্পন্ন হয়। হযরত আয়েশা (রা) ছিলেন, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিবিগণের মধ্যে তীক্ষ্ণ মেধা শক্তিসম্পন্না, বিদূষী, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী, গৃহকর্মে সুনিপুণ, শিক্ষয়িত্রী, সত্যের সাধিকা, অগ্নিবর্ষী বাগীশ, সচ্চরিত্রবর্তী, মধুর আলাপী।
এক কথায় মানবীয় গুণের সকল গুণের আধার বলা যায়। হযরত আয়েশা (রা) এবাদত, আল্লাহর রাহে জীবন, যৌবন উৎসর্গ করার এবং আল্লাহর দীদারের পরিপ্রেক্ষিতেই আল্লাহ্ তা'য়ালা তাঁর উছিলায় তাইয়াম্মুমের বিধান চালু করেন।
পরিচয়ঃ
পৈত্রিক নামানুসারে লকৰ সিদ্দীকা। আসল নাম আয়েশা। কুনিয়াত উন্মুল মুমিনীন ও উন্মে আব্দুল্লাহ। লকব হিসেবে তিনি হোমাইরা নামেও অভিহিতা হতেন। প্রকাশ থাকে যে, উন্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা ছিলেন নিঃসন্তান। একদা তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট আরজ করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনার অন্যান্য স্ত্রীগণ তাঁদের পূর্ব সন্তানগণের নামানুসারে কুনিয়াত গ্রহণ করেছেন আমি কার নামে কুনিয়াত রাখব? রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আপনার বোনের বেটা আব্দুল্লাহ্ নামে আপনি কুনিয়াত গ্রহণ করুন। এরপর হতে উন্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা উম্মে আব্দুল্লাহ নামে পরিচিতা হন। এ আবদুল্লাহ হলেন, তাঁর বৈমাত্রের জ্যেষ্ঠা বোন হযরত আসমার পুত্র। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে হোমায়রা লকব বলে এ নামেই বেশি ডাকতেন। কারণ তাঁর গায়ের রং গৌর বর্ণ ছিল বিধায়। পিতার নাম আবদুল্লাহ, কুনিয়াত আবুবকর, লকব ছিদ্দীক। মাতার নাম উম্মে রুমান।
পিতার দিক থেকে বংশ তালিকাঃ
আয়েশা বিনতে আবু বকর ইবনে আবু কোহাফা ইবনে ওসমান ইবনে আমের ইবনে ওমর ইবনে ফিহর ইবনে মালেক।
মাতার দিক হতে বংশতালিকাঃ
আয়েশা বিনতে উম্মে রুমান বিনতে আমের ইবনে উয়াইমির ইবনে আবদ শামছ ইবনে ইতাব ইবনে উযাইনা ইবনে সাবী ইবনে দাহমান ইবনে হারিছ ইবনে গানায় ইবনে মালেক ইবনে কেনানাহ। এমতাবস্থায় আমরা দেখতে পাই, বংশ পরম্পরা হযরত আয়েশার পিতার দিক দিয়ে কোরাইশিয়া তাইমিয়াহ এবং মাতার দিক দিয়ে কোনানিয়া গোত্রে মিলিত হয়েছে। মোটকথা, হযরত আয়েশা (রা)-এর পিতৃকুল অষ্টম এবং মাতৃকুল দ্বাদশ পুরুষে এক হয়ে গিয়েছে।
জন্মগ্রহণঃ
হযরত আয়েশা (রা)-এর জন্মের সময়, ক্ষণ, তারিখ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ঐতিহাসিকগণ সঠিকভাবে তা নিরূপণ করতে পারেন নি। তবে বিখ্যাত ইতিহাস শাস্ত্রবিধ ইবনে সায়াদ লিখেছেন, নবুওতের চতুর্থ সালের প্রথম দিকে উন্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা) জন্মগ্রহণ করেন।
আবার কোন ঐতিহাসিক লিখেছেন, হযরত আয়েশা (রা) নবুওতের দ্বিতীয় সালে জন্মগ্রহণ করেছেন। তাঁর সঠিক জন্ম তারিখ যা-ই হোক না কেন যে দিন তিনি উম্মে রুমানের গর্ভ হতে হযরত আবু বকরের ঘরে আগমন করলেন তখন কে জানত এ ছোট শিশু কন্যাটির নাম পরবর্তীকালে একজন ইতিহাসপ্রসিদ্ধ নারীরূপে ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। কে-ই বা ভেবেছিল এ কন্যাটিই হবে মাহবুবে খোদা সাইয়্যেদুল মুরসালিন খাতিমুন নাবিয়্যিন হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অতি স্নেহের মহীয়সী।
