(৮) তাছীর প্রাপ্ত বা প্রভাবান্বিত হওয়াঃ যেরূপ কুরআনে পাকে বিভিন্ন আয়াত আসে, তদ্রূপ বিভিন্ন অবস্থা বা ভাব তোমার দিলে উপস্থিত হওয়া চাই। প্রত্যেক আয়াতের অর্থানুযায়ী তোমার অবস্থা বা ভাবের পরিবর্তন এবং চিন্তার উদ্রেক হওয়া উচিত। সুতরাং কালামে কুরআন দ্বারা তোমার মনে দুঃখের ভাব জাগবে, ভয় আসবে, আশার উদয় হবে ইত্যাদি। যখন তোমার মা'রেফাত পূর্ণতা লাভ করবে, আল্লাহর ভয়ও তোমার মনে তেমনই প্রাধান্য পাবে। তুমি ক্ষমা ও রহমতকে কোন শর্তের সাথে সংযুক্ত দেখতে পাবে এবং আর এক ব্যক্তি তা' পাওয়ার জন্য চেষ্টা করবে। যেমন আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি তাওবাহ করে, ঈমান আনে, নেক আমল করে এবং হেদায়েত প্রাপ্ত হয়, আমি তাকে ক্ষমা করে দেই। উক্ত ক্ষমাও আবার চারটি শর্তের উপর রেখে দেয়া হয়েছে। যথাঃ ক্ষমা সেই লোকের জন্য, যে তাওবাহ করে, ঈমান আনে, নেক আমল করে। অতঃপর হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়। আল্লাহ বলেন, 'আছরের শপথ। নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে আছে শুধু সেই লোকগণ ছাড়া, যারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে, পরস্পরকে উপদেশ দেয় এবং পরস্পরকে ধৈর্য ধারণ করতে বলে। চারটি শর্তের কথা এখানেও উল্লেখ করা হয়েছে। একটি শর্ত বহু অর্থবোধক। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত পরোপকারী লোকদের জন্যই। মনে রাখবে, এহসান বা পরোপকার সর্বগুণের সমন্বয়। এভাবে যে ব্যক্তি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থের অনুসন্ধান করে এবং সে তা' বুঝে, নিশ্চয়ই তার মনে আল্লাহর ভয় ও দুঃখ উপস্থিত হবে। এজন্যই হযরত হাসান বছরী (রহঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! যে ব্যক্তি প্রত্যুষে কুরআন পাঠ করে ও তার উপর বিশ্বাস রাখে তার দুঃখ বৃদ্ধি পায় এবং আনন্দ হ্রাস প্রাপ্ত হয়। কাজকর্ম বেড়ে যায় এবং আরাম-আয়েশ হ্রাস পেয়ে যায়। হযরত ওয়াহেব (রহঃ) বলেছেন, আমি বিভিন্ন হাদীস ও নসীহতের প্রতি লক্ষ্য করে দেখলাম যে, কুরআনে পাকের কালাম বুঝা, উপলব্ধি ও হৃদয়ঙ্গম করা ও তদ্বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা, মনকে কোমল করা এবং মনের দুঃখকে বৃদ্ধি করা বৈ আর কিছুই নয়। মোটকথা বান্দা কুরআন পাঠে এমন ভাবে তাছীর প্রাপ্ত হওয়া চাই যেন সে যা পাঠ করে তার গুণে সে গুণান্বিত হয়ে যায়। যেখানে সতর্কতার আয়াত আসে বা যেখানে ক্ষমার জন্য শর্ত সংযুক্ত থাকে সেখানে সে ভয়ে জড়সড় হয়ে যায় এবং মৃত্যুবরণে প্রস্তুত হয়ে যায়। আবার যখন রুজি বৃদ্ধি বা ক্ষমার ওয়াদার আয়াত পাঠ করা হয় তখন সে এমন ভাবে আনন্দিত হয়, যেন সে আনন্দে শূন্যে উড়ে চলে। যখন আল্লাহর যিকির তাঁর গুণাগুণ এবং তাঁর নাম সম্পর্কিত আয়াত পড়া হয় তখন তাঁর গৌরবের কাছে পাঠকের মস্তক নত হয়ে যায় এবং সে তাঁর মহত্ত্ব ঘোষণা শুরু করে দেয়। যেখানে কাফিরদের কথা উল্লেখ করা হয় সেখানে তাদের যেরূপ স্ত্রীপুত্র আছে তদ্রূপ আল্লাহ তায়ালারও স্ত্রীপুত্র আছে বলে