প্রিয়নবী (সাঃ)-এর পবিত্র চেহারা আহত
কুরায়শদের বিখ্যাত বীর আবদুল্লাহ বিন কামিয়াহ কাতার ডিঙিয়ে হুযুর (সাঃ)-এর দিকে অগ্রসর হয় এবং হযরত (সাঃ)-এর পবিত্র চেহারায় তলোয়ারের আঘাত করে, যার ফলে শিরস্ত্রাণের দু'টি অংশ চেহারা মুবারকে ঢুকে যায় এবং তাঁর একটি পবিত্র দাঁত শহীদ হয়ে যায়। হযরত সিদ্দীকে আকবর (রাঃ) শিরস্ত্রাণের অংশ ক্ষতস্থান হতে বের করার জন্য অগ্রসর হলে আবু উবায়দা বিন জাররাহ শপথ করে বলেন যে, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এ কাজটি আমাকে করতে দাও। অতঃপর নিজে এগিয়ে গিয়ে হাতের পরিবর্তে স্বীয় মুখ দ্বারা ঐ অংশ বের করার চেষ্টা করেন। প্রথম বারে একটি অংশ বের হলো, কিন্তু সাথে সাথে হযরত আবু উবায়দার একটি দাঁতও ভেঙ্গে যায়। এটা দেখে দ্বিতীয় অংশ বের করার জন্য হযরত আবু বকর (রাঃ) এগিয়ে আসেন, কিন্তু হযরত আবু উবায়দা (রাঃ) এবারও শপথ দিয়ে তাঁকে বাধা দেন এবং নিজেই দ্বিতীয়বার মুখ দ্বারা বাকী অংশ বের করতে গেলে আবু উবায়দা (রাঃ)-এর দ্বিতীয় দাঁতটিও ভেঙ্গে যায়। মরণপণকারী সাহাবায়ে কেরাম হযরত (সাঃ)-এর চারপাশে একটি বেষ্টনী তৈরী করেন। তীর ও তলোয়ারের বৃষ্টি হচ্ছিল; কিন্তু এ সমস্ত সাহাবী তা নিজের শরীরের উপর নিচ্ছিলেন। হযরত আবু দাজানা (রাঃ) ঝুঁকে পড়ে নিজে হুযুর (সাঃ)-এর ঢাল স্বরূপ হয়ে গেলেন। যে তাঁর আসতো, সেটাই তাঁর পিঠে লেগে যেত। হযরত তালহা (রাঃ) তীর ও তলোয়ারগুলোকে নিজেই বাধা দিতেন, ফলে তাঁর হাত কেটে পড়ে যায়। যুদ্ধের পর দেখা যায় যে, তাঁর শরীরে ৭০ টিরও বেশী জখম হয়েছে।
হযরত আবূ তালহা একটি ঢালের সাহায্যে হযরত (সাঃ)-এর হিফাজত করছিলেন। হযরত (সাঃ) যখন গর্দান উঁচু করে সৈন্যদের দিকে তাকাতেন, তখন আবু তালহা বলতেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি মাথা উঁচু করবেন না। শত্রুদের নিক্ষিপ্ত কোন তীর যেন আপনার দেহে না লাগে। এর জন্য আপনার পূর্বে আমারই বক্ষ প্রস্তুত রয়েছে।
একজন সাহাবী আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ। যদি আমি নিহত হয়ে যাই, তবে আমার গন্তব্য কোথায় হবে? হযরত (সাঃ) বললেন, বেহেশতে। তাঁর হাতে কিছু খেজুর ছিল, যা তিনি খাচ্ছিলেন। এটা শুনেই তিনি এগুলো ফেলে দিয়ে সোজা যুদ্ধের মাঠে চলে গেলেন এবং ভীষণ যুদ্ধের পর শহীদ হয়ে যান। কুরায়শ বর্বরদের দল নির্মমভাবে হযরত (সাঃ)-এর উপর তীর নিক্ষেপ করতে লাগলো, কিন্তু রাহমাতুল্লিল 'আলামীনের পবিত্র মুখে এ বাক্য ছিল: "হে আল্লাহ্। আমার কওমকে ক্ষমা কর, কেননা তারা জানে না।" তাঁর পবিত্র উজ্জ্বল চেহারা থেকে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল এবং শান্তির নবী কাপড় দ্বারা তা মুছছিলেন এবং বলছিলেন, "যদি এক ফোঁটা রক্ত জমিতে পতিত হত, তাহলে সকলের উপর আল্লাহর আযাব অবতীর্ণ হয়ে যেত।" ঐ যুদ্ধে কাফিরদের মাত্র ২২/২৩ জন নিহত হয় এবং মুসলমানদের ৭০ জন শাহাদাত বরণ করেন।
হযরত হামযা (রাঃ)-র শাহাদাত
উহুদের যুদ্ধে ৭০ জন সাহাবী শহীদ হন এবং অনেক মুজাহিদ আহত হন। নবী (সাঃ)-এর আপন চাচা, দুধভাই, অকৃত্রিম বন্ধু ও উৎসর্গীকৃত প্রাণ সাহাবী হযরত হামযা (রাঃ)-র শাহাদাত লাভের মর্মস্পর্শী ঘটনা ইতিহাসে অম্লান হয়ে আছে। ওহীর ধারক মহানবী (সাঃ) তাঁকে সাইয়েদুস-শুহাদা (শহীদদের অগ্রদূত) উপাধি প্রদান করেছেন।
