সূরা ফাতিহার মাধ্যমে বান্দাগণ মহান আল্লাহকে অভিনন্দন-পত্র দিয়ে থাকে। আল্লাহকে দেয়া অভিনন্দন-পত্রের ধরন কেমন হবে, কি হবে তার ভাষা এবং কোন পদ্ধতিতে তা পেশ করতে হবে, তা মানুষ জানে না। এ জন্য আল্লাহ তা'য়ালা এই অভিনন্দন-পত্র অনুগ্রহ করে তাঁর নবীর মাধ্যমে বান্দাদের কাছে প্রেরণ করেছেন, তিনিই শিখিয়েছেন অভিনন্দন-পত্রের ভাষা। প্রথমেই বলা হয়েছে-সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য-যিনি সৃষ্টি জগতসমূহের রব্ব।
সমস্ত প্রশংসা করতে হবে একমাত্র আল্লাহর-কেন তাঁর প্রশংসা করতে হবে এবং অন্য কারো প্রশংসা করা যাবে না? এ প্রশ্ন কারো মনে উদয় যেন না হয়, এ জন্য সাথে সাথে বলা হয়েছে, 'একমাত্র প্রশংসা আল্লাহর করতে হবে এ কারণে যে, তিনি জগতসমূহের রব্ব'। মানুষের মধ্যে অত্যন্ত ব্যাপকভাবে এ ধারণার প্রচলন ঘটানো হয়েছে যে, আরবী 'রব্ব' শব্দের অর্থ হলো প্রতিপালক। প্রকৃতপক্ষে রব্ব শব্দের অর্থ ব্যাপক। এই ব্যাপক অর্থেই আল্লাহর কোরআনে রব্ব শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। আল্লাহর কোরআনে রব্ব শাসক অর্থে, উপাস্য অর্থে, মালিক অর্থে, প্রতিপালক অর্থে, আইনদাতা অর্থে, আইন রচিয়তা অর্থে, আইন প্রয়োগকারী অর্থে, ব্যবস্থাপক অর্থে অর্থাৎ এ ধরনের নানা অর্থে রব্ব শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এক কথায় রব্ব-এর অর্থ হলো, 'যার যখন যে জিনিসের যতটুকু প্রয়োজন, তাকে তখন সেই জিনিস ফরিয়াদ করার পূর্বে যিনি পৌঁছে দেন, তাঁর নামই হলো রব্ব।'
এই রব্ব যিনি হবেন, তাঁর ভেতরে রবুবিয়াতের গুণাবলী বিদ্যমান থাকতে হবে। এই গুণাবলী একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আর কারো মধ্যে নেই। তিনিই রব্ব যিনি সৃষ্টি করেই তাঁর দায়িত্বের ইতি-কর্তব্য ঘটান না, বরং সৃষ্টিকে তিনি পূর্ণতায় পৌঁছে দেন। মানুষের সৃষ্টি প্রসঙ্গে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে দেখা যাবে যে, এই মানুষের কোন অস্তিত্বই ছিল না। মহান আল্লাহ বলেন-
أَيَحْسَبُ الْإِنْسَانُ أَنْ يُتْرَكَ سُدًى
মানুষ কি সেই সামান্যতম শূক্র ছিল না, যা সজোরে নির্গত হয়েছিল। (সূরা কিয়ামাহ্-৩৭) পক্ষান্তরে মানব দেহে এই শূক্র এলো কোত্থেকে? পৃথিবীতে আমরা যা কিছুই দেখি, এসবের মূল উপাদান হলো মাটি। মাটি থেকেই সমস্ত কিছু সৃষ্টি হয়েছে। বিশাল আকাশের শূন্যগর্ভে যে উড়োজাহাজ চলাচল করে, তা যে উপকরণ দিয়ে নির্মিত হয়েছে, নির্মাণকালে যেসব বস্তু ব্যবহৃত হয়েছে, সেসব বস্তুর মূল উপাদান মাটি থেকে উৎপাদিত হয়েছে। যেমন লৌহ, তামা, দস্তা, পিতল, স্বর্ণ, কয়লা ইত্যাদির খনি মৃত্তিকা অভ্যন্তরেই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ক্রমশ অস্তিত্ব লাভ করে। কাঠ সংগৃহিত হয় গাছ থেকে। গাছ উৎপন্ন হচ্ছে মাটি থেকে। পৃথিবীতে আমরা যা কিছুই দেখছি, তা মৃত্তিকা থেকে উৎপন্ন জাতবস্তু আল্লাহর দেয়া জ্ঞান প্রয়োগে পরিবর্তন করে মানুষ নবতর আবিষ্কার করেছে। সুতরাং, মানুষ মাটি থেকে উৎপন্ন খাদ্য আহার করে। দেহ এবং দেহের অভ্যন্তরে যা কিছু আছে, তা গঠিত হয় গ্রহণকৃত খাদ্যের সার নির্যাস থেকে। মানুষের দেহ থেকেই শূক্র নির্গত হয়, অতএব শূক্রের মূল উপাদান হলো মাটি। এ জন্যেই বলা হয় মানুষ সৃষ্টি হয়েছে মাটি থেকে।