কাফিরগণ যে মত পোষণ করে সেখানে সে তাদের এ মন্দ মত পোষণের জন্য লজ্জা অনুভব করে। যখন কালামে কুরআনে দোযখের কথা বর্ণনা করা হয়, সে তার ভয়ে নিজ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জড়সড় করে। যখন বেহেশতের কথা বর্ণনা করা হয়, তখন মনে মনে তার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। যখন হযরত রাসূলে করীম (দঃ) হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) কে বললেন, আমাকে কুরআন পড়ে শুনাও, তিনি বলেন যে, তখন আমি সূরা নিসা পাঠ করতে শুরু করলাম, আমি যখন ঐ আয়াত পর্যন্ত পৌছলাম যে, 'তখন কিরূপ হবে যখন আমি প্রত্যেক উম্মতকে একজন সাক্ষীসহ উপস্থিত করব? তোমাকে তাদের উপর সাক্ষীরূপে আনব। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, তখন আমি দেখলাম যে, হুযুরে পাক (দঃ)এর দু' নয়ন থেকে অশ্রুধারা প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আমাকে বললেন, এখন এ পর্যন্তই রেখে দাও। তাঁর তখনকার অবস্থা দেখে আমার সমস্ত হৃদয় ভয় ও ভীতিতে আচ্ছন্ন হয়ে গেল। এক সময় এমন অবস্থা ছিল যে, খোদাভীরু লোকদের ভিতর সতর্কতার আয়াতগুলো পাঠ করলে তারা বেহুঁশ হয়ে' পড়তেন। এমনকি কেউ কেউ এরূপ কোন আয়াত শুনে মৃত্যুবরণ পর্যন্ত করত। ফলকথা এই যে, এই প্রকার অবস্থায় কুরআন পাঠকারী তার কালামের বর্ণনা থেকে বের হয়ে যায়। যখন সে পাঠ করে যদি আমি আমার প্রভুর অবাধ্য হই, আমি সেই প্রলয় দিনের শাস্তির ভয় করি' তখন যদি তার মনে ভয় না আসে সে শুধু মুখে বর্ণনা করে যখন সে পাঠ করে, তোমারই উপর আমি নির্ভর করি এবং তোমারই দিকে আমি ফিরে যাই আর তোমারই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন' তখন যদি ব্যস্তবে তার নির্ভরতা এবং প্রত্যাবর্তনের অবস্থা না হয় সে শুধু তা' বর্ণনা করে মাত্র। যখন সে পাঠ করে 'তারা আমাদেরকে যে কষ্ট দেয় তাতে নিশ্চয়ই ধৈর্য ধারণ করব।' যদি তার এসকল গুণ না থাকে এবং মন এই অবস্থাসমূহের মধ্যে ঘুরাফিরা না করে, তবে তার তিলাওয়াত শুধু সুমধুর স্বরসহ রসনার নড়া-চড়াতেই পর্যবসিত হয়। এজন্যই আল্লাহ বলেন, সতর্ক হও, অত্যাচারীদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত। আল্লাহ বলেন, তোমরা যা কর না। তা' বলা আল্লাহর নিকট বড়ই ঘৃণ্যর ব্যাপার। আল্লাহ বলেন, তারা গাফলতির ভিতর ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যারা আমার স্মরণ থেকে ফিরে যায়, তোমরা তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও। তাদের পার্থিব জীবন ছাড়া আর কিছুই কাম্য নয়। আল্লাহ বলেন, যারা তাওবাহ করে না, তারাই অত্যাচারী। এরূপ আরও অন্যান্য আয়াত রয়েছে। আল্লাহর এই আয়াতের অর্থ তার মধ্যে রয়েছে। 