নবী করীম (সাঃ)-এর ৫৩ বৎসরের জীবনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গিয়েছে যে, দুনিয়াতে কিভাবে ইসলামের প্রচার ও প্রসার সংঘটিত হয়েছে। প্রতিটি গোত্র ও দলের হাজার হাজার মানুষ, যাঁরা হিজরত পর্যন্ত ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের কেউ কেউ এরূপ আত্মহারা হয়ে যান যে, ইসলাম ও পয়গম্বর (সাঃ)-কে স্বীয় ধন-সম্পদ, বাপ-দাদা, স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি এমন কি নিজের জীবনের চেয়েও বেশী প্রিয় মনে করতেন। তাঁদের ইসলামী সমাজে প্রবেশ করার কি কারণ ছিল? সরকারী বাধ্যবাধকতা ছিল কি? অথবা ধন-সম্পদ এবং মর্যাদা ও প্রভাব-প্রতিপত্তির লোভ ছিল কি? অথবা এমন কোন জাঁকজমকপূর্ণ ঐক্য সংঘঠন কি ছিল, যার তলোয়ার তাঁদেরকে বাধ্য করেছিল? না অন্য কিছু?
কিন্তু যখন এই উম্মী নবী (সাঃ)-এর পবিত্র জীবনের উপর দৃষ্টিপাত করা হয়, তখন নিঃসন্দেহে এই সমস্তের নেতিবাচক উত্তর পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, ঐ ইয়াতীম যাঁর পিতার স্নেহচ্ছায়া দুনিয়াতে আসার পূর্বেই তাঁর মাথা হতে উঠে গিয়েছে, যার বাল্যকালের ছয় বৎসরের সময় মাতার স্নেহময়ী ক্রোড় চিরতরে শেষ হয়ে যায়, যাঁর ঘরে মাসের পর মাস অগ্নি প্রজ্বলিত করার সুযোগ আসেনি, যাঁর পরিবারবর্গ পেট ভরে কখনো রুটি খান নি, যাঁর প্রতিটি আত্মীয়-স্বজন এক কালেমা বলার কারণে শুধু বিরোধী নয়, বরঞ্চ তাঁর ভীষণ শত্রুতে পরিণত হয়; তিনি কি কারো উপর রাজত্ব কায়েমের লোভ করতে পারেন অথবা ধন-সম্পদের লোভে বা তলোয়ারের জোরে কাউকে স্বীয় চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ করতে পারেন।
এছাড়াও ইতিহাসে সর্বসম্মতভাবে রয়েছে যে, হুযুর (সাঃ)-এর পবিত্র জীবনের ৫৩ বৎসর এভাবে অতিবাহিত হয়েছে যে, প্রথম জীবনের সহায়-সম্বলহীন অবস্থার পর যখন ইসলামের প্রকাশ্য শক্তি লাভ হলো এবং বিরাট বিরাট বীর যোদ্ধা ও সম্পদশালী সাহাবী ইসলাম গ্রহণ করলেন, ঐ সময় পর্যন্ত ইসলাম কারও উপর শক্তি প্রয়োগ করেনি বরং জালিমদের জুলুমেরও কোন জওয়াব দেয়নি।
অথচ মক্কার কাফিরদের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র হযরত (সাঃ)-এর উপরই নয়, বরং তাঁর সমস্ত আত্মীয়-স্বজন ও অনুসরণকারীর উপরই এমন জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতন করা হয়, যার বর্ণনা লিপিবদ্ধই করা যায় না। শক্তিমদমত্ত ও প্রভাব-প্রতিপত্তিশালী কুরায়শ কাফিরগণ হযরত (সাঃ)-এর উপর নির্যাতন বরং হত্যা করার কোন পরিকল্পনাই বাদ দেয়নি। যেমন তিন বৎসর পর্যন্ত হযরত (সাঃ)-এর স্বীয় পরিবারবর্গসহ অবরুদ্ধ থাকা, হযরত (সাঃ)-এর সাথে কুরায়শদের সম্পর্ক ছিন্ন করা, তাঁকে হত্যা করার পরামর্শ দান, সাহাবায়ে কেরামকে বিভিন্ন প্রকার নির্যাতন করা ইত্যাদি হযরত (সাঃ) দেখেছেন।
এ সমস্ত কিছু যখন ঘটছিল, তখন কিন্তু কুরআন তার অনুসরণ কারীদেরকে ধৈর্য ধারণ ও সহ্য করে যাওয়া ছাড়া কোন অস্ত্র ব্যবহারেরই অনুমতি দেয় নি। তবে হ্যাঁ, ঐ সময় যে জিহাদের নির্দেশ ছিল, তা হলো: কাফিরদেরকে হিকমত ও উপদেশপূর্ণ কথার দ্বারা স্বীয় প্রভুর দিকে আহবান করো। যদি পারস্পরিক কথাবার্তার সুযোগ বা উপলক্ষ আসে, তাহলে সুন্দর কৌশল এবং নরম কথা দ্বারা তাদের মুকাবিলা করো। তা ছাড়া কুরআনে প্রকাশ্য দলীল-প্রমাণের মাধ্যমেই তাদের সাথে পূর্ণ-জিহাদ করো, যেন তারা সত্যকে বুঝতে পারে।