মানুষের দেহ গঠনের দিকে দৃষ্টিপাত করলে বিস্ময়ের ধাক্কায় হতবাক হয়ে যেতে হয়। অসংখ্য কোষ (Cell) দিয়ে মানব দেহ গঠিত করেছেন আল্লাহ-যিনি হলেন রব্ব। লক্ষ লক্ষ কোষের মাধ্যমে গঠিত মানুষের দেহসৃষ্টি নৈপুন্যতায় এক অদ্ভূত জটিল সৃষ্টি। বিশাল একটি ইমারত যেমন একটির পর একটি ইট পাথর সাজিয়ে নির্মাণ করা হয়, তদ্রুপ মানুষের দেহে কোষের পর কোষ বিন্যাসের মাধ্যমে মানুষের দেহ কাঠামোটি গড়ে তুলেছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। এই অসংখ্য কোষ সর্বপ্রথমে বিস্তৃতি লাভ করেছে একটি মাত্র কোষ থেকে। সূচনায় যা ছিল একটি পুরুষ প্রজনন কোষ যাকে বলা হয়েছে শুক্রাণু (Spermatozoon) এবং আরেকটি স্ত্রী প্রজনন কোষ যাকে বলা হয়েছে ডিম্বাণু (Ovum)। এই দুটো কোষের মিলিত হওয়াকে বলা হয়েছে নিষেক (Fertilization)। এ দুটো কোষ মিলিত হয়ে যে কোষটি উৎপন্ন হয়েছে তাকে বলা হয়েছে জাইগোট (Zygote)। বিভাজনের মাধ্যমে এই জাইগোট মহান আল্লাহর নির্দেশে ক্রমশঃ মাতৃগর্ভে বৃদ্ধি লাভ করতে থাকে। মাতৃগর্ভের যে স্থানটির নাম জরায়ু (Uterus) সেখানে তা স্থানান্তরিত হয়ে যায় এবং এটাকেই বলা হয়ে থাকে ভ্রূণ (Embryo)। এই কাজটি যিনি করেন তিনিই হলেন রব্ব। আল্লাহ বলেন-
ياتِهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَكُمْ منْ نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيرًا وَنِسَاءً
হে জনগণ! তোমাদের রব্বকে ভয় করো যিনি তোমাদেরকে একটি প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন, তা থেকেই তোমাদের জুটি নির্বাচিত করেছেন এবং এই উভয় থেকে অসংখ্য পুরুষ ও নারীকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন। (সূরা আন নিছা-১)
মাতৃগর্ভে আল্লাহর ব্যবস্থাপনায় ভ্রূণ বৃদ্ধি লাভ করতে থাকে। এভাবে প্রায় চল্লিশ সপ্তাহ অর্থাৎ দুই শত আশি দিন বা আরো কিছু কম সময়ের ব্যবধানে অপূর্ব সুন্দর মানব শিশু এই পৃথিবীতে আগমন করে। রব্বুল আলামীন বলেন-
خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ نُّطْفَةٍ
তিনি মানুষকে এক ক্ষুদ্র বিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা আন নাহল-৪)
এই আয়াতে 'নুৎফা' শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এই শব্দটির অনেক ধরনের অর্থ হতে পারে যা যথাস্থানে প্রযোজ্য। কিন্তু সাধারণতঃ নুৎফা শব্দ দ্বারা শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুকে বোঝানো হয়েছে। মহান আল্লাহর নির্দেশে যে সমস্ত কোষ একটির পর আরেকটি সজ্জিত হয়ে মানব দেহ গঠিত হয়, তার ভেতরে নানা ধরনের জৈব পদার্থ বিদ্যমান থাকে। এসব পদার্থকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে এবং তার একটিকে বলা হয়েছে সাইটোপ্লাজম ও অপরটিকে নিউক্লিয়াস। এই নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্থান করছে DNA (Deoxyribonucleic Acid)। মূলতঃ এ জিনিসটিই হচ্ছে প্রাণীজগতের বংশগতির ধারক-বাহক। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রতিটি প্রাণীর ডিএনএ-কে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দান করেছেন ফলে একটি প্রাণীর গর্ভ থেকে ভিন্ন প্রজাতির আরেকটি প্রাণী জন্মগ্রহণ করে না। নারী দেহের একটি ডিম্বাণুর মধ্যে পুরুষ দেহের একটি শুক্রাণু প্রবেশ করে নিষেক ঘটাতে সক্ষম হলেই ভ্রূণ সৃষ্টি হয়। এরপর এই ভ্রূণ নানা স্তর অতিক্রম করতে থাকে। আর এগুলো যিনি সুনিপুন দক্ষতার সাথে সম্পাদিত করেন, তিনিই হলেন আমাদের রব্ব। আল্লাহ বলেন-
وَقَدْ خَلَقَكُمْ أطوارا -
তিনি তোমাদেরকে বিভিন্ন পর্যায়ে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা নূহ-১৪)
মানুষ মাতৃগর্ভে কিভাবে অবস্থান করে এবং কয়টি পর্যায় অতিক্রম করে এই পৃথিবীতে আসে, বিষয়টি আল্লাহ তা'য়ালা পবিত্র কোরআনে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন-
يَخْلُقُكُمْ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ خَلْقًا مِّنْ بَعْدِ خَلْقٍ فِي ظُلُمَاتٍ ثلث - ذَالِكُمُ اللَّهُ رَبَّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ
তিনিই মাতৃগর্ভে তিন তিনটি অন্ধকারময় আবরণের মধ্যে তোমাদেরকে একের পর এক সজ্জিত করেছেন। তিনিই আল্লাহ-যিনি তোমাদের রব্ব। প্রভুত্ব-সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাঁরই, তিনি ব্যতীত দাসত্ব লাভের অধিকারী কেউ নেই। (সূরা যুমার-৬)
তিনটি অন্ধকারাচ্ছন্ন স্তর অতিক্রম করে এই মানুষকে মাতৃগর্ভ থেকে পৃথিবীতে নিয়ে আসা হয়েছে। আধুনিক ভ্রূণ তত্ত্ববিদগণ মাতৃগর্ভে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে ভ্রূণ বিকাশের স্তরগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন যে, যে তিনটি স্তরের কথা কোরআন বলেছে, তার প্রতিটি স্তর তিনটি পর্দা দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়েছে। এসব পর্দা মানব শিশুকে দেহ সম্পর্কিত নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে। এই বিস্ময়কর ব্যবস্থা যিনি সুচারুরূপে সম্পাদন করছেন, তিনিই হলেন রব্ব। বর্তমান মেডিকেল সাইন্স এই তিনটি অন্ধকারাচ্ছন্ন আবরণকে বলেছে, জাইগোট, ব্লাস্টোসিষ্ট ও ফিটাস (Zygote. Blastocyst. Foetus)। বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুসারে প্রতিটি মানুষের দেহে যে কোষ রয়েছে, তার ভেতরে তেইশ জোড়া বা ছয়চল্লিশটি ক্রোমোজোম (Chromosome) বিদ্যমান। মানব শিশুর সূচনায় দেহ কোষে তেইশটি ক্রোমোজোম সরবরাহ হয় পিতার শুক্রাণু থেকে এবং আরো তেইশটি ক্রোমোজোম সরবরাহ করে মায়ের ডিম্বাণু। এই ছয়চল্লিশটি ক্রোমোজোমের মধ্যে তেইশটিকে বলা হয় দেহ ক্রোমোজোম (Autosome)। দেহ ক্রোমোজোমের মধ্যে বাইশ জোড়া ক্রোমোজোমের আকার ও কর্ম সম্পাদন করার ক্ষমতা এক ও অভিন্ন। এই এক ও অভিন্ন ক্রোমোজোম মানব শিশুর দেহ সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