'তাদের ভিতর উম্মি বা নিরক্ষর আছে। তারা অনুমান ব্যতীত (অর্থাৎ শুধু তিলাওয়াত ছাড়া) কুরআনে পাকের অন্য কিছুই অবগত নয়। আল্লাহ বলেন, আসমান ও যমিনে কত নিদর্শন রয়েছে যার নিকট দিয়ে তারা চলে যায় কিন্তু তা' থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে থাকে। আসমান ও যমিনের নিদর্শনসমূহের পূর্ণ ব্যাখ্যা কুরআন মজীদে রয়েছে। যখন তিলাওয়াতকারী তা' পাঠ করে যায় এবং তাতে সে প্রভাবিত না হয়ে তা' থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে। তজ্জন্যই কেউ বলেছেন যে, যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করেও কুরআনের গুণে চরিত্রকে গুণান্বিত না করে, আল্লাহ তায়ালা তাকে লক্ষ্য করে বলেন, আমার কালামের সঙ্গে তোমার কি সম্পর্ক? তুমি যে আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছ? যদি তুমি আমার নিকট তাওবাহ না কর, তবে আমার কালামকে ত্যাগ কর। যে গুনাহগার বার বার কুরআন পড়ে, সে সেই ব্যক্তির ন্যায়, যে বাদশাহর পত্র প্রত্যেক দিন বার বার পাঠ করে। সেই পত্রে তার প্রতি রাজ্যের হিত সাধনের নির্দেশ রয়েছে অথচ সে নিজেই তার অহিত সাধনে ব্যস্ত থাকে। সে শুধু বাদশাহর পত্র পড়াকেই যথেষ্ট মনে করে। যদি সে পত্র পাঠ না করে এবং বাদশাহর নির্দেশ বিরোধী কাজ করে, তাহলে বাদশাহর নির্দেশকে অবজ্ঞা করা হয় এবং সে তার ক্রোধভাজন হয়। এজন্যই হযরত ইউসুফ বিন আছবাত (রহঃ) বলেছেন, আমি কুরআন পাঠের ইচ্ছা করি, যখন তার বিষয়বস্তুকে স্মরণ করি। তখন আমি আল্লাহর ক্রোধের ভয় করি এবং কুরআন পাঠ ত্যাগ করে তাসবীহ ও ইস্তেগফারের দিকে মনোনিবেশ করি। যে ব্যক্তি কুরআনের নির্দেশের বিরোধিতা করে, সে নিম্নোক্ত আয়াত অনুযায়ী দোষী। আয়াতটি হল, "ফানাবায়ুহু ওয়ারায়। জুহুরিহিম অশতারূ বিহী ছামানান জ্বালীলা ফাবি'সা মা ইয়াশতাকুন অর্থাৎ তারা তাকে তাদের পশ্চাতে নিক্ষেপ করে এবং তদপরিবর্তে অল্প মূল্যে ক্রয় করে। আহা! তারা যা ক্রয় করে তা' কত মন্দ। এই কারণেই হযরত রাসূলে করীম (দঃ) এরশাদ করেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কুরআন পাঠে তোমাদের মনোযোগ থাকে এবং তোমাদের শরীরের চামড়া ঠিক থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত কুরআন পাঠ কর। যখন এই অবস্থা না থাকে, তখন তা' হতে উঠে পড়। আল্লাহ বলেন, যখন তাদের নিকট আল্লাহকে স্মরণ করা হয়, তাদের হৃদয় কোমল হয় এবং যখন তাঁর আয়াত তাদের নিকট পাঠ করা হয়, তাদের ঈমান বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। তারা তাদের প্রভুর প্রতি নির্ভর করে। হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, কুরআনে পাকের ক্ষেত্রে সর্বাধিক সুন্দর স্বরবিশিষ্ট লোক সেই ব্যক্তি, যে যখন কুরআন পাঠ শুনে, সে তখন আল্লাহকে ভয় করে। হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, খোদাভীরু লোকের নিকট হতে কুরআন যেরূপ উত্তম শুনা যায়, তদ্রূপ অন্য কারও নিকট হতে শুনা যায় না। মনের উপর আয়াতের অর্থানুরূপ অবস্থা হবে এবং তদনুযায়ী আমল হবে এই উদ্দেশ্যেই কুরআন পাঠ করা হয়। অন্যথায় শুধু অক্ষর দ্বারা তা' জিহব। সঞ্চালনেই পর্যবসিত হয়। কোন এক ক্বারী বলেছেন, আমি আমার ওস্তাদকে কুরআন পাঠ করে শুনালাম। তারপর তাকে তা' দ্বিতীয় বারও শুনালাম। তারপর সে আমাকে সতর্ক করে বলল, আমার সামনে কুরআন মজীদ পড়ার কাজটি নির্দিষ্ট করে লয়েছ। যাও এবার তা' আল্লাহর নিকট