এ সময় পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন প্রকার নির্যাতনের শিকারে পরিণত হয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, তারা দুনিয়ার কোন লোভ অথবা রাষ্ট্রশক্তির জবরদস্তি বা তলোয়ারের জোরে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য হয়নি। এ প্রকাশ্য অবস্থা দেখেও কি ইসলামের সমালোচনাকারীরা আল্লাহ্ তা'আলার নিকট লজ্জা পাবে না, ইসলামের প্রকৃত বাস্তবতার উপর পর্দা আবৃত করার জন্য তারা বলে বেড়ায় যে, ইসলাম তলোয়ারের জোরে প্রচারিত ও প্রসারিত হয়েছে। তারা কি এর জওয়াব দিতে পারবে যে, ঐ সমস্ত তলোয়ার চালনাকারীদের উপর কে তলোয়ার চালিয়েছিল, যারা শুধু মুসলমানই হয়নি, বরং ইসলামের প্রয়োজনে তলোয়ার উত্তোলন এবং নিজের জীবন বিপদে ঠেলে দিতেও পিছপা হয়নি। তারা কি বলতে পারে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) হযরত উমর ফারুক (রাঃ), উসমান গনী (রাঃ) এবং হযরত আলী মুর্তাজা (রাঃ)-এর উপর কে তলোয়ার চালিয়ে তাঁদেরকে মুসলমান বানিয়েছে। হযরত আবুযর (রাঃ) ও হযরত উনায়স (রাঃ) এবং তাঁদের সন্তান সন্ততিদের কে বাধ্য করেছে যে, তাঁরা সবাই এসে ইসলাম গ্রহণ করেন? নজরানের খ্রীষ্টানদেরকে কে বাধ্য। করেছে, যারা মক্কায় এসে মুসলমান হয়ে যান? দামাদ আজদীকে কে বাধ্য করেছিল? তোফায়ল বিন আমর দুসী এবং তাঁর বংশধরদের উপর কে তলোয়ার চালিয়েছিল? বনী আবদুল আশহাল গোত্রের উপর কে চাপ সৃষ্টি করেছিল? মদীনার সমস্ত আমসারদের উপর কে শক্তি প্রয়োগ করেছিল, যারা শুধু ইসলামই গ্রহণ করেনি, বরং হযরত (সাঃ)-কে নিজেদের দেশে ডেকে এনে সমস্ত জিম্মাদারী স্বীয় মাথায় তুলে নেন এবং তাঁদের জান ও মাল হুযুর (সাঃ)-এর সমীপে উৎসর্গ করেন। বারীদা আসলামীকে কে বাধ্য করেছিল যে, সত্তর জন লোকের জামাত নিয়ে মদীনার রাস্তা অতিক্রম করে হযরত (সাঃ)-এর খিদমতে উপস্থিত হন এবং সন্তুষ্টচিত্তে উৎসাহের সাথে মুসলমান হয়ে যান। হাবশা মুলুকের বাদশা নাজ্জাশীর উপর কোন তলোয়ার চলেছিল, যার ফলে তিনি স্বীয় সাম্রাজ্য ও প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকা সত্ত্বেও হিজরতের পূর্বে মুসলমান হয়ে যান। আবু হিন্দ, তামীম, নায়ীমসহ আরো অন্যান্যের উপর কে শক্তি প্রয়োগ করেছিল যে, তাঁরা শামদেশ হতে সফর করে হযরত (সাঃ)-এর খিদমতে উপস্থিত হন এবং হুযূর (সাঃ)-এর প্রতি আনুগত্য নিবেদন করেন। এ ধরনের শত শত ঘটনা দ্বারা ইতিহাসের পাতা পূর্ণ হয়ে আছে। এটা এরূপ এক অনস্বীকার্য পর্যবেক্ষণ, যেটা দেখে প্রতিটি মানুষের এ বিশ্বাস স্থাপন ছাড়া কোন গত্যন্তর থাকে না যে, ইসলাম স্বীয় মহিমার প্রচার প্রসারে তলোয়ারের মুখাপেক্ষী নয়।