এই যুদ্ধে মক্কার মুশরিকরা হিংস্র জন্তু ও রক্তপিপাসু হায়েনার মত নিহতদের নাক-কান কেটে ফেলে এবং পেট চিরে কলিজা বের করে বল্লমের আঘাতে তা কুটিকুটি করে ফেলে। আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দাহ তো শহীদদের নেতা হযরত হামযা (রাঃ)-র কলিজা বের করে তা দাঁত দিয়ে কামড়িয়ে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে। ওহশী নামে এক আবিসিনীয় ক্রীতদাস হযরত হামযা (রাঃ)-কে শহীদ করেছিল। আনন্দের আতিশয্যে হিন্দাহ তাকে নিজের গলার সোনার হার উপহার দেয়। আবু সুফিয়ান নিজের সাফল্যের আনন্দে এই কথা বলে তার বাহিনী নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় যে, আগামী বছর আবার বদরের প্রান্তরে তোমাদের সাথে যুদ্ধ হবে।
সারিয়ায়ে মুনজির (রাঃ)
ঐ বৎসর সফর মাসে হযরত (সাঃ) ৭০ জন সাহাবীর একটি দল ইসলাম প্রচারের জন্য নজদবাসীর নিকট প্রেরণ করেন, যাঁদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় বিদ্বান সাহাবীও ছিলেন। সেখানে পৌঁছার পর আমের রায়ীল, জাকওয়ান ও উছাইয়া তাদের মুকাবিলার জন্য এগিয়ে আসে। অবশেষে যুদ্ধ হল এবং ঘটনাক্রমে সমস্ত সাহাবী শাহাদাত বরণ করলেন। এতে হুযুর (সাঃ) খুব মর্মাহত হলেন। এমন কি হযরত (সাঃ) ঐ সমস্ত হত্যা কারীর জন্য কয়েকদিন পর্যন্ত ফজর নামাযে বদদোয়া করেন। ঐ বৎসর শাওয়াল মাসে হযরত হাসান (রাঃ) ভূমিষ্ঠ হন এবং উন্মে সালমা (রাঃ) হযরত (সাঃ)-এর সাথে বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হন।
কুরায়শ ও ইয়াহুদীদের ঐক্য
যখন নবী করীম (সাঃ) মদীনায় আগমন করেন, তখন এখানকার ইয়াহুদীদের সাথে সন্ধি করেছিলেন, যা হুযুর (সাঃ) সর্বদা পূরণ করতে থাকেন। কিন্তু যেহেতু য়াহুদীদেরকে পবিত্র মদীনায় নেতা ও শীর্ষস্থানীয় মনে করা হত, তাই হুযুর (সাঃ)-এর আগমনের পর ক্রমাগত ইসলামের উন্নতি দেখে তারা সাংঘাতিক হিংসান্ধ হয়ে ওঠে। ফলে তারা সর্বদা হযরত (সাঃ) এবং মুসলমানদেরকে কষ্ট দিত। গাযওয়ায়ে বদরে যখন মুসলমানদের আশ্চর্যজনক বিজয় লাভ হয়, তখন তাদের হিংসা-বিদ্বেষের সীমা রইল না। অবশেষে তারা প্রকাশ্যভাবে অঙ্গীকার ভঙ্গ করল। তাই ৩ হিজরীতে তাদের গোত্র বনু কায়নুকা যুদ্ধ ঘোষণা করে। বনূ নজীর বিদ্রোহ শুরু করে। এটা দেখে হযরত (সাঃ) যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। মুকাবিলা হলো। তাঁরা সবাই দুর্গে বন্দী হলো। কিছু দিন এভাবে অবরুদ্ধ থাকার পর দেশ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বনু কায়নুকা শাম দেশে এবং বনূ নজীর খায়বর ও অন্যান্য জায়গায় চলে যায়।
এদিকে মক্কার কুরায়শগণ প্রথম থেকেই এখানকার ইয়াহুদী ও মুনাফিকদের পত্রাদি লিখে শুধু বিরোধিতার ইন্ধনই প্রজ্বলিত করতো না; বরং সাথে এ ধমক বা হুশিয়ারীও প্রদান করা হতো যে, যদি তোমরা মুহাম্মদ (সাঃ)-কে সেখান থেকে বহিষ্কার না কর, তাহলে আমরা তোমাদের সাথেও যুদ্ধ করব। এ সমস্ত কারণে তাদের মধ্যে পরস্পর সম্পর্ক হয়ে যায় এবং মক্কার কুরায়শ, মদনিার ইয়াহূদী এবং মুনাফিকীন সবার সম্মিলিত শক্তি ইসলামের