(১) রমযান মাসের সূচনা জ্ঞাত হওয়া। এটা চাঁদ দেখা অথবা আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে শাবানের ত্রিশ দিন পূর্ণ হওয়ার মাধ্যমে জ্ঞাত হওয়া যায়। চাঁদ দেখার উদ্দেশ্য চাঁদ দেখা যাওয়ার কথা জানা, যা একজন আদেল ব্যক্তির কথায় হতে পারে। ঈদুল ফেতরের চাঁদ দুজন আদেল ব্যক্তির কথা ছাড়া প্রমাণিত হয় না। যেব্যক্তি একজন আদেল ব্যক্তির কাছে চাঁদ দেখার কথা শুনে এবং বিশ্বাস করে, তার উপর রোযা ওয়াজেব হবে, যদিও সরকারীভাবে রোযা রাখার আদেশ না হয়। যদি এক শহরে চাঁদ দেখা যায় ও অন্য শহরে দেখা না যায় এবং উভয় শহরের মধ্যবর্তী দূরত্ব বেশী হলে প্রত্যেক শহরের বিধান আলাদা হবে। (প্রকাশ থাকে যে, হানাফী মাযহাবে দেশের এক শহরে চাঁদ দেখা প্রমাণিত হলে সকল শহরের মানুষের উপর রোযা রাখা ওয়াজেব হবে, দূরত্ব বেশী হোক কিংবা কম।)
(২) প্রত্যেক রোযার জন্যে রাত থেকে নির্দিষ্ট করে ও বিশ্বাস সহকারে নিয়ত করা। সুতরাং সমগ্র রমযান মাসের নিয়ত এক দফায় করে নিলে যথেষ্ট হবে না। দিনের বেলায় নিয়ত করলে রমযানের রোযা হবে না; বরং নফল রোযা হবে। (হানাফী মাযহাব অনুযায়ী দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত নিয়ত করা চলে।) শুধু রোযার নিয়ত করলে জায়েয হবে না, বরং নির্দিষ্ট করে রমযানের ফরয রোযার নিয়ত করতে হবে। (হানাফী মাযহাব অনুযায়ী শুধু রোযা কিংবা নফল রোযার নিয়ত করলেও রমযানের ফরয রোযাই হবে।) আগামীকাল রমযান হলে রোযা রাখব- এরূপ সন্দেহজনক নিয়ত করা যথেষ্ট নয়। বরং পূর্ণ বিশ্বাস সহকারে নিয়ত করতে হবে। (হানাফী মাযহাবে এটা জরুরী নয়।)
(৩) রোযা স্মরণ থাকা অবস্থায় পেটে কোন কিছু যেতে না দেয়া। সুতরাং রোযা রেখে জেনে-শুনে কিছু খেলে অথবা পান করলে অথবা নাকের ছিদ্র পথে কোন বস্তু পেটে চলে গেলে অথবা পেটে ওষুধ প্রবেশ করালে রোযা ভেঙ্গে যাবে। যে বস্তু ইচ্ছা ব্যতিরেকে পেটে চলে যায়; যেমন পথের ধুলাবালি অথবা মাছি অথবা কুলি করার সময় পানি, তাতে রোযা ভঙ্গ হয় না। কিন্তু কুলিতে গরগরা করার সময় পেটে পানি চলে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। কেননা, এটা রোযাদারের ত্রুটি। রোযার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করলে রোযা ভঙ্গ হবে না।
(৪) স্ত্রীসহবাস থেকে বিরত থাকা। যদি রাত্রে সহবাস করে অথবা স্বপ্নদোষ হয় এবং নাপাক অবস্থায় সকাল হয়ে যায়, তবে তাতে রোযা নষ্ট হয় না।
(৫) বীর্যপাত করা থেকে বিরত থাকা। অর্থাৎ, ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাসের মাধ্যমে অথবা সহবাস ছাড়াই বীর্যস্খলন ঘটাবে না। এরূপ করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। স্ত্রীকে চুম্বন করলে অথবা কাছে শোয়ালে রোযা নষ্ট হয় না, যে পর্যন্ত বীর্যপাত না হয়, কিন্তু এসব কাজ মাকরূহ।
(৬) বমি করা থেকে বিরত থাকা। ইচ্ছা করে বমি করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। আপনা আপনি হলে রোযা নষ্ট হবে না। গলা থেকে অথবা বুক থেকে শ্লেষ্মা নির্গত হলে রোযা নষ্ট হবে না। যদি শ্লেষ্মা মুখে পৌছার পর তা গিলে ফেলে তবে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে।
0 Comments