জিহাদ ফরয হওয়ার উদ্দেশ্য এই নয় যে, মানুষের ঘাড়ে তলোয়ার রেখে বলা হবে যে, . মুসলমান হয়ে যাও। অথবা তাদেরকে যে কোনভাবে হোক বাধ্য করে ইসলামের ছায়াতলে প্রবেশ করানো হবে। জিহাদের সাথে সাথে জিযিয়া ও আহকাম এবং কাফেরদেরকে জিম্মী বানিয়ে সম্পূর্ণ মুসলমানের মতোই তাদের জানমালের হিফাযত করা সম্পর্কে ইসলামী নীতি এ সাক্ষ্যই বহন করে যে, জিহাদ ফরয হওয়ার পর ইসলাম কখনও কাফেরদেরকে ইসলাম গ্রহণের জন্য বাধ্য করেনি। তাই একজন ন্যায়বান মানুষের উপর ফরয হলো এই যে, সে যেন শান্ত মনে এ বিষয়ে চিন্তা করে যে, ইসলামে জিহাদ কি উদ্দেশ্য এবং কি উপযোগিতার জন্য ফরয করা হয়েছে। এবং ঐ সময় তাকে বিশ্বাস করতে হবে, যে ধর্ম কোনরুপ জোর-জবরদস্তি ছাড়াই তাদেরকে স্বীয় সমাজে প্রবেশ করাতে সক্ষম নয়, সে ধর্মকে কোন অবস্থাতেই পূর্ণাঙ্গ মনে করা হবে না।
পৃথিবীর বুকে যখন শিরকের বিষাক্ত জীবাণু সৃষ্টি হয়েছে এবং এটা একটা রুগ্ন দেহের মত হয়ে গিয়েছে, তখন আল্লাহ্ তা'আলার রহমত তাদের জন্য একজন অস্ত্রধারী ও স্নেহপরায়ণ চিকিৎসক (হযরত (সাঃ)] -কে পাঠালেন, যিনি একাধারে ৫৩ বৎসর পর্যন্ত তাদের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও শিরা-উপশিরার সংশোধনের চেষ্টা করেন; যার ফলে সংশোধনযোগ্য অঙ্গ-সমূহ আরোগ্য লাভ করে; কিন্তু যেসব অঙ্গ সম্পূর্ণ জখম হয়েছে, সেগুলোর সংশোধন বা আরোগ্যের কোন উপায় নেই বরং বিপজ্জনক হয়েছে যে, এগুলোর জীবাণু বা পচন সমস্ত দেহেই ছড়িয়ে পড়ে। তাই হেকীমদের নীতি অনুযায়ী রহমত ও হিকমতের উপযুক্ত চাহিদাও এটাই ছিল যে, অপারেশন করে ঐ জীবাণু-যুক্ত অঙ্গটিকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া। এটাই হলো জিহাদের হাকীকত এবং এটাই সমস্ত প্রতিরোধ যুদ্ধের উদ্দেশ্য।
এ কারণেই ঘোরতর যুদ্ধের মাঠেও ইসলাম তার বিরোধীদের মধ্যে শুধু সে সমস্ত লোকদের হত্যা করার অনুমতি দিয়েছে, যাদের রোগ সংক্রামক ছিল অর্থাৎ যারা ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করে এবং যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে। তবে তাদের পরিবারভুক্ত মহিলা, শিশু এবং যে সমস্ত বৃদ্ধ ও ধর্মীয় উলামা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেনি, তারাও মুসলমানদের তলোয়ার থেকে নিরাপদ ছিল। তাছাড়া যে সমস্ত লোক কোন চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসে, তারাও মুসলমানদের হাতে নিরাপদ ছিল।
হযরত ইকরামা (রাঃ) বলেছেন, বদর যুদ্ধে হযরত (সাঃ) নির্দেশ দেন যে, যদি বনী হাশিমের কোন ব্যক্তি তোমাদের সামনে আসে, তবে তাকে হত্যা করো না। কেননা তারা সন্তুষ্টচিত্তে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেনি, বরং তাদেরকে জোরপূর্বক আনা হয়েছে।
এমন কি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগমনকারী এবং যুদ্ধে আগমনকারীদের মধ্যেও যথাসম্ভব ঐ সমস্ত লোকদেরকে রক্ষা করা হত, যাদের সম্পর্কে হুযুর (সাঃ) সচ্চরিত্রবান ও সদাচারিতার খবর পেতেন। নিম্নলিখিত ঘটনা উক্ত বক্তব্যের সপক্ষে পেশ করা যেতে পারেঃ যে সময় হযরত (সাঃ) মক্কা বিজয়ের জন্য তশরীফ নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন পথিমধ্যে এক ব্যক্তি হুযুর (সাঃ)-এর খিদমতে হাযির হলেন এবং হুযুর (সাঃ)-এর যুদ্ধের উদ্দেশ্যকে জাহিল আরবদের যুদ্ধের সাথে অনুমান করে আরয করেন, যদি আপনি সুন্দরী মহিলা ও লাল উট কামনা করেন, তাহলে বনী মোদাল্লেজ গোত্রের উপর আক্রমণ পরিচালনা করুন (কেননা তাদের এ সমস্ত সম্পদ প্রচুর আছে)। কিন্তু এখানে সন্ধি ও যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল অন্য কিছু। হুযুর (সাঃ) ইরশাদ করলেন যে, আমাকে আল্লাহ তা'আলা বনী মোদাল্লেজের উপর আক্রমণ করার ব্যাপারে এজন্য নিষেধ করেছেন যে, তারা অত্যন্ত সদাচারিতার সম্পর্ক স্থাপনকারী।