আরবের আজন্ম প্রথা, তদুপরি কোরাইশ পরিবারের ঐতিহ্যাযানুযায়ী তাঁকে লালন-পালনের ভার দেন ওয়ায়েলের স্ত্রীর ওপর। ওয়ায়েলের স্ত্রী পরম আদর-যত্নের সাথে তাঁকে লালন-পালন করেন। ওয়ায়েলও আয়েশাকে অতিশয় স্নেহ করতেন। পরবর্তীকালে এ ওয়ায়েল এবং তার সন্তান এমন কি ওয়ায়েলের ভাইও এসে হযরত আয়েশার খোঁজ-খবর নিতেন।
একদা ওয়ায়েলের ভাই আফলাহ হযরত আয়েশার সাথে দেখা করতে আসেন। সে সময় তিনি পরিণত বয়স্কা এবং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গৃহে অবস্থান করছেন। হযরত আয়েশা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুমতি নিয়ে তাঁর সাথে দেখা করে কুশলাদি আদান-প্রদান করেন। তাঁর দুধ ভাইগণও সদা-সর্বদা তাঁর সাথে দেখা করতে আসত। অর্থাৎ হযরত আয়েশা ওয়ায়েল পরিবারের একান্ত আপন ও ঘনিষ্ঠ ছিলেন এটাই হল তার প্রকৃত প্রমাণ।
শৈশব কালঃ
হযরত আয়েশা অপরাপর শিশুদের ন্যায় ছিলেন না। হযরত আয়েশার জীবনী লিখতে গেলে বহুল প্রচলিত ইংরেজি প্রবাদ 'মর্নিং সোজ দি ডে' অর্থাৎ উষার কিরণ দেখার সাথে সাথেই দিনের অবস্থা কেমন হবে অনেক উপলব্ধি করা যায়।
শিশুর শৈশব অবস্থার প্রতি একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে বুঝা যায় এই শিশু তার বয়ঃপ্রাপ্তকালে কেমন হবে। তার পরবর্তী কর্মজীবনের অনেক কিছুই এই শৈশবকালেই তার চাল-চলন, কথা-বার্তা, উঠা-বসা, আচার-ব্যবহার এবং মেধাশক্তির দ্বারা পরিষ্কারভাবে সমাজের অপরাপরের নিকট, বিশেষ করে আপন পরিবার-পরিজনের নিকট দিবালোকের ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেয়। চরিত্রে যে সকল বৈশিষ্ট্য সাধারণত সর্বত্রই দেখা যায় হযরত আয়েশা কোন মতেই তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। অপরাপর শিশুদের ন্যায় তিনিও অধিকাংশ সময় খেলা-ধুলা, আমোদ-স্ফূর্তি, দৌড়াদৌড়ি করে কাটাতেন।
প্রতিবেশি সম-বয়সীদিগকে একত্র করে খেলা-ধুলা করতেন। মহল্লার অপরাপর চঞ্চলমতি শিশুরাও পরম আনন্দের সাথে তাঁর সাথী হয়ে খেলা করতে অতিশয় ভালবাসত। তাঁর অতি প্রিয় ছিল দোলনায় দোলা, পুতুল খেলা, চড়ুই ভাতি, দৌড় প্রতিযোগিতা। খেলাচ্ছলে দোলার তালে তালে তিনি যখন আরবি কবিতা এবং কুরআন শরীফের আয়াত কচি মুখে পাঠ করতেন তখন এক অপূর্ব সুরের দ্যোতনা সৃষ্টি হত যা পথিকের পথ চলা রোধ করে দিত। হযরত রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায়ই প্রিয় বন্ধু ও সহচর হযরত আবু বকরের ঘরে যাওয়া-আসা করতেন। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের আভাস পেলেই সাথী-সঙ্গী নিয়ে হযরত আয়েশা খেলার জিনিসপত্র নিয়ে ছুটে পালাতেন।
একদিন তারা পালাবার সুযোগ পেল না। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধীরপদে তাদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। তিনি ছোট শিশুদেরকে প্রাণের চেয়েও ভালবাসতেন। তাই তাদের খেলাকে কোন মতে অপছন্দ করতেন না। তাদের সাথে আলাপ-আলোচনার জন্য আরো কাছে ডাকতেন। অথচ হযরত আয়েশা পুতুল খেলায় মগ্ন। তিনি আপন স্থান হতে একটুও নড়লেন না।
হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধীরে ধীরে তাঁর নিকট গেলেন। তিনি দেখলেন, আয়েশা যে ঘোড়ার পুতুল নিয়ে খেলা করছেন তার দু'খানা পাখা রয়েছে। এ ছোট শিশুর সাথে আলাপ করার মানসে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আয়েশাকে জিজ্ঞেস করলেন, আয়েশা! তোমার হাতে এটা আবার কি?