তারপর আরো যে তেইশ জোড়া ক্রোমোজোম অবশিষ্ট থাকে তাকে বলা হয় লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোম (Sex chromosome), এগুলো মানব শিশুর যৌন বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ পুরষ হবে না নারী হবে-তা নিয়ন্ত্রণ করে। এই তেইশটি ক্রোমোজোমকে দুইভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এর একটি হলো মেইল ক্রোমোজোম (Male chromosome) ও অপরটি হলো ফিমেইল ক্রোমোজোম (Female chromosome)। বিজ্ঞানীগণ মেইল ক্রোমোজোমের পরিচিতি তুলে ধরেছেন ইংরেজী অক্ষরের ওয়াই (Y) অক্ষর দিয়ে এবং ফিমেইল ক্রোমোজোমের পরিচয় দিয়েছেন ইংরেজী অক্ষরের এক্স (X) অক্ষর দিয়ে। অর্থাৎ নারীর যৌন ক্রোমোজোমের সাংকেতিক চিহ্ন হলো দুটো এক্স (XX)। পক্ষান্তরে পুরুষের যৌন ক্রোমোজোমের জোড়ায় একটি এক্স ও অন্যটি ওয়াই বিদ্যমান রয়েছে (XY)। এভাবে পুরুষের যৌন ক্রোমোজোমের পরিচিতি দেয়া হয়েছে একটি এক্স ও একটি ওয়াই দিয়ে। এই যৌন ক্রোমোজোমের কারণেই পুরুষ ও নারীর মধ্যে দেহগত বাহ্যিক আকৃতি-বৈশিষ্ট্য এবং শরীরের অভ্যন্তরীস্থ পার্থক্য নির্দেশ করা হয়েছে। এই অকল্পনীয় জটিল বিষয়টি যিনি সুনিপুনভাবে সম্পাদন করেছেন, তিনিই হলেন রাব্বুল আলামীন। আল্লাহ বলেন-
وَاللهُ خَلَقَكُمْ مِّنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُّطْفَةٍ ثُمَّ جَعَلَكُمْ أَزْوَاجًا وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أُنْثَى وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلْمِهِ
আল্লাহ তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর শুক্রকীট থেকে। এরপর তোমাদেরকে জোড়ায় পরিণত করা হয়েছে। কোন নারী গর্ভবতী হয়না, না সন্তান প্রসব করে-এসব কিছু রয়েছে আল্লাহর জ্ঞানের নিয়ন্ত্রণে। (সূরা ফাতির-১১)
এভাবে জোড়া সৃষ্টি বা ক্রোমোজম সংক্রান্ত বিষয় অত্যন্ত রহস্যময়। কিভাবে এটা সংঘটিত হয়, তা বিজ্ঞানীদের কাছে এক চরম বিস্ময়কর বিষয়। সমস্ত সৃষ্টি জগতসমূহের রব্ব মহান আল্লাহ বলেন-
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ مِنْ سُللَةٍ مِنْ طِينٍ ثُمَّ جَعَلْنَهُ نُطْفَةً فِي قرارٍ مُكِيْنٍ ثُمَّ خَلَقْنَا النُّطْفَةَ عَلَقَةً فَخَلَقْنَا الْعَلَقَةَ مُضْغَةً فَخَلَقْنَا الْمُضْغَةَ عِظَمًا فَكَسَوْنَا الْعِظَمَ لَحْمًا ثُمَّ أَنْشَأْنَهُ خَلْقًا أَخَرَ - فَتَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ
আমি মানুষকে মাটির সার নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি। তারপর তাকে একটি সুসংরক্ষিত স্থানে টকে পড়া ফোঁটায় পরিবর্তিত করেছি। এরপর সেই ফোঁটাকে জমাট রক্তপিন্ডে পরিণত করেছি। তারপর সেই রক্তপিন্ডকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি। এরপর মাংসপিন্ডে অস্থি-পঞ্জর স্থাপন করেছি। তারপর অস্থি-পঞ্জরকে ঢেকে দিয়েছি গোস্ত দিয়ে। তারপর তাকে দাঁড় করেছি স্বতন্ত্র একটি সৃষ্টি হিসাবে। সুতরাং আল্লাহ বড়ই বরকত সম্পন্ন, সমস্ত শিল্পীর চেয়ে সর্বোত্তম শিল্পী তিনি। (সূরা আল মু'মিনূন-১২-১৪)