হযরত আলী (রাঃ) বলেন, একবার যুদ্ধে গ্রেফতারকৃত সাতজন বন্দীকে হুযুর (সঃ)-এর খিদমতে হাযির করা হলো। তিনি তাদেরকে হত্যার জন্য নির্দেশ দিলেন এবং হযরত আলী (রাঃ)-কে এ কাজের জন্য নির্বাচন করলেন। এমন সময় হযরত জিবরাঈল (আঃ) আগমন করে বললেন, হে আল্লাহর রসূল। এ ছয় ব্যক্তির জন্য একই নির্দেশ দিতে পারেন, কিন্তু এক ব্যক্তিকে মুক্তি দিন। হযরত (সাঃ) কারণ জিজ্ঞেস করলে জিবরাঈল (আঃ) বললেন, তিনি চরিত্রবান ও দানশীল ব্যক্তি। হুযুর (সাঃ) বললেন, এটা কি আপনি নিজ পক্ষ হতে বলছেন, না আল্লাহ্ তা'আলার নির্দেশ? হযরত জিবরাঈল (আঃ) বললেন, আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তব হলো এই যে, মানুষ অন্যের চোখের ক্ষুদ্র কণাকেও দেখে থাকে, কিন্তু স্বীয় চোখের বিরাট বস্তুটি দেখেও না দেখার ভান করে।
আকবরের ভাষায়: "স্বীয় দোষত্রুটির প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপ নেই; অন্যায়ভাবে শুধু অপরকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বলা হয় যে, তলোয়ারের দ্বারা ইসলামের প্রসার সাধিত হয়েছে; কিন্তু এটা বলা হয় না যে, বোমার দ্বারা কিসের প্রসার ঘটলো।
বস্তুত প্রতিরোধমূলক ও আক্রমণাত্মক জিহাদের উদ্দেশ্য শুধু উত্তম ও চরিত্রবান লোক সৃষ্টির প্রয়াস, ইসলামের হিফাজত করা এবং ইসলাম প্রচারের পথে যা অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা দূর করা।"
এ সমস্ত ঘটনার উপর দৃষ্টিপাত করার পর ইউরোপীয় ইতিহাসবিদগণের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ও মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায় যে, ইসলামী জিহাদের উদ্দেশ্য লোকদেরকে বাধ্যতামুলক ভাবে মুসলমান করা এবং লুটতরাজ করে জীবিকা উপার্জন করা। এভাবে ইসলামী ঐতিহ্য এবং সাহাবায়ে কিরাম-এর কার্যাবলী গ্রথিত করার পর এতেও সন্দেহ থাকে না যে, ইসলামে যেভাবে নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে প্রতিরোধমূলক জিহাদ ফরয করা হয়েছে, সেভাবে প্রতিরোধ এবং প্রচারের বাধা-বিপত্তিকে রাস্তা হতে দূর করার জন্য আক্রমণাত্মক জিহাদও কিয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত জরুরী ঘোষণা করা হয়েছে। যেভাবে প্রতিরোধমূলক জিহাদের উদ্দেশ্যও লোকদের বাধ্যতামূলক মুসলমান করা নয়, তেমনিভাবে আক্রমণাত্মক জিহাদের উদ্দেশ্য কোনভাবেই এটা হতে পারে না। বিশেষ করে যখন ইসলামের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জিহাদের বাস্তব সময়েও কাফিরদেরকে স্বীয় আশ্রয়ে নেওয়া এবং কুফরের উপর স্থায়ী থাকা সত্ত্বেও তাদের জান ও মান-সম্মানের এরূপ হিফাজত করা হয়েছে, যেমন একজন মুসলমানের হিফাজত করা হয়; সেখানে প্রতিরোধমূলক ও আক্রমণাত্মক জিহাদ উভয়ই সমান।
0 Comments