হযরত আয়েশা উত্তর করলেন, এটা একটি ঘোড়া।
হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবার বললেন, ঘোড়ার তো পাখা হয় না?
হযরত আয়েশা উত্তর দিলেন, কে বলেছে ঘোড়ার পাখা হয় না? আপনার কি জানা নেই হযরত সোলাইমানের ঘোড়ার পাখা ছিল?
হযরত আয়েশার এ অল্প বয়সের এমন জ্ঞানগর্ভ উত্তর শ্রবণ করে হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতবাক হয়ে গেলেন। উপস্থিত জবাবে হযরত আয়েশা শিশুকাল হতে কেমন ধী-শক্তিসম্পন্না ছিলেন তার নজীর এখানে পাওয়া যায়। হযরত আয়েশা কেমন মেধাবিনী ছিলেন আমরা এখানে তার যৎকিঞ্চিত আলোচনা করব।
একদা হযরত আবু বকর শুনতে পেলেন, তাঁর শিশু কন্যা হযরত আয়েশা তৎকালীন আরবি সাহিত্যে বিখ্যাত কবি লবিদের একটি কবিতা আবৃত্তি করছেন। আর এ কবিতাটিই হযরত আবু বকর আয়েশার সামনে একবার মাত্র পাঠ করছিলেন।
কন্যার এ স্মৃতিশক্তি দেখে পিতার অন্তর খুশিতে ভরে উঠল। সময়, কালের পরিপ্রেক্ষিতে হযরত জিব্রাইল (আঃ) আল্লাহর পক্ষ হতে কোরআনের আয়াত নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হতেন। পরক্ষণেই উপস্থিত সাহাবাগণ তা মুখস্থ করে নিতেন। সাহাবাগণ বাড়ি ফিরে ঐ আয়াত অন্য সদস্যগণকে শুনাতেন আর তারাও তা মুখস্থ করে নিতেন। হযরত আয়েশা পিতার নিকট কুরআন শরীফের আয়াত শুনেই তা মুখস্থ করে ফেলতেন। অথচ এ বয়সের শিশুরা কোন কথাই মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করে না। কিন্তু হযরত আয়েশা এ অল্প বয়সে যাই শুনতেন তাই তাঁর স্মৃতিপটে অংকিত হয়ে যেত।
কন্যার এরূপ মেধাশক্তি দেখে হযরত আবু বকর আল্লাহর কাছে মুনাজাত করতেন, হে পরওয়ারদেগার! তুমি আমার এ শিশু কন্যার দীর্ঘায়ু দান কর এবং তাঁর উছিলায় আমাদের বংশের গৌরব বৃদ্ধি কর। পতিগমে তাঁর দ্বারা জগতে ইসলামের বহু জটিল সমস্যার সমাধান হয়েছিল তা আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী।
হযরত আবু বকর ছিলেন তৎকালীন পণ্ডিত ব্যক্তিদের অন্যতম। বংশ পরিচয়ের ইতিহাস তাঁর যুগে অপর কেউই এত সঠিকভাবে জানত না। তাই আরবের লোকজন সর্বদা তাঁর নিকট এসে আপন গোত্রীয় বংশ পরিচয় জেনে নিত। হযরত আয়েশা পিতার এ গুণটি ছোট বেলায়ই আয়ত্ত করে নেন। পরবর্তীকালে দেখা যায়, হযরত আমীর মাবিয়াহ তাঁর রাজত্বকালে আরব জাতির বংশ ইতিহাস রচনা করার সময় ঐতিহাসিকগণকে হযরত আয়েশা (রা)-এর নিকট থেকে এ বিষয়ে মাল-মসলা সংগ্রহ করার জন্য আদেশ প্রদান করেছিলেন। মক্কার কাফেরদের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সিদ্ধান্ত নিলেন হিজরতের।
মদিনাকেই হিজরতের উপযুক্ত স্থান মনে করে তিনি সিদ্ধান্তে অটল রইলেন। এ সময় হযরত আয়েশা (রা)-এর বয়স মাত্র আট বছর।
