বড়কে সম্মান করবে এবং ছোটকে স্নেহ করবে

         (৭) তুমি সবার সাথে উত্তম ব্যবহার করবে এবং যার যার বুদ্ধি ও জ্ঞান অনুসারে তার সাথে কথা বলবে। যদি তুমি কোন মূর্খ লোকের সাথে কোন জ্ঞান-বুদ্ধিসুলভ আলোচনা করতে যাও কোন নিরক্ষরের সাথে ফিকাহ শাস্ত্রের কোন জটিল বিষয় নিয়ে আলাপ করতে যাও বা কোন নির্বোধের সাথে সূক্ষ্ম বিষয় নিয়ে তর্ক করতে যাও, তাহলে যেমন তুমি নিজেও কষ্ট পাবে অন্যকেও কষ্ট দেবে।

        (৮) তুমি জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে সম্মান করবে এবং কনিষ্ঠকে স্নেহ করবে। হযরত রাসূলে করীম (দঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার কনিষ্ঠকে স্নেহ করে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়। তিনি আরও বলেছেন, বৃদ্ধ মুসলমানকে সম্মান করলে আল্লাহতায়ালাকে সম্মান করা হয়। বয়োজ্যেষ্ঠ বা বৃদ্ধ লোকের অনুমতি ব্যতিরেকে তার দলের অন্য কোন লোকের সাথে কোন বিষয়ে আলোচনা করলে ঐ বয়োজ্যেষ্ঠ বা বৃদ্ধ লোকের সম্মানকে খর্ব করা হয়। হযরত জাবের (রাঃ) বলেছেন, একদা জুহাইনা সম্প্রদায়ের একটি প্রতিনিধি দল হুযুরে পাক (দঃ) এর দরবারে আগমন করালে তন্মধ্য থেকে একটি যুবক দাঁড়িয়ে দলটির মুখপাত্র হিসেবে কথা বলতে শুরু করলে হুযুরে পাক (দঃ) তাকে বললেন, তুমি থাম। 'তোমাদের বয়োবৃদ্ধ লোকেরা কোথায়? হাদীস শরীফে আছে, এমন কোন যুবক নেই যে, সে বৃদ্ধ লোককে সম্মান করলে বৃদ্ধ বয়সে সে অন্য লোক থেকে সম্মান পাবে না। হাদীসটির মর্মে একটি সূক্ষ্ম শুভ ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, যে যুবক বৃদ্ধ লোকের সম্মান করে সে বৃদ্ধ না হয়ে মারা যাবে না। সুতরাং এ হাদীসের ইঙ্গিত অনুযায়ী অবশ্যই যুবকদের যে কোন বৃদ্ধ লোকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা চাই।

        হুযুরে পাক (দঃ) এরশাদ করেছেন, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত না সন্তানগণ পিতা- মাতার প্রতি ক্রোধান্বিত হবে। অত্যধিক পরিমাণে বৃষ্টিপাত হবে। কখনও কখনও প্রস্তর বৃষ্টি হবে। সর্বস্থান থেকে ধিকৃত ও নিন্দিত লোকগণ প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসবে এবং সম্মানিত ব্যক্তিগণ লোকসমাজ থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। কনিষ্ঠ ও অল্পবয়স্ক লোকগণ বয়োজ্যেষ্ঠ এবং বৃদ্ধ লোকদের সাথে বেয়াদবীমূলক কার্য-কলাপ শুরু করবে।

        তুমি হযরত রাসূলে করীম (দঃ)এর স্বভাবের অনুসরণ করে অল্পবয়স্ক বালক-বালিকা ও শিশু সন্তানদেরকে ভালবাসবে এবং তাদের প্রতি স্নেহ বাৎসল্য প্রদর্শন করবে। হুযুরে পাক (দঃ) যখন কোন সফর থেকে ফিরে আসতেন অল্পবয়স্ক বালক-বালিকারা তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে ছুটে আসত। অমনি তিনি তাদের জন্য দাঁড়িয়ে যেতেন। অতঃপর তাঁর নির্দেশে বালক বালিকাগুলোকে তাঁর কাছে নিয়ে আসা হত। তিনি তখন তাদের কাউকে বা নিজের সামনে বসিয়ে দিতেন। আবার কাউকে বা তাঁর পিছনে। এরপর তার। নিজেদের মধ্যে এভাবে বলাবলি করত যে. আমাদের নবী আমাকে তাঁর সামনে বসিয়েছেন এবং তোমাকে তিনি তাঁর পিছনে বসিয়েছেন। ছোট ছোট শিশু সন্তানদেরকে দোয়ার জন্য এবং নাম রাখার জন্য তাঁর নিকট নিয়ে আসা হত। তিনি তাদের প্রত্যেককেই নিজের কোলে তুলে নিতেন। তখনও কখনও বা কোন কোন শিশু তাঁর কোলে পেশাব করত। লোকগণ তা' দেখে শোরগোল করে উঠত। তাতে তিনি বলতেন, তোমরা এভাবে শোরগোল করে ওর পেশাব বন্ধ করে দিও না। তাঁকে এভাবেই পেশাব করতে দাও। তার পেশাব করা হয়ে গেলে তিনি ঐ শিশুকে দোয়া করে দিতেন আর তাঁর সুন্দর দেখে একটি নাম রেখে দিতেন। ঐ শিশুর অভিভাবকগণ উপস্থিত থাকাকালে তিনি নিজের পেশাবসিক্ত কাপড় ধৌত করতেন না। কেননা তাতে তাদের লজ্জা বৃদ্ধি পেতে পারে, বরং তারা চলে যাবার পর তিনি সে কাপড় ধৌত করতেন।

Post a Comment

0 Comments