উল্লেখিত আয়াতে 'সুলালাতিম মিন তিন' শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ হলো মাটির সার-নির্যাস। মাটি যেসব উপাদানে গঠিত তাহলো, ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ অক্সিজেন, ২৭ শতাংশ সিলিকন, ৮ দশমিক ১ শতাংশ এ্যালুমিনিয়াম, ৫ শতাংশ লোহা, ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ক্যালশিয়াম, ২ দশমিক ৮ শতাংশ সোডিয়াম, ২ দশমিক ৬ শতাংশ পটাশিয়াম, ২ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম। তারপর হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন এবং অন্যান্য উপাদান ১ দশমিক ৬ শতাংশ রয়েছে। ভূ-পৃষ্ঠের উদ্ভিদরাজি তার মূলের সাহায্যে মাটির এসব উপাদান শোষণ করে। তারপর উদ্ভিদ থেকে যেসব খাদ্য উৎপন্ন হচ্ছে তা মানুষ খাদ্য হিসাবে আহার করে। পাকস্থলিতে এগুলো ডাইজেষ্ট হয়। গ্রহণকৃত খাদ্যের সার-নির্যাস থেকে জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পুরুষের শুক্রাশয়ে স্পার্ম্যাটাজোন (Spermatozoon) এবং নারীর ডিম্বাশয়ে (Ovary) ওভাম (Ovum) উৎপন্ন হয়। ওভাম-এর নিষেক থেকে সৃষ্টি হয় জাইগোট। এই জাইগোট নারীর জরায়ুতে স্থানান্তরিত হয়ে ভ্রূণ গঠন করে। জগতসমুহের রব্ব মহান আল্লাহ এই ভ্রূণ থেকেই পর্যায়ক্রমে মানুষ সৃষ্টি করেন।
জাইগোট গঠনের মাত্র চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে সেটা নারীর বাচ্চা থলির দেয়ালে একটি ঘেরা প্রকোষ্ঠে স্থান লাভ করে। এরপর তা জ্যামিতিক হারে বিভাজন হতে থাকে এবং সময়ের ব্যবধানে তা জমাট রক্তপিন্ডে পরিণত হয় এবং বিজ্ঞানীগণ এটাকেই ব্লাস্টোসিষ্ট নামে অভিহিত করেছেন। এই ব্লাষ্টোসিষ্ট অনেকটা পানির জোঁকের মতো দেখায়। তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে জোঁক রক্তপান করলে যেমন আকৃতি ধারণ করে, এটিও তেমন আকার ধারণ করে। এই ব্লাষ্টেসিষ্ট মায়ের রক্ত দ্বারা ক্রমশঃ বৃদ্ধি লাভ করতে থাকে এবং মাতৃগর্ভের বাচ্চাথলির দেয়ালে ঝুলতে থাকে। ব্লাষ্টোসিষ্টের বাইরের যে স্তরটি তাকে বলা হয় ট্রফোব্লাষ্ট-এই ট্রফোব্লাষ্ট থেকে এক ধরনের এনজাইম নির্গত হতে থাকে। এনজাইমের প্রভাবে বাচ্চাথলির টিসুগুলো গলে যায় এবং গলিত টিসুর ভেতরে ব্লাষ্টেসিষ্ট ডুবে যায়। এ সময় ব্লাষ্টোসিষ্ট পরিণত মাংসপিন্ডে যাকে সুমিটেস বলা হয়। এ প্রক্রিয়া প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে। এই সুমিটেসের শিরদাঁড়ায় তেরটি উঁচু নিচু দাগের সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ এটাই পরবর্তীতে মেরুদন্ডে পরিণত হয়। ছয় সপ্তাহের শেষ সময়ে এটা একটি মানব কঙ্কালের আকার ধারণ করে। বার সপ্তাহের মধ্যে ভ্রূণের একটি ক্ষুদ্র অথচ পরিপূর্ণ কঙ্কাল গঠিত হয় এবং এ কঙ্কালে সর্বমোট তিন শত ষাটটি জোড়া থাকে। মানুষের কঙ্কাল সর্বমোট দুই শত ছয়টি হাড় দিয়ে গঠিত। আট সপ্তাহের শেষের দিকে তা একটি পরিপূর্ণ মানব শিশুর আকার ধারণ করে এবং ভ্রূণ তখন নড়াচড়া করতে সক্ষম হয়। এই প্রক্রিয়া যিনি অত্যন্ত সুচারুরূপে সম্পাদন করেন, তাঁরই নাম হলো রব্ব এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁরই।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বোত্তম রব্ব। ভ্রূণকে রেখেছিলেন এমন একস্থানে যেখানে কোন ধরনের রোগ শিশুকে আক্রান্ত করতে পারে না। এই স্থানটিকেই কোরআনে বলা হয়েছে, 'কারারিম মাকিন'-সুসংরক্ষিত স্থান। সেখান থেকে শিশুকে যখন পৃথিবীতে নিয়ে আসা হলো, তখন তার অবস্থা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-