এ আট বছর বয়সের সংঘটিত ঘটনার ব্যাপারে হযরত আয়েশা (রা) হতে যেমন নির্ভুল হাদীস বর্ণিত হয়েছে, অপর কোন সাহাবী এমন সুন্দর প্রকৃত তথ্য বর্ণনা করতে পারেন নি।
শিক্ষাঃ
তখনকার আরবে, অর্থাৎ আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে লেখাপড়ার সুযোগ সুবিধা ছিলই না, তদুপরি নানা কুসংস্কারের মধ্যে তারা বসবাস করত। লেখাপড়ার গণ্ডি ছিল একেবারেই সীমিত। বিশেষ করে তৎকালীন আরব বর্বর জাতির লেখাপড়ার প্রতি কোন আসক্তিই ছিল না। সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোকেরা কিছু কিছু বিদ্যার্জন করত।
হযরত আবু বকর (রা) ছিলেন তৎকালীন আরবের মুষ্টিমেয় কয়েকজন বিদ্বানের অন্যতম। তিনিই কন্যা হযরত আয়েশার লেখা-পড়ার ভার গ্রহণ করেন। বালিকা আয়েশা একান্ত মনোযোগের সাথে পিতার নিকট হতে সে সময়কার বিদ্যা আচার-ব্যবহারে, স্বভাব-চরিত্রে অল্প দিনের মধ্যে হযরত আয়েশা সুযোগ্য পিতার সকল গুণাবলিই আয়ত্ত করে নিতে সমর্থ হন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবার হতে কুরআন শরীফের কোন নতুন আয়াত শুনে এসে তিনি আয়েশাকে শিক্ষা দিতেন। আর আয়েশাও আগ্রহ সহকারে তা মুখস্থ করে নিতেন। ইতোমধ্যেই তিনি ইসলামের হুকুম-আহকাম, নামায, রোযা ইত্যাদি অনুষ্ঠানগুলো যথারীতি আদায় করতে বেশ যত্নবান হলেন।
তৎকালে আরবে লেখা-পড়ার চর্চা ছিল না বললেই চলে। তাদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা ছিল অতি নগণ্য। ইসলামের প্রথম দিকে শিক্ষিত পুরুষ এবং মহিলা ছিল সর্বমোট চল্লিশজন। তাঁদের মধ্যে মহিলা বিদূষী শাফা বিনতে আবদুল্লাহ আদকিয়া ছিলেন অন্যতম।
এ বিদূষী মহিলাকে হযরত আবু বকর আপন কন্যা হযরত আয়েশার গৃহ শিক্ষয়িত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। তিনি বিশেষ যত্ন সহকারে তাঁকে সর্ব বিষয়ে শিক্ষা দান করে উপযুক্ত শিষ্য হিসেবে গড়ে তোলেন।
এ গৃহ শিক্ষয়িত্রী ও পিতার অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলেই পরিণত বয়সে এবং কর্মময় জীবনে হযরত আয়েশা (রা) ইসলামের ইতিহাসে এক নজীরবিহীন অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। পুঁথিগত বিদ্যা শিক্ষালাভ করেই হযরত আয়েশা ক্ষান্ত হন নি। আদর্শ গৃহিণী, ধর্মপরায়ণতা, মায়ের কাছে থেকে তিনি গৃহ কর্মেও পারদর্শী হয়েছিলেন। হযরত আবু বকর প্রিয় কন্যা আয়েশার চরিত্র গঠনে নিম্নরূপ পদ্ধতিতে শিক্ষা দান করতেন। আল্লাহর বহু গুণবাচক নামের মধ্যে "রহমান" অন্যতম। তিনি বলতেন, আল্লাহর স্বভাবে নিজের স্বভাবকে রূপায়িত করে নাও। তাঁর মেহেরবানীতে এ বিশ্ব চরাচর সজীব ও সতেজ রয়েছে। তাঁর অপর গুণবাচক নাম 'গফুর'।
0 Comments