পড়ে শুনাও। আর লক্ষ্য কর, তিনি তোমাকে কি আদেশ করেন এবং নিষেধ করেন। সর্বাবস্থায় এবং সর্ব আমলে এই-ই ছাহাবীদের রীতি ছিল। যখন হুযুরে পাক (দঃ) ইন্তেকাল করলেন, তখন তিনি মোট বিশ হাজার ছাহাবী রেখে গেলেন। তন্মধ্যে মাত্র ছয়জন ছাহাবী সমস্ত কুরআনের হাফিজ ছিলেন। তার মধ্যেও দুজন সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। অধিকাংশ ছাহবীরই মাত্র একটি কি দুটি সূরা মুখস্থ ছিল। যারা সূরা বাকারাহ ও সূরা 'আনআম মুখস্থ করে রেখেছিলেন, তারা তাদের মধ্যে আলিমরূপে গণ্য ছিলেন। হুযুরে পাক (দঃ) এর যমানায় একবার একজন ছাহাবী কুরআন শিক্ষার জন্য এলেন এবং এই আয়াত পর্যন্ত শিখলেন, যে ব্যক্তি অনুপরিমাণ নেক আমল করবে সে তা' দেখতে পাবে এবং যে ব্যক্তি অনুপরিমাণ অসৎ কার্য করবে সে তাও দেখতে পাবে। যেমন কুরআনে পাকে এরশাদ হয়েছে, ফামাই ইয়া'মাল মিছজ্বালা যাররাতিন খাইরাইইয়ারাহ অমাই ইয়া'মাল মিছক্কালা যাররাতিন শাররাই ইয়ারাহ। উক্ত ছাহাবী বললেন, আমার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। অতঃপর তিনি চলে গেলেন। তখন হযুরে পাক (দঃ) বললেন, যে লোকটি চলে গেল সে ফকীহ। এভাবে সে আল্লাহর নিকট সম্মানিত হয়, যে ভাবে তিনি ঈমানদারের মনে ঈমানকে অনুধাবন করার পর করুণা বর্ষণ করেন। আসলেই তাঁরা শুধু জিহ্বা চালনা খুব কমই করতেন। কেননা, আমল ব্যতিরেকে জিহ্বাহর দ্বারা কুরআন পাঠকারী আল্লাহ তায়ালার নিম্নোক্ত আয়াত অনুযায়ী তিরস্কারের যোগ্য। আয়াতটি হল, "যে আমার স্মরণ হতে বিমুখ হয়, তার জন্য সংকীর্ণ জীবিকা রয়েছে। আর রোজ কিয়ামতে তাকে অন্ধরূপে উত্থিত করা হবে"। নিম্নোক্ত আয়াতটিও তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। যথাঃ এরূপে আমার আয়াত তোমার নিকট এসেছিল। কিন্তু তুমি তা' ভুলে গিয়েছিলে। একইভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হবে। অর্থাৎ তোমার উপর প্রদত্ত এই আয়াত তুমি বর্জন করেছ। তদ্বিষয়ে কোন চিন্তা কর নি। তার কোন পরোয়াই কর নি। কেননা, যে ব্যক্তি কোন কাজ সংক্ষেপ করে, তাকে বলা যেতে পারে যে, সে কাজাটি খুলে গেছে এবং সে যথোপযুক্ত ভাবে তা' পাঠ করে নি। অর্থাৎ সে জিরো, বৃদ্ধি এবং মনোযোগ সহকারে কুরআন পাঠ করে নি। অক্ষর শুদ্ধ করে পাঠ করা জিহবার কার্য। বাক্যের ব্যাখ্যা করা বুদ্ধির কার্য। আর সাকোর নির্দেশ মানা এবং তা' গৃহীত হওয়ার জন্য আশা পোষণ করা মনের কার্য। অর্থাৎ রসনা উপদেশ দান করে, বুদ্ধি অর্থ ও ব্যাখ্যা করে এবং মন উপদেশ গ্রহণ করে।
- Home-icon
- কুরআন
- Islamik Video
- ইসলামিক গজল
- হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জীবনী
- _ইসলামে সাহাবী দের অবদান
- _মেরাজের ইতিহাস
- _নবীদের ইতিহাস
- _আল্লাহর অলীদের জীবনী
- ইসলামের স্তম্ভ
- _কলেমা /ইমান
- _নামাজ
- _রোজা
- _যাকাত
- _হজ
- বিবাহ
- অন্যান্য
- _আদেশ এবং নিশেধ
- _কুরবানী
- _কলবের পরিচয়
- _মৃত্যু ও তার পরের জীবন
- _জিহ্বার উপকার ও অপকার,
- _আশুরা
- _ইসলামে নারীর পর্দা
- _কেয়ামতের আলামত
- _আল্লাহর সৃষ্টিতত্ত্ব
0 Comments