وَاللَّهُ أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُطُونِ أُمَّهَتِكُمْ لَا تَعْلَمُونَ شَيْئًا وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ
মানুষকে আমি এমন এক অবস্থায় তার মায়ের গর্ভ থেকে এই পৃথিবীতে নিয়ে এসেছি, যে সময় তার কোন চেতনাই ছিল না। পেটের ক্ষুধায় প্রাণ ওষ্ঠাগত হলেও তার বলার ক্ষমতা ছিল না যে, তার ক্ষুধা পেয়েছে। সেই সাথে তাকে আমি তিনটি জিনিষ দিয়েছি। তাকে শ্রবণ শক্তি, দৃষ্টিশক্তি এবং চিন্তা করার মত মগজ দিয়েছি।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরায়ে আস্সাজদার মধ্যে বলেছেন, মানুষের সৃষ্টির সূচনা তিনি করেছেন কাদা-মাটি থেকে। তারপর তার বংশধারা এমন এক বস্তু থেকে চালু করেছেন যা নিকৃষ্ট পানির মতই। এরপর তিনি দেহের যেখানে যে অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গের প্রয়োজন তা সজ্জিত করে রুহ্ দান করেছেন। তারপর তিনি মানুষকে জ্ঞান, চোখ এবং হৃদয় দান করেছেন। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, তার শরীরের ত্বকের ভেতরে স্পর্শ অনুভূতি এবং নাক দিয়েছি ঘ্রাণ গ্রহণ করার জন্য। এভাবে তাকে আমি সুন্দর করে সাজিয়েছি। তার যা যেখানে প্রয়োজন আমি তাই দিয়েছি। তার মাতা-পিতা এবং অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের ভেতরে তার জন্য অসীম মায়া-মমতা সৃষ্টি করেছি। সে পৃথিবীতে চোখ খুলেই দেখতে পায়, এই পৃথিবীর সমস্ত কিছুই তাকে প্রতিপালন করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। সমস্ত কিছুই তার সেবায় নিয়োজিত করেছি। মানুষের জন্য যে যোগ্যতা প্রয়োজন আমি তাই দিয়েছি। মানুষের ভেতরে ভারসাম্য রক্ষার জন্য কোন যোগ্যতা কারো ভেতরে বেশী দিয়েছি। আবার তা কারো ভেতরে কম দিয়েছি। এমন না করলে কেউ কারো মুখাপেক্ষী হত না। একজন মানুষ আরেকজনের পরোয়া করতো না এবং মানুষের যোগ্যতার কোন মূল্যায়ন হত না।
যে জিনিষের প্রয়োজন যতবেশী মহান আল্লাহ তা অধিক পরিমাণে সৃষ্টি করেছেন। এই পৃথিবীর জন্য কর্মীর প্রয়োজন অধিক এবং মহান আল্লাহ তা অধিক পরিমাণে সৃষ্টি করেছেন। বড় বড় বিজ্ঞানী, সেনাপতি, তাত্ত্বিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষের প্রয়োজন কম, আল্লাহ তা কম পরিমাণেই সৃষ্টি করেছেন। এ জাতিয় মানুষের সংখ্যা আল্লাহ ঘরে ঘরে সৃষ্টি করেননি। কারণ, এসব মানুষের অবদান এই পৃথিবীতে শতাব্দীর পরে শতাব্দী পর্যন্ত চলতে থাকে। এ জন্য এসব দুর্লভ যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ পৃথিবীর জন্য যে কয়জন প্রয়োজন মহান আল্লাহ তাই সৃষ্টি করেছেন। তাদের একজনের যে অবদান, শতকোটি মানুষ ঐ একজন মানুষের