বিরোধিতায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। মক্কা থেকে মদীনা পর্যন্ত সমস্ত গোত্রের মধ্যে এক দাবাগ্নি জ্বলে ওঠে। সুতরাং ৫ হিজরীর ১০ মুহররম সংঘটিত গাযওয়ায়ে জাতুর রেকা ঐ ষড়যন্ত্রের ফল। গাযওয়ায়ে দাওমাতুল জান্দাল ৫ হিজরীর রবিউল আউয়াল মাসে সংঘটিত হয়। এটাও ঔ যুদ্ধের ক্রমপরিণতি ছিল। ৫ হিজরীর ২ শাবান গাযওয়ায়ে বনী মুসতালিক সংঘটিত হওয়াও এ সম্মিলিত ষড়যন্ত্রের কারণ। এ সমস্ত ষড়যন্ত্র এক যুগ পর্যন্ত বিভিন্নরূপে প্রকাশ হয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
গাযওয়ায়ে আহযাব বা খন্দকের যুদ্ধ
এই যুদ্ধ খন্দক য। পরিখার যুদ্ধ নামেও খ্যাত। আহযাবের যুদ্ধ অন্যান্য সব যুদ্ধের মধ্যে বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার এবং নিজস্ব ধরণ ও বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে স্বাতন্ত্র্যের অধিকারী।কেননা এই যুদ্ধে মুসলমানদেরকে যুগপৎভাবে সমস্ত কাফির গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়েছে এবং আরব গোত্রসমূহ, ইয়াহুদী ও তাদের মিত্ররা সকলে একতাবদ্ধ হয়ে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য বের হয়েছিল। উপরন্তু মোনাফিক গোষ্ঠীও গোপনে তাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছিল। 'হিযব' শব্দের অর্থ 'দল' এবং আহযাব বহুবচন, তাই এই যুদ্ধকে বাযওয়াতুল আহযাব বলা হয়, এবং যেহেতু হযরত সালমান ফারসী (রাঃ)-এর পরামর্শ অনুযায়ী মুসলমানগণ প্রথমবারের মত 'খন্দক' বা 'পরিখা' খনন করে মদীনাকে শত্রুবাহিনীর আক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখার কৌশল অবলম্বন করে। তাই এই যুদ্ধকে গাযওয়াতুল খন্দক বা গরিখার যুদ্ধও বলা হয়। এই যুদ্ধ পঞ্চম হিজরীর শাওয়াল মাসে/ফেব্রুয়ারী, ৬২৭ খৃষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়। যখন আবু সুফিয়ান ১০ হাজার যুদ্ধবাজ সৈনিক নিয়ে মদীনা আক্রমণের জন্য মক্কা থেকে রওয়ানা হয়। এই ঘটনা ইতিহাস ও জীবনী গ্রন্থসমূহ ছাড়াও সহীহ বুখারীতেও বিস্তারিত বর্ণিত আছে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে সুস্পষ্ট বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে।
ষড়যন্ত্রকারীরা অবশেষে সম্মিলিতভাবে পবিত্র মদীনা আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং মুসলমানদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য মদীনার দিকে এগিয়ে চলে। নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট যখন এ খবর পৌঁছে, তখন তিনি সাহাবিগণকে একত্র করে তাঁদের সাথে পরামর্শ করেন। হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) মত দিলেন যে, খোলা ময়দানে বের হয়ে যুদ্ধ করা ঠিক হবে না; বরং যে দিক থেকে তাদের মদীনা প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে, ঐদিকে পরিখা খনন করতে হবে। সুতরাং হযরত (সাঃ) ৩ হাজার সাহাবীকে সাথে নিয়ে পরিখা খনন করার জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে কাজে লেগে গেলেন। ৬ দিনে এই পাঁচ গজ গভীর পরিখা এভাবে তৈরী হলো যে, এই খনন কাজে স্বয়ং হুযুর (সাঃ)-এর পবিত্র হাতের এক বিরাট অংশ ছিল।