চিন্তাধারা দ্বারাই পরিচালিত হতে থাকে। এভাবে নানা ধরনের বিদ্যায় পারদর্শী মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। মানুষের জন্য প্রকৌশলী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, স্থপতি, শাসক, শিল্পী, অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, সেনাপতি, শিক্ষাবিদ, সমরবিদ, নানা ধরনের বিশেষজ্ঞ, সাহিত্যিক তথা যে ধরনের গুণাবলীসম্পন্ন ও যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষের প্রয়োজন, আল্লাহ তা মানব জাতিকে দান করেছেন। যে আল্লাহ এসব করলেন, তিনিই হলেন রব্ব এবং এই রব্ব-এর সমস্ত প্রশংসা।
সন্তান মাতৃগর্ভ থেকে এ পৃথিবীতে আগমন করবে, সন্তানের যারা অভিভাবক তাদেরকে পূর্ব থেকেই সন্তানের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হয়নি। যিনি ঐ সন্তানকে প্রেরণ করছেন, তিনিই সন্তানের মায়ের বুকের ওপরে এমন এক খাদ্য প্রস্তুত করে রেখেছেন, যার বিকল্প গোটা পৃথিবীতে নেই। মায়ের বুকের দুধের মধ্যে পানির ভাগ বেশী এবং সামান্য মিষ্টি থাকে যেন শিশু আগ্রহ সহকারে পান করে। আল্লাহ তা'য়ালা এই দুধে পানির ভাগ বেশী না দিলে সদ্যজাত শিশু তা হজম করতে সক্ষম হতো না। সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকে পানি পান করালে তার নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে। এ জন্য মহান রব্ব আল্লাহ তা'য়ালা ঐ দুধের মধ্যেই পানি দিয়েছেন যেন শিশুকে পৃথকভাবে পানি পান করাতে না হয়।
মাতৃদুগ্ধ শুধুই দুধ নয়, এই দুধ শিশুর জন্য সর্বোত্তম ওষুধ। বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে মাতৃদুগ্ধ যেসব সন্তান নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পান করার সুযোগ পেয়েছে, তারা রোগে খুব কমই আক্রান্ত হয় এবং এরা মেধাবী হয়। শিশু ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে, মায়ের দুধও ক্রমশঃ ঘন হতে থাকে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পরে প্রথমে মায়ের বুকে যে দুধ থাকে, অজ্ঞতার কারণে তা অনেকে ফেলে দেয়। অথচ ঐ দুধই হলো সন্তানের সমস্ত রোগের প্রতিষেধক। শিশু বড় হচ্ছে মায়ের দুধও ঘন হচ্ছে, এর কারণ হলো-প্রথমে দুধ ঘন হলে শিশু তা চুষে বের করতে পারবে না এবং সে ঘন দুধ তার অপরিপক্ক পাকস্থলীতে হজম হবে না। পাকস্থলী ক্রমশঃ শক্তিশালী হতে থাকে, সেই সাথে মায়ের দুধও ঘন হতে থাকে। এভাবে শিশু যখন বাইরের খাদ্য আহার করতে সক্ষম হয়, তখন মায়ের দুধ ক্রমশঃ ঘন হতে হতে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। মায়ের স্তনে একটি ছিদ্র নেই, একটি ছিদ্র থাকলে তা দিয়ে বেগে দুধ নির্গত হয়ে সন্তানের কন্ঠনালীতে অসুবিধার সৃষ্টি করতো। এ জন্য মায়ের স্তনে আল্লাহ তা'য়ালা বত্রিশটি ছিদ্র দিয়েছেন যেন সমতা রক্ষা করে দুধ নির্গত হয় এবং শিশু তা পরম প্রশান্তিতে পান করতে সক্ষম হয়।