একদিন পরিখা খনন করার সময় একটি শক্ত পাথর বের হয়ে আসে। এর ফলে পরিখা খননের কাজ ব্যাহত হয়ে পড়ে। হযরত (সাঃ) তাঁর পবিত্র হাতে এর উপর এক আঘাত করলে তা টুকরো টুকরো হয়ে যায়। অবশেষে পরিখা তৈরী হয়ে গেল। এদিকে কাফিরদের সৈন্যবাহিনী এসে পৌঁছে এবং মদীনা অবরোধ করে ফেলে। প্রায় ১৫ দিন মুসলমানগণ মদীনায় অবরুদ্ধ থাকেন। এ সময় ইয়াহুদীদের অবশিষ্ট গোত্র বনু কুরায়যাও অঙ্গীকার ভঙ্গ করে কাফিরদের দলে মিশে গিয়ে তাদের শক্তি বৃদ্ধি করে।
অবরোধের ফলে মদীনায় মারাত্মক অস্থিরতা বিরাজ করতে থাকে। খাদ্যদ্রব্য হ্রাস পাওয়ায় সাহাবায়ে কিরাম ৩ দিন পর্যন্ত অভুক্ত থাকেন। একদিন ক্ষুধায় অস্থির হয়ে সাহাবিগণ পেট খুলে হযরত (সাঃ)-কে দেখালেন যে, সবাই পেটে পাথর বেঁধে রেখেছেন। হযরত (সাঃ)-স্বীয় পবিত্র পেট খুলে দেখালেন; সেখানেও দু'টি পাথর বাঁধা ছিল।
বারাআ ইবনে আযিব (রাঃ) বলেন, আহযাব যুদ্ধকালীন সময়ে রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর অবস্থা এই ছিল যে, পরিখা থেকে মাটি তুলে এখানে সেখানে সরিয়ে রাখছিলেন, দেহ মুবারক খুলি ধুসরিত হচ্ছে এবং সাথে সাথে নিম্নোক্ত কবিতাংশ পড়ছিলেনঃ "আল্লাহর শপথ। আল্লাহ্ আমাদের পথ না দেখালে আমরা সৎপথ পেতাম না, দান-খয়রাতও করতাম না, নামাযও পড়তাম না। (অতএব হে আল্লাহ্!) তুমি আমাদের উপর প্রশান্তি নাযিল কর এবং যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের অটল রাখ। যারা সীমা লংঘন করে আমাদের দিকে তেড়ে এসেছে, যখন তারা বিপর্যয় সৃষ্টির ইচ্ছা করল। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করলাম (তাদের বিফল মনোরথ করে দিলাম)।" কয়েকদিন দন ধরে পরিখা খননের কাজ চলতে থাে থাকে এবং ভাবে দুশনের এবং এভাবে নের আক্রমণ কলে ইয়াহদী থেকে হেফাজতের পূর্ণ ব্যবস্থা হয়ে গেল। কিন্তু বিশ দিন। ধরে অবরে বরোধ ধ চলতে থাকলে ও অস্থির বানু কুরায়যার চুক্তিভংগ এবং উপর্যুপুরি অবরোধের কারণে তারা বিরক্ত ও হতে থাকে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে আল্লাহর সাহায্য এলে এবং মুসলমানদের বিজয়ের কারণ সুচীত হতে লাগল। কাফেরদের বাহিনীতে নাঈম ইবনে মাসউদ নামে এক ব্যক্তি ছিল, সে তখনও মুসলমান না হলেও তার অন্তরে ইসলামের সত্য বাণী স্থান করে নিয়েছিল। ফলে সে সতর্কতার সাথে মক্কার মুশরিক মুশ ও মদীনায় ইহুদীদের মাঝে অবিশ্বাসের বীজ বপন করে দিল। এবং যুদ্ধের ব্যাপারে উভয়ের মধ্যে এমন তীব্র মতবিরোধ সৃষ্টি হল যে, একে অপরের সাথে মিলিত হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে অস্বীকার করল। এই অবস্থায় মক্কার মুশরিকরা প্রত্যাবর্তনও করতে পারেনি। এমন সময় আকস্মিক ভাবে প্রবল বায়ু বইতে শুরু করে এবং মুহূর্তের মধ্যে গোটা মুশরিক বাহিনী ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তাঁবু উড়ে চলে গেলে, চতুষ্পদ জন্তু ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে এদিক সেদিন পলায়ন করল। গোটা বাহিনীর মধ্যে বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়ল এবং শত্রুরা অবরোধ তুলে নিয়ে পালাবার রাস্তা ধরল। এভাবে আল্লাহ তাআলা মুসরমানদের দুশমনদের কবল থেকে রক্ষা করলেন।
0 Comments