শিশু যখন বাইরের খাদ্য গ্রহণ করার উপযুক্ত হলো, তখন শক্ত খাদ্য ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করার জন্য মাড়িতে দাঁতের প্রয়োজন। এই দাঁতের জন্য আল্লাহর কাছে কারো আবেদন করতে হয়নি। তিনি এমন রব্ব যে, তা না চাইতেই তিনি দিয়েছেন। মানুষের মাথার মগজ-যাকে ব্রেন বলা হয়ে থাকে। এই মগজ এমনভাবে মাথার খুলির ভেতরে রাখা হয়েছে, যেন তা কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। মগজের চারদিকে বেশ কয়েকটি আবরণ বা পর্দা নির্মাণ করা হয়েছে, এগুলো কোন কঠিন পদার্থ দিয়ে বানানো হয়নি। এগুলো করা হয়েছে নরম এবং সিক্ত। ক্রীম যেভাবে পানির ভেতরে ভাসতে থাকে, মাথার মগজকে সেভাবে সিক্তাবস্থায় রাখা হয়েছে, যেন তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে না পারে। মানুষের মাথায় অসংখ্য সেল নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার হলো কম্পিউটার। এই কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা দেখলে হতবাক হতে হয়। তারপরেও কম্পিউটারের মেমোরির একটি নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু মানুষের এই মাথা অনেকগুণ বেশী বিস্ময়কর। মানুষের মাথায় আল্লাহ যে মেমোরি দিয়েছেন, গোটা পৃথিবীর যাবতীয় তথ্য এই মেমোরিতে রাখার পরও আরো বিশাল জায়গা অবশিষ্ট রয়ে যাবে।
মানুষের চোখে কর্ম ক্ষমতা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দিয়েছেন। মানুষ রাস্তায় চলতে গিয়ে যদি সাপ দেখে, তাহলে এই চোখ অত্যন্ত দ্রুত বিপদ সংকেত প্রেরণ করে ব্রেনকে। এই ব্রেন তাৎক্ষণিকভাবে সক্রিয় করেছে পা ও হাতকে। সংকেত দিয়েছে হাতে যদি কোন অস্ত্র থাকে তাহলে তা দিয়ে সাপকে আঘাত করতে হবে আর না থাকলে পায়ের শক্তিতে দৌড় দিতে হবে। বিষয়টি যতটা সহজ মনে করা হয় প্রকৃতপক্ষে তা নয়। বিষয়টি এত অল্প সময়ের ভেতরে বাস্তবায়িত হয় যে, এতে কতটুকু সময় ব্যয় হলো তা মানুষের পক্ষে হিসাব করে বের করা অসম্ভব। চোখ সাপ দেখলো এবং সে মাথায় সংবাদ প্রেরণ করলো, মাথা পা ও হাতকে সক্রিয় করলো। এই পুরো বিষয়টি সংঘটিত হতে, এক সেকেন্ডেরও সময়ের প্রয়োজন হয়নি, এক সেকেন্ডের কয়েক লক্ষ ভাগের একভাগ মাত্র সময় প্রয়োজন হয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি সম্ভব করা কেবল মাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষেই সম্ভব আর এ জন্যেই তাঁর যাবতীয় প্রশংসা।
আবার মানুষ তার চোখে যা দেখে তা নেগেটিভ ভঙ্গীতে দেখে থাকে। নেতিবাচক দৃশ্য ধরে চোখ তা ব্রেনে পৌছে দেয় এবং সেখান থেকে তা পজিটিভ হয়ে বের হয়ে আসে এবং মানুষ তখন স্পষ্ট দেখতে পায়। আল্লাহ হলেন রব্ব এবং এসব ব্যবস্থা তিনিই করেছেন। মানুষ তার শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে অসংখ্য শব্দ শুনে থাকে। কিন্তু অনেকগুলো শব্দ একই সাথে কানে প্রবেশ করে অস্বাভাবিক কোন শব্দের সৃষ্টি করে না, কোন একটি শব্দও জড়িয়ে যায় না। মানুষের জিহ্বার গঠন প্রণালী এমন যে, জিহ্বা অসংখ্য স্বাদ গ্রহণ করতে ও পার্থক্য নির্দেশ করতে সক্ষম। এ জন্য সেই রব্ব-এরই প্রশংসা করতে হবে, যিনি তাঁর বৈজ্ঞানিক জ্ঞান দিয়ে মানুষকে এত সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন।
0 Comments